চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণে ধনাগোদা নদী ও এই নদীর সাথে সংযোগ খালগুলোতে মৎস্য বিভাগের উদাসীনতায় অবৈধ ভেসাল ও কারেন্ট জালের ছড়াছড়ি। এসব জালে অবৈধভাবে মাছ শিকার করে অসাধু জেলেরা নদী ও খালগুলোতে মৎস্য উৎপাদন হুমকিতে ফেলছে বলে মনে করছেন সুধীমহল।

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণে ধনাগোদা নদী ও এই নদীর সাথে সংযোগ খালগুলোতে মৎস্য বিভাগের উদাসীনতায় অবৈধ ভেসাল ও কারেন্ট জালের ছড়াছড়ি। এসব জালে অবৈধভাবে মাছ শিকার করে অসাধু জেলেরা নদী ও খালগুলোতে মৎস্য উৎপাদন হুমকিতে ফেলছে বলে মনে করছেন সুধীমহল।

৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সরজমিনে মতলবের চরমুকুন্দি, মুন্সিরহাট এয়ারপোর্ট, মধ্য ও উত্তর দিঘলদী, উপাদী উত্তর ও দক্ষিণ, শান্তিনগর, নওগা, নারায়নপুরসহ বেশ কিছু স্থান ঘুরে অর্ধশতাধিক অবৈধ ভেসাল জাল ফেলে প্রতিনিয়ত দেশীয় মাছ শিকার করতে জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা যায়।

এই জাল বাঁশের সাথে যুক্ত করে পানিতে ফেলে জাটকা ইলিশসহ ছোট বড় দেশীয় প্রজাতির মাছ ধ্বংস করা হচ্ছে। এতে বিভিন্ন প্রজাতির জলজ প্রাণী হয়ে পরছে বিলুপ্ত এবং বংশ বৃদ্ধি চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এমনকি অবৈধ ভেসাল জাল ও কারেন্ট জালের প্রভাবে নদী বা খালে নৌযান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।

উপজেলা মৎস্য বিভাগ সূত্র বলছে, আইন অনুযায়ী উন্মুক্ত জলাশয়ে, খাল বিলে বা নদীতে কোনো কিছু দিয়ে আড়াআড়ি বাঁধ দেয়া বা যেকোনো ধরনের ফাঁদ ব্যবহার ও স্থাপনা নির্মাণ এবং দুয়ারি চাই, চায়না চাই, ভেসাল ও কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

এ বিষয়ে মতলবের উপাদী উত্তর দক্ষিণ ইউনিয়নের হান্নান মিয়া, কাশেম, খোকন, বিল্লাল, দেলোয়ার, নারায়নপুরের সামসুল, আবুল, কাজল, নওগাঁ গ্রামের হযরত আলী, সুজন, শফিকসহ অন্যান্যরা নিজেদেরকে ভেসাল জালে মাছ ধরার কথা স্বীকার করেন। তারা বলেন, আমরা বড় মাছের পাশাপাশি অনেক ছোট পোনাও এভাবে ফাঁদ পেতে ধরি। কিন্তু ছোট বা গুড়া পোনা বিক্রি যোগ্য নয় বলে মৃত পোনাগুলো ফেলে দিতে হয়। তবে প্রশাসন যদি অভিযান দেয় তাহলে আমরা এই অবৈধভাবে নদী ও খালে মাছ ধরা থেকে বিরত রাখবো।

জেলে শফিক বলেন, ইলিশ মাছ ধরার জন্য সাধারণত আমরা ধনাগোদা নদীতে কারেন্ট জাল ফেলে থাকি। আর ভেসাল জাল ও অন্যান্য চাই খালের মুখে ফাঁদ হিসেবে ফেলে দেশীয় প্রজাতির ছোট বড় সব মাছ ধরি। এখন এগুলো যদি অবৈধ হয় আর প্রশাসন যদি আমাদের অবগত করে তাহলে অবশ্যই আমরা এভাবে মাছ শিকার করবো না।

এদিকে মৎস্য বিভাগের উদাসীনতা নেই জানিয়ে মতলব দক্ষিণ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস বলেন, আমরা প্রতিনিয়তই অবৈধ কারেন্ট জাল, ভেসাল জাল, চায়না চাইসহ অন্যান্য অবৈধ জাল ও অসাধু জেলেদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রেখেছি। কেননা মাছ ধরার বিশেষ ধরনের বস্তু কারেন্ট জাল ও ভেসাল জাল পরিবেশবিদ ও মৎস্য বিজ্ঞানীরা মিঠাপানি ও সামুদ্রিক মাছ বিলুপ্ত হওয়ার জন্য সম্পূর্ণ রূপে দায়ী করছেন। নদীতে ভেসাল জাল, কারেন্ট জাল, চায়না চাই, দুয়াড়ি চাই, গণমসারি জাল এগুলো সব সময়ের জন্যই অবৈধ। চায়না চাই, গচি জাল, কারেন্ট জালের বিরুদ্ধে দ্রুতই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।