শনিবার (১৯ জুলাই) বিকাল ৫টা ২৩ মিনিটে হাজারো নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে বক্তব্য চলাকালে তিনি বুকে হাত রেখে হঠাৎ মঞ্চে বসে পড়েন। মুহূর্তেই থমকে যায় সমাবেশের আবহ, চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে উদ্বেগ।
জানা গেছে, বক্তব্যের এক পর্যায়ে হঠাৎ শারীরিক অসুস্থতা অনুভব করেন ডা. শফিক। মঞ্চে থাকা নেতাকর্মীরা তৎক্ষণাৎ তাকে ধরে ফেলেন এবং বসার ব্যবস্থা করে দেন। একজন তার মাথা থেকে টুপি খুলে বাতাস করতে শুরু করেন, অন্যরা পাশে দাঁড়িয়ে সাপোর্ট দিয়ে রাখেন।
অসুস্থতার আগে ডা. শফিক বলেন: “২৪-এ আন্দোলনটা না হলে আজকে যারা বিভিন্ন দাবি-দাওয়া তুলছেন তারা কোথায় থাকতেন? অতএব আসুন, তাদের ত্যাগের বিনিময়ে আল্লাহ যে নেয়ামত দিয়েছেন তা অবজ্ঞা না করি।... যদি এগুলো আমরা পরিহার করতে না পারি, তাহলে বুঝতে হবে ফ্যাসিবাদের রূপ আমাদের মাঝেই বাসা বেঁধেছে।”
তার এমন বক্তব্যের ঠিক পরেই ঘটে এই অপ্রত্যাশিত দৃশ্য। উপস্থিত নেতাকর্মীদের অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। কেউ কেউ পানি নিয়ে আসেন, কেউ আবার দ্রুত চিকিৎসা সহায়তার চেষ্টা করেন। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে যখন কয়েক মিনিটের মাথায় ডা. শফিকুর রহমান আবার নিজে উঠে বসেন এবং বসে থেকেই বক্তব্য চালিয়ে যান।
জামায়াতের সর্বোচ্চ নেতার হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়া শুধু রাজনৈতিক নয়, আবেগঘন মানবিক মুহূর্তও তৈরি করে। মঞ্চে তার প্রতি নেতাকর্মীদের তাৎক্ষণিক সহানুভূতিশীল আচরণ এবং পরবর্তী সময়ে বক্তব্য চালিয়ে যাওয়ার দৃঢ়তা—দুইয়ে মিলে সৃষ্টি করে এক ভিন্নমাত্রার আবহ।
অনুষ্ঠানস্থলে থাকা এক ছাত্রশিবির কর্মী বলেন, *“আমির সাহেবের শরীর হঠাৎ দুর্বল হয়ে পড়লেও উনি আবার উঠে দাঁড়িয়েছেন—এই দৃশ্য আমাদের প্রেরণা দিয়েছে। এটা কেবল বক্তৃতা নয়, এটা নেতৃত্বের প্রতীক।”*
এই জাতীয় সমাবেশ মূলত ৭ দফা দাবি নিয়ে আয়োজিত। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে: অবাধ নির্বাচন, সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি চালু, ‘জুলাই সনদ’-এর বাস্তবায়ন, এবং প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা।
সমাবেশে অংশ নেয় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজার হাজার নেতাকর্মী। অনুষ্ঠান শুরু হয় সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে সাংস্কৃতিক আয়োজনের মাধ্যমে। দুপুরে কোরআন তেলাওয়াতের পর মূল পর্ব শুরু হয়। বিকেল থেকে শুরু হয় শীর্ষ নেতাদের বক্তব্য। ডা. শফিকুর রহমানের বক্তৃতা ছিল সমাবেশের শেষ দিকের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
ঘটনার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ডা. শফিকুর রহমানের ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই তার দ্রুত সুস্থতা কামনা করছেন। জামায়াত সূত্রে জানা গেছে, তার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল রয়েছে এবং তিনি বর্তমানে বিশ্রামে আছেন।