প্রশাসক হিসাবে যোগ দিলেও,তিনি খুব একটা সময় দেননি নগর ভবনে।তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়।শেষ পর্যন্ত তাঁকেও বদলি করে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ায় অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে রংপুর সিটি কর্পোরেশন। এছাড়াও কয়েকজন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে।অনেকেই আবার রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকেই,পলাতক রয়েছেন।৪৪জন কাউন্সিলরের মধ্যে ২২ জনই অনুপস্থিত।

গত ১৯ আগস্ট ২০২৪ ইং অন্তবর্তী সরকার সারা বাংলাদেশের সিটি কর্পোরেশনের মেয়রদেরকে সরিয়ে দিয়ে প্রশাসক নিয়োগ দেন।এরই ধারাবাহিকতায় রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফাকে অপসারণ করে,রংপুর বিভাগীয় কমিশনার জাকির হোসেনকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেন। 

প্রশাসক হিসাবে যোগ দিলেও,তিনি খুব একটা সময় দেননি নগর ভবনে।তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়।শেষ পর্যন্ত তাঁকেও বদলি করে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ায় অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে রংপুর সিটি কর্পোরেশন। এছাড়াও কয়েকজন কাউন্সিলরের  বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে।অনেকেই আবার রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকেই,পলাতক রয়েছেন।৪৪জন কাউন্সিলরের মধ্যে ২২ জনই অনুপস্থিত।

এ অবস্থায় বিভিন্ন বিভাগে কাজের গতি থেমে গেছে।স্থবির হয়ে পড়েছে সিটি কর্পোরেশনের দাপ্তরিক কার্যক্রম।ব্যাঘাত ঘটছে উন্নয়ন কর্মকান্ডেও।এই সংবাদ প্রতিবেদক গত রবিবার(১৫ সেপ্টেম্বর ২৪ইং)সকাল ১০ টার সময় সরেজমিন ঘুরে দেখেন,রংপুর সিটি কর্পোরেশনের দপ্তর প্রধানেরা অনেকেই ততক্ষণে অফিসে আসেননি।ছুটিতে থাকা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার চেম্বারের ভিতরে চেয়ারে হেলান দিয়ে এসির বাতাস খাচ্ছিলেন অফিস সহায়ক।ততক্ষণে ভিড় বেড়ে যায় সেবা নিতে আসা মানুষের।পরে একে একে কর্মকর্তারা এলেও কাউন্সিলরদের উপস্থিতি নেই। তাছাড়া সিটির প্রশাসক না থাকায়,নানান জটিলতায় সেবা না পেয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে নগরবাসিদের। নাগরিক ভোগান্তির এমন চিত্র প্রতিদিনের। 

রংপুর সিটি কর্পোরেশন সচিব জয়শ্রী রাণী রায় এই প্রতিবেদককে ফোনে জানান,রংপুর বিভাগীয় কমিশনারকে বদলির পর,আবার নতুন করে সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারকে।তবে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি এখনো যোগদান না করায়, বিষয়টি অনেকটাই গোপন রয়েছে সরেজমিন দেখা যায়,সিটি কর্পোরেশনের  জন্মমৃত্যু নিবন্ধকের কার্যালয়ে সেবা গৃহীতাদের উপচে পড়া ভিড়।অনেকে অনলাইনে আবেদন করে কাগজপত্র জমা দিতে আসেন কিন্তু সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলরদের প্রত্যায়ন না থাকায় জন্ম-মৃত্যু সনদ না পেয়ে ফেরত যেতে হচ্ছে নাগরিকদের।

২৬ নম্বর ওয়ার্ডের মহাদেবপুর এলাকার বাসিন্দা সাহেব আলী বলেন,কাউন্সিলর না থাকায় শিশুর জন্ম সনদ মিলল না।সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহজাদা আরমান আত্মগোপনে আছেন।২০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রোমেনা বেগম সাত দিন ধরে মৃত্যুর সনদ নিতে কাউন্সিলরের অফিসে ঘুরছেন।তিনি জানান, কাউন্সিলর তৌহিদুল ইসলামকে পাওয়া যায় না।একই অভিযোগ করেন ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আলতাফ হোসেন।তিনি বলেন,কাউন্সিলর রফিকুল ইসলামের অফিস বন্ধ।জন্ম মৃত্যু নিবন্ধক মোহাম্মদ আলী বলেন, কাউন্সিলরের প্রত্যায়ন না থাকায়,সনদ দিতে সমস্যা হচ্ছে। প্রতিদিন অন্তত দুইশত সনদ দেওয়ার কথা থাকলেও এখন তা অর্ধেকে নেমেছে। 

সিটি কর্পোরেশনের সচিব জয়শ্রী রানী রায় চেম্বারে নেই।জানা গেল,তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মিটিংয়ে আছেন।দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতেমার চেম্বারে দেখা গেল,এসি ও ফ্যান ছেড়ে আরাম করছেন অফিস সহায়ক রিপন মিয়া।প্যানেল মেয়র মাহাবুবার রহমান মঞ্জু জানান,সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরদের ওই ওয়ার্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন প্রশাসক না থাকায়,ঠিকাদারেরা বিল পাচ্ছেন না।বেদখল জমি উদ্ধারে বিলম্ব হচ্ছে। 

হনুমানতলার বাসিন্দা ও করপোরেশনের ঠিকাদার'শাহিন রহমান জানান,কাজ করে বিল ও জামানত পাওয়া যাচ্ছে না।তিনি আরো জানান,আমার কাজের জামানত বাবদ ১৪ লাখ টাকা তুলতে পারছি না।তাই আমার সব  কাজে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে টাকার জন্য।কর্পোরেশন সচিব বলেন,কাউন্সিলরেরা পরপর তিনটি মাসিক সভায় অনুপস্থিত থাকলে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। জবাব সস্তোষজনক না হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে।আমরা চেষ্টা করছি,সব সমস্যা সমাধান করে নগরবাসীর সেবা নিশ্চিত করার।