সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুর্নীতির সংবাদ সংগ্রহ কালে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার নির্দেশনায় সাংবাদিকদের উপর হামলা ও বুম ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে।

সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুর্নীতির সংবাদ সংগ্রহ কালে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার নির্দেশনায় সাংবাদিকদের উপর হামলা ও বুম ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। এখানেই খ্যান্তনয় উল্টো সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোমেনা পারভীন পারুল।এমন ঘটনায় সিরাজগঞ্জে কর্মরত সাংবাদিকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নাসিমের মেয়ে পরিচয় দানকারী দুর্নীতিবাজ এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোমেনা পারভীন পারুলের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তাদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের জোরদাবী জানিয়েছেন গণমাধ্যমকর্মীরা।জানা যায়, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে এডহক থেকে মেডিকেল অফিসার পদে নিয়োগ পেয়ে মোমেনা পারভীন পারুল ২০২০ সালে কাজিপুর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার দায়িত্ব পান।এই পদে থেকে বিগত ৫ বছর ধরে তিনি নানা ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি করে আসছেন।এছাড়াও দায়িত্ব পালনকালে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমকে পিতা পরিচয় দিয়ে ব্যাপক দাপটের সাথে কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে এই কর্মকর্তা। 
কাজিপুর উপজেলার ৫০টি কমিউনিটি ক্লিনিকের ৬৪ জন এমএইচভি দুই হাজার টাকা করে কর্তন করে টাকা আত্মসাত করেছেন বলে জানাগেছে। এ-সংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।এছাড়াও সম্প্রতি ঠিকাদার ছাড়াই রোগীদের খাদ্য সরবরাহ করনসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।এসব নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করতে সোমবার বিকেলে এশিয়ান টিভির কাজিপুর উপজেলা প্রতিনিধি রাব্বি হাসান হৃদয় ও দৈনিক সরেজমিন বার্তা পত্রিকার রিপোর্টার মুকুল হোসেন হাসপাতালে যান।এরপর সাংবাদিকগন হাসপাতালের রোগী ও স্বজনদের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন এমন খবর পেয়ে ডা,মোমেনা পারভীন পারুল নিজের কক্ষ থেকে বের হয়ে এসে প্রথমেই সাংবাদিকদের মাইক্রোফোন (বুম) কেড়ে নেন।এরপর ক্যামেরা স্ট্যান্ড কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলেন এবং ভিডিও তোলার কাজে ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও কেড়ে নেন।ডা,মোমেনা পারভীন পারুল কর্তৃক সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্যমূলক এরুপ ঘটানার সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে দুপক্ষের মধ্যে সমঝোতা করে দেন।তবে সাংবাদিকদের ধারনকৃত ভিডিওতে দেখা যায়, ডা,পারুল বেগম পাগোল কুকুরের ন্যায়  ধেয়ে এসে সাংবাদিকদের মাইক্রোফোন (বুম) কড়ে নিচ্ছে এবং অন্যজন ভিডিও করার সময় ডা,পারুল বেগমের নির্দেশনায় সাংবাদিকদের
 মারতে তেড়ে আসতেও দেখা গেছে।এরপরই তিনি মঙ্গলবার সকালে কাজিপুর থানায় বাদী হয়ে শ্লীলতাহানি, চাঁদাবাজি ও মারপিটের অভিযোগে তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। এ ঘটনায় সংবাদকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।এশিয়ান টেলিভিশনের কাজিপুর প্রতিনিধি রাব্বি হাসান হৃদয় বলেন, কাজিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে ভিডিও প্রতিবেদন তৈরি করতে সেবা গ্রহীতাদের ভিডিও সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলাম। এ সময় ডা. মোমেনা পারভীন পারুল পেছন থেকে অতর্কিতভাবে ধাক্কা দেন। তিনি বুম, স্ট্যান্ড কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলেন এবং ভিডিওর কাজে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন কেড়ে নেন। ক্যামেরা স্ট্যান্ড দিয়ে তিনি সাংবাদিক মুকুল হোসেনকে বেধড়ক মারধর করেন। উল্টো তিনিও মামলা করেছেন। এ নিয়ে সংবাদকর্মীরা হতাশ ও হতভম্ব। এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে ডা. মোমেনা পারভীন পারুলকে বারবার ফোন দিলেও তিনি ফোন  রিসিভ করেননি।কাজিপুর থানার ওসি নুরে আলম বলেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও শ্লীলতাহানিসহ মারপিটের অভিযোগ জমা দেয়া হয়েছে। তদন্তপুর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।