কুড়িগ্রামে বন্যা কবলিত এলাকায় গো খাদ্যের চরম সংকটে কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি মোঃরিপন মিঞা কুড়িগ্রামে গবাদিপশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ। কারণ বন্যায় ডুবে গেছে চারণ ভূমি। অবলা প্রাণী ঠাঁই হয়েছে রাস্তার ধারে মাটির উঁচু জায়গায়। এতে গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে।
খাদ্যের অভাবে অনেক গবাদিপশু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় অনেকে কম দামে গরু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এই প্রাণিগুলোর জন্য সরকারিভাবে এখনও পর্যন্ত কোনো ধরনের খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়নি বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।রবিবার (৭জুলাই ) সরেজমিন ভোগডাঙ্গা, যাত্রাপুর, পাঁচগছি,সহ ৪১টি ইউনিয়ন দুই শতাধিক গ্রাম এছাড়া দুধকুমার ফুল কুমার নদীর বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুনগ্রাম।
অনেক বাড়িঘর পানির নিচে রয়েছে। ঘরে পানি ওঠায় অনেক মানুষ গবাদিপশুগুলো নিয়ে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছেন। কেউ কেউ গবাদিপশুকে কচুরিপানা খাওয়াচ্ছেন। কেউ কিছু খাওয়াতে না পেরে অসহায় অবস্থায় রয়েছেন।প্রথম আলো চারের মোঃ হাসান রানা বলেন, বন্যায় সব জায়গা ডুবে গেছে। গরুর জন্য কোনো ঘাসপাতা পাচ্ছি না এতে বড় সমস্যায় পড়েছি। চর যাত্রাপুর কালাই দাখিল মাদ্রাসা আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা কালাই গ্রামের ইলিয়াস মিয়া বলেন, বাড়িঘরের অবস্থা খারাপ। সব ডুবে গেছে। গরু-বাছুরগুলো নিয়ে সাতরে আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছি।
গরুগুলোকে ঘাস খাওয়াতে পারছি না। কখনও কিছু পেলে তাদের খাওয়াচ্ছি। কারণ বন্যায় সব এলাকা ডুবে গেছে। বড় অসহায় অবস্থায় আছি।ঘোগাদাহ ইউনিয়নের আজিজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, কোথাও ঘাস মিলছে না। বন্যায় সব ডুবে গেছে। আমরা নিজেদের থাকা-খাওয়া কোনোমতে জুটছে কিন্তু গরুগুলোর কোনো খাদ্য পাচ্ছি না। বট, পাইকর, কলা গাছের পাতা, কচুরিপানা সহ যা পাচ্ছি তাই খাওয়াচ্ছি। মালা রানী নামে এক নারী বলেন, তার ঘরে পানি ঢুকেছে। তাই ৩ টি ছাগল ২ টা গরু নিয়ে আশ্রয় নিয়েছি আশ্রয় কেন্দ্রে।
কিন্তু গবাদিপশুর কোন খাবার পাচ্ছিনা।উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এ আর এম আল মামুন বলেন, গবাদিপশুকে চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। পশু খাদ্য ত্রাণ হিসেবে কোন বরাদ্দ এখনো পায়নি তবে পেলে আমরা দেওয়ার ব্যবস্থা করব। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মুসফিকুল আলম হালিম বলেন, গবাদিপশুর জন্য আমরা চাহিদা পাঠিয়েছি ।দ্রুত গবাদিপশুর তালিকা সংগ্রহ করে খাদ্যগুলো বিতরণ করা হবে। আপাতত বানবাসি মানুষদের কে সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছি।
জানা গেছে, সাম্প্রতিক ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে উপজেলার সদর সহ ৪১;টি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট ও ফসলের মাঠ। এই অবস্থায় প্রায় দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ঘরে টিকতে না পেরে অনেকে বাধ্য হয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে ছুটছেন। কেউ আবার আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে উঠেছেন। বিভিন্ন এলাকার গ্রামীণ রাস্তা পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। এতে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ফলে মানুষজন সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছেন। এদিকে ধীরে ধীরে পানি নেমে গেলে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হবেসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।