পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো: জাকির হোসেন মিয়ার বিরুদ্ধে সাংবাদিক’কে পিস্তল তাক করে হত্যা করার হুমকি দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে, আর এঘটনায় জড়িত পিরোজপুর-১ আসনের সাবেক এমপি শ.ম রেজাউল করিমের ভাই সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম নূরে আলম সিদ্দিকী শাহীন।
গত ৫ আগষ্ট সরকার পতন হওয়ার পরে এ নিয়ে মুখ খুলছেন পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার দৈনিক কালবেলার সাংবাদিক উথান মন্ডল ও দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার সাংবাদিক মো: মশিউর রহমান।জানা গেছে, গত ২৬ জুন ২০২২ ইং তারিখ এই দুই সাংবাদিক উপজেলা ওডিটরিয়ম ভবন নির্মানের দূর্নীতি ও অনিয়মের বিষয় জানতে এলজিইডি অফিসে গেলে অফিসের কেসিগেট তালা মেরে প্রকৌশলীর রুমের দরজা আটকিয়ে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও এলজিইডি প্রকৌশলী পিস্তল তাক করে জীবননাশের হুমকি দেয় এবং হেনস্তা করে।
এ নিয়ে নাজিরপুর থানায় অভিযোগ করতে গেলে তৎকালীন অফিসার ইনচার্জ ওসি মো: হুমায়ুন কবির মামলা না নিয়ে উল্টো ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে এবং বলেন আমি আওয়ামীলিগের বাহিরের লোক না।জানা যায়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় অধীন নাজিরপুর উপজেলায় অডিটরিয়াম ভবন নির্মান কাজটি ১০ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ পেয়ে কাজটি ইজিপি এর মাধ্যমে টেন্ডার না করে অফলাইনে নিয়ম বর্হিভ‚তভাবে “সিমরান মায়ান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল” প্রোপাইটর এস এম নূরে আলম সিদ্দিকী শাহিন এর নামে ঠিকাদার নির্ধারন করেন।
এখানে উল্লেখ্য যে সিমরান মায়ানের লাইসেন্সটি ২০১৯ সালে নিবন্ধিত হওয়ায় তাহার কাজের কোন অভিজ্ঞতা ছিল না বরং ভুয়া কাগজ তৈরী করে ১০% কমিশন হিসেবে শাহিনের কাছ থেকে কোটি টাকার ও বেশি নিয়ে দূর্নীতির মাধ্যমে লাভবান হয়েছেন। উক্ত কাজটি শেষ না হওয়ায় এখনো প্রায় ৫ কোটি টাকার কাজ বাকী রয়েছে কিন্তু উক্ত কাজের সমস্ত বিল পরিশোধ করেছেন প্রকৌশলী জাকির মিয়া। উল্লেখ্য যে উক্ত কাজ বাস্তবায়নে কোন “কর্মক্ষমতা নিরাপত্তা জামানত” জমা না করে কাজের কার্যাদেশ সহ আংশিক কাজ বাস্তবায়ন করেছে।
কাজের শুরুতে ভবন নির্মানে মাটির গভিরে পাইল না দিয়ে অনিয়ম করে কাজ করেছে এবং শিডিউল অনুযায়ী কাজ না হওয়ায় তথ্য সংগ্রহে ওই দুই সাংবাকি গেলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যা করার পরিকল্পনা করে এবং তাদের উপর চালান অত্যাচার ও নির্যাতন, তার পরেও খান্ত হয়ননি শাহীন ও প্রকৌশলী। এমনকি মিথ্যা মামলা দিয়েও করেছেন হয়রানী।২০ সেপ্টেস্বর পূনরায় অডিটরিয়াম ভবন দেখতে গেলে দেখা যায় ভবনের ৭০ শতাংশ কাজ হওয়ার আগেই ভবনের বিভিন্ন স্থান থেকে বড় আকারে ফাটল ধরেছে যা অত্যান্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
(ক) তথ্য অধিকার আইনের ধারা-৩.১ ও ধারা ৯ উপধারা (১) ও (২) তারিখ ৬ জুন ২০০৯ মোতাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে তথ্য চেয়ে ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখ আবেদন করলেও এখও মেলেনি কোন তথ্য। প্রকৌশলী অফিসে তথ্য চাইতে গেলে বার বার ইউএনও এর দোহাই দিয়ে এড়িয়ে যান এবং বিষয়টি ইউএও এর সাথে আলাপ আলোচনা না করে দেওয়া যাবে না। এবিষয়ে পূনরায় খোঁজ খবর নিয়ে বিশ্বস্থসূত্রে জানাযায়, বাজেটের ৯০ শতাংশ টাকা তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করেছে এবং বাকী কাজ পড়ে আছে, আদৌ কবে নাগাদ শেষ হবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। ৫ ই আগষ্টের পরেই লাপাত্তা হয়েছে ঠিকাদার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম নূরে আলাম সিদ্দিকী শাহীন।এছাড়া বিশ^স্থসূত্রে আরো জানা যায়, উপজেলা প্রকৌশলী ঠিকমত অফিসে না এসে বদলীর জন্য হন্য হয়ে ছুটে বেড়াচ্ছেন দপ্তরে দপ্তরে।
সাংবাদিক উথান মন্ডল এবং মশিউর রহমান জানান, ওই দিনে আমরা কৌশলে বেঁচে ফিরে এসেছি, আমাদের সহকর্মী ইনকিলাবের সাংবাদিক এস এম জাহিদ হক’কে মোবাইলের মাধ্যমে একটি ক্ষুদে বার্তা দিলে তিনি ইত্তেফাকের সিনিয়র সাংবাদিক অনুপ কুমার সিকদার সহ আরো কয়েকজন সহকর্মীকে নিয়ে এসে আমাদের ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করেন, পরবর্তীতে নাজিরপুর থানায় মামলা করার জন্য গেলে তৎকালিন ওসি হুমায়ুন করিব আমাদের মামলা না নিয়ে বরং উল্টো আমাদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করেছে। এবিষয়ে প্রকৌশলী মো: জাকির হোসেন মিয়ার নিকট স্বাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য কয়েকবার অফিসে গেলে তাকে পাওয়া যায় নাই, এবং তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে বার বার ফোন দিলেও তিনি তুলছেন না তার ব্যক্তিগত ফোন।এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অরূপ রতন সিংহ তথ্য চেয়ে আবেদন করার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, স্ব-স্ব দপ্তরে তথ্য বিভাগ রয়েছে,মূলত তারাই তথ্য সরবরাহ করবে।