বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ফুটবল খেলোয়াড় ফুটবলের রাজা কালো মানিক পেলে আর নেই। গত বৃহস্পতিবার ব্রাজিলের সাও পাওলো শহরের অ্যালবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি।

 মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তার এজেন্ট জো ফ্রাগা মৃত্যুর বিষয়টি ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেনবেশ কয়েকদিন ধরে জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন পেলে। কোলন ক্যান্সারের চিকিৎসা চলছিল তার। এরইমধ্যে চলতি মাসে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের কারণে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সাও পাওলোর অ্যালবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তার। কোলন ক্যানসারের জন্য নিয়মিত কোমো থেরাপি দেওয়া হচ্ছিল পেলেকে।খবর বাপসনিউজ।
 
পেলের পূর্ণ নাম এডসন আরন্তেস ডো নাসিমেন্টো। মাত্র ১৫ বছর বয়সে ব্রাজিলের ক্লাব সান্তোসে পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু করেন পেলে। ১৬ বছর বয়সে ব্রাজিলের হয়ে খেলেন তিনি। পরে ১৯৬২ এবং ১৯৭০ বিশ্বকাপও জিতেন পেলে। তিনটি বিশ্বকাপ জয়ী একমাত্র খেলোয়াড় তিনি।১৯৭০ সালে বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে ফিফা গোল্ডেন বল পুরস্কারও জেতেন তিনি। তবে বেশ কয়েকবছর ধরেই শরীর ভাল যাচ্ছে না পেলের। ২০১৫ সালে স্নায়ুর সমস্যায় মেরুদণ্ডে অস্ত্রোপচারও করা হয় তার। কিডনি ও প্রস্টেটের সমস্যা নিয়ে একাধিকবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ফুটবলের কিংবদন্তি।
 
২০১৭ সালের ডিসেম্বরে মস্কোয় রাশিয়া বিশ্বকাপের এক অনুষ্ঠানে হুইলচেয়ারে বসা অবস্থাতেই দেখা গিয়েছিল তাকে।২০ বছরের ক্যারিয়ারে পেলে কখনও ব্রাজিলের বাইরে কোনো ক্লাবে খেলননি। ব্রাজিল সরকার পেলেকে জাতীয় সম্পদ ঘোষণা করে বিদেশি ক্লাবে যাওয়ার নিষিদ্ধ করেছিল তার। ব্রাজিলের হয়ে ৯২টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে ৭৭ গোল পেলের। সান্তোসের হয়ে নয় শতাধিক ম্যাচে এক হাজারের বেশি গোল তার। বিশ্বজুড়ে পেলের জনপ্রিয়তা আকাশ ছোয়া। পেলের খ্যাতি এমন ছিল যে, তার কারণে ১৯৬৭ সালে নাইজেরিয়ার একটি গৃহযুদ্ধে অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হয়েছিল দুই পক্ষ।
 
১৯৯৭ সালে ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ তাকে নাইট উপাধিতে ভূষিত করেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কিডনি সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ব্রাজিলের সাও পাওলোর আলবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতাল ভর্তি হন পেলে। সেখানে তার একটি টিউমার অপসারণের জন্য অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। রুটিন পরীক্ষায় তার টিউমার ধরা পরে। এরপর চলতি বছর ২০২২ সালের নভেম্বরের শেষের দিকে তাকে আবারও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।