মাদারীপুরে ‘বরিশাল খাল’ উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেছে প্রশাসন।

মাদারীপুরে ‘বরিশাল খাল’ উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেছে প্রশাসন। দখল আর দূষণে অস্তিত্ব সংকটে থাকা খালটি উদ্ধারে একদল তরুণদের সহযোগিতায় শুরু হয় পরিস্কার-পরিচ্ছন্নার কার্যক্রম।কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে এই অভিযান চালিয়ে যাবার কথা জানায় তরুণরা। এদিকে খাল দিয়ে পানিপ্রবাহ টিকিয়ে রাখতে স্থানীয় বাসিন্দাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জেলা প্রশাসনের।শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সকালে কুকরাইল এলাকা থেকে  শুরু হয় উক্ত কার্যক্রম।জানা যায়, মাদারীপুর শহরের ইটেরপুল থেকে পাথুরিয়ারপাড় পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত ‘বরিশাল খাল’দখল আর দূষণে খালটি অস্তিত্ব সংকটেদীর্ঘদিনে সংস্কার না হওয়ায়, দখল আর দূষণে বন্ধ হয়ে যায় খালের পানি প্রবাহ।ময়লা-আবর্জানায় খালটি প্রায় বন্ধের উপক্রম! ফলে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। বেড়েছে মশা-মাছির উপদ্রব। একইসঙ্গে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে স্থানীয়রা।বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারের পর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। খালটি উদ্ধারে নেওয়া হয় উদ্যোগ। এরই অংশ হিসেবে শুক্রবার সকালে কুকরাইল এলাকায় শুরু হয় কার্যক্রম। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিডি ক্লিন-এর একদল তরুণ অংশ নিতে পেরে খুশি তারা। পাশে থেকে সহযোগিতার আশ্বাস জনপ্রতিনিধিদেরওসূত্র জানায়, ২০১৯ সালে জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সড়ক বিভাগ এবং এলজিইডির যৌথ উদ্যোগে বরিশাল খালের দুই পাড়ে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। পাশাপাশি ময়লা-আবর্জনা, কচুরিপানাও পরিষ্কার করা হয়। সে সময়ে খালটি খননের উদ্যোগ নেওয়া হলেও অদৃশ্য কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। শুধু পরিষ্কার-পরিচ্ছনতার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে আশপাশের দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তা না হলে আবারও অস্তিত্ব সংকটে পড়তে পারে এই খালটি।বিডি ক্লিন’র সদস্য মো. শাকিব হোসেন বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় খাল টিকিয়ে রাখার কোনো বিকল্প নেই। এজন্য সবাইকে কাজ করতে হবে। জেলা প্রশাসন ও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর যে উদ্যোগ নিয়েছে তাকে আমরা সাধুবাদ জানিয়ে তাদের সঙ্গে কাজ করছি। এমন কাজ করতে পেরে আমরা সদস্যরাসহ সবাই খুশি।মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জয়নাল তালুকদার বলেন, অযত্ন আর অবহেলায় বরিশাল খালটির এখন কোনো অস্তিত্ব নেই। অথচ ছোটবেলায় দেখছি এই খাল দিয়ে বড় বড় নৌযান চলাচল করছে। এই খালটি পুনরায় পানি প্রবাহ ফিরিয়ে আনা হোক। তাহলে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকবে।মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তানিয়া ফেরদৌস বলেন, খালটির পানি প্রবাহ টিকিয়ে রাখতে এগিয়ে আসতে হবে স্থানীয় বাসিন্দাদেরও। প্রশাসনের একার পক্ষে এমন কাজ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। আশপাশের বাসিন্দাদের সচেতন হতে হবে, ময়লা আর আবর্জনা খালে না ফেললে এর পানি প্রবাহ ঠিক থাকবে।