সাধারণত তিনমাস অন্তর অন্তর দান বাক্স খুলা হলেও, গতকাল শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে সাধারণ ৪মাস ১০দিন পর খুলা হয় পাগলা মসজিদের দান বাক্স। আর এতেই অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙে মিললো ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা।

সাধারণত তিনমাস অন্তর অন্তর দান বাক্স খুলা হলেও, গতকাল শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে সাধারণ ৪মাস ১০দিন পর খুলা হয় পাগলা মসজিদের দান বাক্স। আর এতেই অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙে মিললো ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা।

শনিবার সকাল সাড়ে ৭টায় জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের বিভিন্ন অংশে রাখা ৯টি দান বাক্স ও ১টি ট্রাঙ্ক খুলে এবার পাওয়া যায় রেকর্ড ২৭ বস্তা টাকা, বিদেশি মুদ্রা সহ স্বর্ণ অলঙ্কার। কিশোরগঞ্জ জেলা রূপালী ব্যাংক শাখার ৫০জন কর্মকর্তা কর্মচারীর সহায়তায়, পাগলা মসজিদের নোরানী কোরাআন হাফিজিয়া মাদ্রাসার ১১২জন শিক্ষার্থীসহ প্রায় দুইশোতাধিক মানুষের অংশ গ্রহণে দিনভর টাকা গণনা শেষে রাত দেড়টার দিকে টাকার পরিমাণ জানানো হয়।

পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এ কেএম শ‌ওকত আলী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, "শনিবার সকাল ৮টা থেকে টাকা ১৭ঘন্টা গণনা করে টাকার পরিমাণ জানা যায়। টাকা ছাড়াও আমরা বিদেশি মুদ্রাসহ স্বর্ণ অলঙ্কার পাই ৯টি দান বাক্স ও ১ স্টিলের ট্রাঙ্কে আমরা মোট ২৭ বস্তা টাকা পাই।"এর আগে ৯ ডিসেম্বর ২০২৩এ সর্বশেষ দান বাক্স খুলে পাওয়া যায় ৬ কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪৩১ টাকা। 

টাকা ছাড়াও এবারে মিলেছে এক যুবকের চিরকুট যেখানে সে তার ভালোবাসার মানুষকে উদ্দেশ্য করে আল্লাহর কাছে লিখেন," বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম, আমি একটি মেয়েকে ভালোবাসি কিন্তু মেয়েটি আমাকে ভালোবাসে না, আমি আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করি আল্লাহ যেন তাকে আমার জীবনসঙ্গী হিসেবে কবুল করে নেন। মেয়েটির নাম মোছাঃ পারভীন আক্তার, আমার নাম সাইফুল ইসলাম।
ঠিকানা, সিলেট, হবিগঞ্জ।"

মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোঃ আবুল কালাম আজাদ জানান, "দানের টাকা রাখা হয় মসজিদের নামে খোলা একটা ব্যাংক একাউন্টে। ১১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বহুতল মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাগলা মসজিদের টাকা নয়ছয়ের কোন সুযোগ নেই, প্রতিটি টাকা সুক্ষ্মভাবে গণনা করে ব্যাংকের একাউন্টে জমা রাখা হচ্ছে টাকা।"

জনশ্রুতিতে আছে, একসময় এক আধ্যাত্মিক পাগল সাধকদের বসবাস ছিল কিশোরগঞ্জ জেলার হারুয়া ও রাখুয়াইলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নরসুন্দা নদীতে ভেসে উঠা চরে। তার মৃত্যুর পর সেখানে নির্মিত মসজিদটি পরবর্তীতে পাগলা মসজিদ নামে পরিচিতি লাভ করে। এখানে মানত করলে মনের আশা পূরণ হয় এমন ধারণা থেকে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে অসংখ্য মানুষ এখানে দান করে থাকেন।

গতবছর পাগলা মসজিদে পাওয়া যায় মোট ২১ কোটি ৫৬ লাখ ২ হাজার ৩৫৮ টাকা। তবে মসজিদ এর তহবিলে মোট কত টাকা জমা আছে তা জানায়নি মসজিদ কমিটি।