কিডনির বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে কিছু যেমন প্রকট লক্ষণ নিয়ে হাজির হয়, তেমনি কিছু ক্ষতি করে যায় নীরবে। এর এক উদাহরণ হাইড্রোনেফ্রোসিস। হাইড্রোনেফ্রোসিস হলো, প্রস্রাব জমার কারণে কিডনি ফুলে যাওয়া বা বড় হয়ে যাওয়া। সাধারণত কিডনি থেকে প্রস্রাব তৈরি হয়ে মূত্রনালির মাধ্যমে মূত্রথলিতে যায়। সেখান থেকে মূত্রাশয়ের মাধ্যমে নির্গত হয়। যখন কোনো বাধা বা ব্লকের কারণে প্রস্রাব কিডনি থেকে মূত্রাশয় দিয়ে বের হয়ে যেতে পারে না, তখন হাইড্রোনেফ্রোসিস হয়।
এটি এক দিকের বা উভয় কিডনিতে ঘটতে পারে।
- লক্ষণ
হাইড্রোনেফ্রোসিস উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারে বা না-ও করতে পারে। প্রধান উপসর্গগুলোর মধ্যে:
পেটের পাশে এবং পিঠে, পেটে বা কুঁচকিতে ব্যথা।
প্রস্রাবের সময় ব্যথা।
প্রস্রাবের সঙ্গে অন্যান্য সমস্যা,
যেমন বেশি বা কম পরিমাণ প্রস্রাব,
বারবার প্রস্রাবের বেগ আসা,
প্রস্রাবের থলি পুরো খালি না হওয়া ইত্যাদি।
বমি বমি ভাব।
জ্বর।
- কীভাবে হয়
হাইড্রোনেফ্রোসিস সাধারণত অন্য অন্তর্নিহিত অসুস্থতা বা ঝুঁকির কারণে সৃষ্টি হয়। যেমন:
কিডনিতে পাথর। এর জন্য প্রস্রাবের পথ আটকে থাকে।
জন্মগতভাবে ইউরিনারি ট্রাক্টের কোনো অংশে বাধা বা ব্লক থাকা।
রক্ত জমাট বেঁধে প্রস্রাবের পথ আটকে যাওয়া।
আঘাত বা পূর্ববর্তী অপারেশন থেকে ক্ষত থাকা।
টিউমার বা ক্যানসার, যেমন মূত্রাশয়, জরায়ুমুখ, কোলন বা প্রোস্টেট ক্যানসার ইত্যাদি।
প্রোস্টেট বড় হয়ে যাওয়া।
গর্ভাবস্থা।
মূত্রনালির প্রদাহ সৃষ্টিকারী অন্যান্য রোগ।
- পরীক্ষা-নিরীক্ষা
কিডনি ও ইউরিনারি ট্রাস্টের আলট্রাসনোগ্রাফি।
কিডনি ও তলপেট অংশের এক্স-রে।
সিটি স্ক্যান ও ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমার্জিং (এমআরআই)।
সিস্টোস্কোপিও।
রক্ত, প্রস্রাব ও কিডনির কার্যকারিতা পরীক্ষা।
লেখক: আবাসিক চিকিৎসক নেফ্রোলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল