মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আলমগীর হোসেন লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ সহ নানা অনিয়মে জড়িত। গত ৭ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগটি দায়ের করেছেন কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও ম্যানেজিং কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি মো. মামুনুর রশীদ সিদ্দীক।
অভিযোগপত্র অনুসারে, অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন ম্যানেজিং কমিটিতে তাঁর পছন্দের ব্যক্তি মোঃ আশরাফুল ইসলাম গেন্দুকে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে সভাপতি মনোনীত করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেরণ করেছেন। এছাড়াও, কলেজের নিজনামীয় দুই একর সতেরো শতক আবাদী জমির ১৯৯৫ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত কোনো হিসাব তিনি দেননি। ২০২০ সালে কলেজের মেহগনি গাছ কেটে ৭৯টি কাঠের গোলা একটি স’মিলে রাখার পর তিনি ও আরও দুজন শিক্ষক ২৮টি কাঠের গোল সরিয়ে ফেলার অভিযোগেও তার নাম উঠে এসেছে।
বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মামুনুর রশীদ সিদ্দীক তাঁর অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, কলেজে ভবন নির্মাণে দুর্নীতি, ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা বিভিন্ন ফির সিংহভাগ টাকার হিসাব না দিয়ে আত্মসাৎ এবং ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হান্নান আলী সরদারের তিন মাসের বকেয়া বেতন তুলে আত্মসাৎ সহ নানা অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হান্নান আলী সরদার জানান, আমার তিন মাসের বিল তুলে আত্মসাৎ করেছেন অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন। তাঁকে বলার পরেও তিনি স্বীকার করেননি। পরবর্তীতে কলেজের ফাইলে আমার বিল তৈরি করে বেতন উত্তোলনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তার পরেও তিনি বেতনের টাকা ফেরৎ দেননি।
অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচনে অনিয়মসহ তাঁর বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এবং তিনি দাবি করে বলেন, নীতিমালা অনুসরণ করেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সভাপতি নির্ধারণ করা হয়েছে। এখানে কোন প্রকার অনিয়ম করা হয়নি।
অন্যদিকে, পদত্যাগের দাবি ওঠা বান্দাইখাড়া ডিগ্রী কলেজের সভাপতি মোঃ আশরাফুল ইসলাম গেন্দু তাঁর বক্তব্যে বলেন, সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী নিয়ম তান্ত্রিকভাবে আমাকে সভাপতি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন দিয়েছে। কমিটি গঠনে অধ্যক্ষ কোন অনিয়ম করেননি। আমার এবং অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মানববন্ধন করা হয়েছে।
বান্দাইখাড়ার মো. ইয়াকুব আলী মজনু সরদার বলেন, অধ্যক্ষ মহোদয়ের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো অত্যন্ত গুরুতর। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলো জ্ঞান-বিজ্ঞানের পবিত্র জায়গা। এখানে দুর্নীতির কোনো স্থান নেই। আমরা দাবি করছি, অবিলম্বে একজন ম্যাজিস্ট্রেট বা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে এই সকল অনিয়মের সত্যতা যাচাই করতে হবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
উক্ত মানববন্ধনে বান্দাইখাড়া ডিগ্রী কলেজের ছাত্র মো. রাকিব, মোঃ শাফিক আহমেদ, মো. হাবিবুর রহমান, অত্র কলেজের দাতা সদস্যের ছেলে পলাশ চৌধুরীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন।আ