সীতাকুণ্ডের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী দুঃখ প্রকাশ না করায় মান্নার ক্ষোভ চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ডের স্থান পরিদর্শন ও আহতদের খোঁজ-খবর নিতে গিয়ে সাতদলীয় জোট নেতাদের ওপর ছাত্রলীগ, যুবলীগের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে গণতন্ত্র মঞ্চ।

সীতাকুণ্ডের এত বড় মর্মান্তিক ঘটনার পরেও শেখ হাসিনাকে কেউ দুঃখ প্রকাশ করতে দেখেছেন? এমন প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। আজ বুধবার রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ডের স্থান পরিদর্শন ও আহতদের খোঁজ-খবর নিতে গিয়ে সাতদলীয় জোট নেতাদের ওপর ছাত্রলীগ, যুবলীগের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে গণতন্ত্র মঞ্চ। মান্না বলেন, ‘২০১৮ সালে নির্বাচনের নামে রাত্রিবেলা ভোট ডাকাতি করার পরে আমরা যখন রাস্তায় প্রতিবাদ করেছি, তখন তিনি মিডিয়ার সামনে মায়াকান্না করে বলেছিলেন এত সুন্দর একটা নির্বাচন করলাম আর ওরা মানছে না! তিনি একটা মিথ্যা ঘটনার ওপরে কাঁদতে পারেন, পিতার মৃত্যুর কারণে ৪৫ বছর ধরে কাঁদতে পারেন, এতগুলো নিরীহ মানুষ প্রশাসনের দুর্বলতার কারণে পুরে মারা গেল, সেটার জন্য আপনারা শেখ হাসিনাকে কাঁদতে দেখেননি। মানুষ পুড়ে মারা যাক, শেখ হাসিনার কিছু যায়-আসে না বলেও মন্তব্য করেন মান্না। তিনি বলেন, ‘মানুষ আগুনে পুড়ে মারা গেলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কিছু যায়-আসে না। মানুষ আগুনে পুড়ে মারা যাক, নদীতে ডুবে মারা যাক, না খেয়ে মারা যাক, র‍্যাব-পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়ে ক্রসফায়ার করে মেরে ফেলুক, তাতে শেখ হাসিনার কিছু যায়-আসে না।’ 

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, ‘মানুষ বলে, আইয়ুব যাবে যে পথে হাসিনা যাবে সেই পথে। আমি বলি, আইয়ুব যেই পথে গেছে, সেই পথে তো হাসিনা যাচ্ছেন না। আইয়ুব কোন পথে গেছেন? উনসত্তরের বিরাট গণ-অভ্যুত্থানের পরে সামরিক শাসক ইযাহইয়া খানের সামরিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিলেন। আপনারা কি মনে করছেন শেখ হাসিনা সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতা দিয়ে চলে যাবে? জান যাবে, তবু ক্ষমতা ছাড়বে না।’ 

চট্টগ্রামে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি ও গণ অধিকার পরিষদের নেতা রাশেদ খানসহ অন্য নেতা-কর্মীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার জোরালো প্রতিবাদ করেন গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নূরুল হক নুর। এখনো সাতদলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি, তাতেই সরকারের ঘাম ঝরছে। নবীন-প্রবীণদের সমন্বয়ে গঠিত এই প্ল্যাটফর্ম সরকারের পতন ঘটাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আজকে যদি এই ছাত্রলীগ, যুবলীগের গুন্ডাপান্ডা দিয়ে সন্ত্রাস-নৈরাজ্য করে শেখ হাসিনা যদি ভেবে থাকেন তাঁরা ক্ষমতায় থাকবেন, মসনদ টিকিয়ে রাখবেন, তাহলে তিনি ভুল করছেন। আপনি বোকার স্বর্গে বাস করছেন।


আমাদের দুর্ভাগ্য, শেখ হাসিনার মতো একজন মানুষ আমাদের রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ আসনে বসে আছেন। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আসনে বসে প্রতিনিয়ত মিথ্যা বলছেন, মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছেন, প্রহসন করছেন। আমরা যখন তাঁকে নিয়ে বক্তব্য দিচ্ছি, সমালোচনা করছি, তখন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁকে দেবতা বানাতে চায়, নবী-রাসুল বানাতে চায়। তাকে নিয়ে কোনো ধরনের সমালোচনা করতে দিতে চায় না। সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন গণ অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাসেদ খান, ফারুক হাসান, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুসহ আরও অনেকে।