তরুণ-তরুণীদের অবাধ মেলামেশা জন্য ডেটিং স্পটে পরিণত হওয়া সাতক্ষীরার মোজাফফর গার্ডেন অ্যান্ড রিসোর্টে (মন্টুমিয়ার বাগানবাড়ী) ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান পরিচালনা করেছে।

তরুণ-তরুণীদের অবাধ মেলামেশা জন্য ডেটিং স্পটে পরিণত হওয়া সাতক্ষীরার মোজাফফর গার্ডেন অ্যান্ড রিসোর্টে (মন্টুমিয়ার বাগানবাড়ী) ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান পরিচালনা করেছে।বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১২ টায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রনয় বিশ্বাস এ অভিযানের নেতৃত্ব দেন। এর আগে গত ২৯ অক্টবর মোজাফফর গার্ডেন অ্যান্ড রিসোর্টের বিতর্কিত কর্মকান্ডের কিছু ভিডিও বেশ চাঞ্চল্য ছড়ায়।এর আগে সরেজমিনে দেখা গেছে- সাতক্ষীরার মোজাফফর গার্ডেন অ্যান্ড রিসোর্টটি (মন্টুমিয়ার বাগানবাড়ী) যেন পার্ক নয়, অনৈতিক কার্যকলাপের নিরাপদ আশ্রয়স্থল। স্কুল কলেজ চলাকালিন প্রেমিক-প্রেমিকার পদচারণায় এটি হয়ে উঠেছে ‘নিরাপদ ডেটিং স্পটে। পার্কের প্রতিটি কোণায় কোণায় যেনো প্রেমিক যুগলের শারীরিক মিলনের আখড়া। কেউ স্কুল কলেজ ফাঁকি দিয়ে আবার কেউ পরকীয়া প্রেমিকের হাত ধরেই চলে যাচ্ছেন সেখানে।  যেখানে অনেক প্রেমিক যুগল সুযোগ বুঝে লিপ্ত হচ্ছেন শারীরিক মিলনে। মাত্র পঞ্চাশ টাকার টিকিটে সেখানে চলে এসব কর্মকান্ড।এছাড়া, অতি সম্প্রতি মোজাফফার গার্ডেন এন্ড রিসোর্টে প্রকাশ্যে প্রেমিক যুগলের অনৈতিক কর্মকান্ডের বেশ কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে জেলাজুড়ে। সেসব ভিডিওতে দেখা যায়, রিসোর্টের পুকুর পাড় ও ঝোপঝাড়ের আড়ালে চলছে অনৈতিক কার্যকলাপ। তাছাড়া সাংবাদিক পরিচয় গোপন করে রিসোর্টটিতে কল দিয়ে পার্সোনাল রুম চাইলেও দিয়ে দিচ্ছেন।এছাড়া সাংবাদিক পরিচয় গোপন করে রিসোর্টের রিসিপশনের মোবাইল নাম্বারে কল দিয়ে বান্ধবীসহ থাকার জন্য রুম বুকিং করতে চাইলে রিসিপশনের দায়িত্ব থাকা তৈবুর রহমান বলেন দুজনের এনআইডি কার্ড নিয়ে আসলেই থাকার জন্য রুম পাবেন। আমাদের এখানে কোন সমস্যা হবে না। তবে সাংবাদিক পরিচয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে জানতে চাইলে মোজাফফর গার্ডেন অ্যান্ড রিসোর্টের রিসিপশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত একই কর্মকর্তা তৈবুর রহমান অনৈতিক কর্মকাণ্ড অস্বীকার করে বলেন, এমন কোনো কর্মকাণ্ড হওয়ার উচিত না। এগুলো এখানে হয় না। আমরা যখন রুমগুলা বুকিং করি অফিশিয়ালি প্রোগ্রাম হলে অফিস থেকে মেইল আসে, তখন বুকিং করা হয়। আমরা যথেষ্ট যাচাই-বাছাই করে রুম বুকিং করে থাকি।গত ৩১ অক্টোবর সাতক্ষীরার অতিরিক্ত  জেলা প্রশাসক বিষ্ণুপদ পাল স্বাক্ষরিত এক পত্রে রিসোর্টের বিষয়ে গুরুত্বারোপসহ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য পার্ক কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। এছাড়া পার্কের পবিবেশ ভালো করতে সাতক্ষীরা থানার অফিসার ইনচার্জ শামিনুল হক কয়েক দফায় মোজাফফর গার্ডেন অ্যান্ড রিসোর্ট পরিদর্শন করেন। এতেও অবৈধ কার্যকলাপের বিষয়ে কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় বৃহস্পতিবার ( ০৭ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রনয় বিশ্বাসের নেতৃত্ব মোজাফফর গার্ডেন অ্যান্ড রিসোর্টে অভিযান চালায়। এসময় তারা বিভন্ন স্পর্ট ঘুরে দেখেন এবং কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন নির্দেশনা দেন। তবে আপত্তিকর অবস্থায় কাউকে পাওয়া না যাওয়ায় কাউকে শাস্তির আওতায় আনা হয়নি। এছাড়া ভবিষ্যতে মোজাফফর গার্ডেন এন্ড রিসোর্টে কোন ধরনের অশ্লীল কার্যকলাপ ঘটবে না মর্মে রিসোর্টের পক্ষ থেকে বলা হয়। এ ব্যাপারে মালিকপক্ষ ও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীগণ সচেষ্ট থাকবে এবং ভবিষ্যতে কোন ধরনের আপত্তিকর ঘটনা ঘটলে তারা আইনানুগভাবে দায়ী থাকবে। ভ্রাম্যমান আদালত মোজাফফর গার্ডেন এন্ড রিসোর্ট এর ম্যানেজার আতিকুল আলম আতিকের কাছ থেকে এমন অঙ্গীকার নিয়ে তাদেরকে সতর্ক করেন।
এ বিষয়ে মোজাফফর গার্ডেন এন্ড রিসোর্ট এর পরিচালক ফয়সাল মোজাফফর বলেন, আমি বাইরে আছি। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসেছিল বলে শুনেছি। পার্কের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য আমরাও চেষ্টা করছি। প্রশাসনের লোকও চেষ্টা করছে।সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামিনুল হক বলেন, সংবাদ প্রকাশের পর পুলিশ সুপারের নির্দেশে পুলিশের পক্ষ থেকে আমি কয়েকবার মোজাফফর গার্ডেনে গিয়েছি। পার্কের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোসহ তাদেরকে বেশ কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশের পক্ষ থেকে তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রণয় বিশ্বাস বলেন, সম্প্রতি মোজাফফর গার্ডেন এন্ড রিসোর্টের কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।  যেখানে দেখা গেছে পার্কের মধ্যে প্রকাশ্য অনৈতিক কার্যকলাপ হচ্ছে। এসব বিষয়ে আমরা ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেছি। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনাকালে কাউকে আপত্তিকর অবস্থায় পাওয়া যায়নি। তবে ভবিষ্যতে যেন আপত্তিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মুচলেকা নেয়া হয়েছে।