গোপালগঞ্জে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. এহসানুল হকেকে ১ নং বিবাদী করে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞ আমলি আদালতে মামলা দায়ের করেন মাহমুদ হাসান সুজন (প্রো. নিউ রেক্স এ্্যান্টার প্রাইজ) নামক একজন নিয়মিত ঠিকাদার। নির্বাহী প্রকৌশলী তার উপর অবৈধ প্রভাব খটিয়ে সন্ত্রাসীদের যোগসাজে তার একাউন্ট হতে বিলের টাকা উত্তোলন করে নেয় বলে মামলায় এজাহারে উল্লেখ্য করেন ঠিকাদার সুজন।
মামলায় নির্বাহী প্রকৌশলী সহ সহযোগী আরো তিন জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেন।তারা হলেন, আসলাম খান পিতাঃ আব্দুল রব খান (প্রোঃ এন,এ, ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড রানা এন্টারপ্রাইজ গে.ভি এবং রানা এন্টারপ্রাইজ) ৩৭২/৩ মুন্সিবাড়ী, শাহাদাত হোসেন পশ্চিম জুরাইন, ফরিদাবাদ ,শ্যামপুর, ঢাকা অন্নরা হলেন হেলাল সরদার পিতাঃ হিরু সরদার সাং বেদগ্রাম , মেহেদী ফরাজী পিতাঃ মাজেদ ফরাজী সাং গোলাবাড়ীয়া থানা ও জেলাঃ গোপালগঞ্জ।
ঠিকাদার সুজন বলেন, আমি এলজিইডি বিভাগের একজন নিয়মিত ঠিকাদার। আমি ইতিপূর্ব হইতে আমার ব্যক্তিগত লাইসেন্স সহ বিভিন্ন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সেসের নামে নিয়মিত কাজ করি। আমি কিছুদিন পূর্বে আসলাম খানের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে দুইটি কাজ পেয়ে সরকারি নির্দেশ মোতাবেক যথাযথভাবে কাজ সম্পন্ন করে প্রায় অর্ধেক বিল উত্তোলন করি। তিনি আরো বলেন, এলজিইডি এর বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী একজন দুর্নীতিবাজ ও ঘুসখোর প্রকৃতির লোক, তিনি আমার উপর অবৈধ প্রভাব সৃষ্টি ও তার পালিত গুন্ডা বাহিনীর হেলাল সরদার ও মেহেদী ফরাজী নামক সন্ত্রাসীদের প্রথমে (১১/৩/২৪ তারিখ) অমার নিকট হতে ৩,৬০,০০০/= (তিন লক্ষ ঘাট হাজার) টাকা এবং ১৩/৬/২৪ তারিখ ৩১,১৮,৯০০ (একত্রিশ লক্ষ আঠারো হাজার নয়শত) টাকার দুইটি চেক গ্রহণ করিয়া আমায় ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানের নামীয় অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন করে নেয় । পরবর্তীতে আমার কাজের দুইটি বিল পাশ হইলে আমি বহু ঘোরাঘুরি করিয়া গোপালগঞ্জ জেলা হিসাব রক্ষণ অফিস হইতে ৭৭,৫৫,৮১৫/= সাতাত্তর লক্ষ পঞ্চান্ন হাজার আটশ পনেরো) টাকা এবং ৩০,৭২,১৪৪/= (ত্রিশ লক্ষ বাহাত্তর হাজার একশত চুয়াল্লিশ) টাকার দুইটি চেক পাশ করাই। ঐ দুটি চেক হিসাব রক্ষণ অফিস হইতে নিয়া নির্বাহী প্রকৌশলী সু-কৌশলে আটকাইয়া রাখে। আমি হিসাব রক্ষণ অফিসে গিয়া চেক না পেয়ে এলজিইডি অফিসে গিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী সহ সকলকে এক সাথে দেখতে পাই। তাদের কাছে আমি চেক চাইলে তার আমার নিকট ২০,০০,০০ (বিশ লক্ষ) টাকা বাড়তি দাবি করে।
আমি নির্বাহী প্রকৌশলীকে বললাম "স্যার আপনাকে ইতি পূর্বে দুই বার বড় অঙ্কের টাকা দিয়েছি। আপনি আবার টাকা চান কেন?" তখন তিনি আমার সহিত খারাপ ব্যবহার করে এবং বলে তুমি যে লাইসেন্সে কাজ করেছো সেই প্রতিষ্ঠানকে চেক দেওয়া হবে ।ঠিকাদার বলে আসলাম খানের তো শুধু মাত্র লাইসেন্স, সে তো তাহার প্রতিষ্ঠানের নামে গোপালগঞ্জ এস,বি,এ,সি ব্যাংকে ০০৩৫১১১০০৭৮৬৫ নং এবং ০০৩৫১১১০০৭৮৫৬ একাউন্ট খুলিয়া আমাকে চেক পাওয়ার দিয়ে গেছে। নির্বাহী প্রকৌশল বলে যে আমি আসলাম খান সহিত কথা বলি তার পর আপনি অফিসে আসেন।এই ভাবে তারা আমাকে ঘুরাইতে থাকে।আমি যার লাইন্সে কাজ করেছি তার কাছে গেলে সে আমাকে বলে এখানে আমার কোন ক্ষমতা নাই। আমি নির্বাহী প্রকৌশলীর উপরে কোন কথা বলতে পারবো না।
পরবর্তীতে আসলামের অফিসে গেলে তার আমাকে আমার কাজের চেক না দিয়ে বলে তোর টাকা আমরা সকলে ভাগবাটোয়ারা করে নেবো। বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোর লাইসেন্স বাতিল করে দেব সেই সাথে এই বিভাগে তোর নিজ প্রতিষ্ঠান নিউ রেক্স এর নাম ৮৩৮৪৬৪ এবং ৮৩৮৪৭০ নং টেন্ডার আরও দুইটি কাজ রয়েছে তা বাতিল করে দেব এবং জামানতের প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ টাকা ফেরত দেবে না বলে হুমকি দেয় । এক পর্যায়ে ওরা আমাকে খুন করার হুমকিও দেয়।
গোপালগঞ্জ এলজিইডির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে এর আগেও বিভিন্ন সময়ে নানা উপায়ে বিভিন্ন কাজের অনিয়ম ও দুর্নীতির ব্যপারে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীর হাত ধরে এরা এ সকল আপকর্ম করে পার পেয়েছে। কাজ উধাও করে টাকা আত্মসাতে বিভাগীয় তদন্ত ও চলেছে বলে জানা যায়।স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর(এলজিইডি) গোপালগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. এহসানুল হক এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ও যে লাইসেন্সে কাজ করেছে সেই লাইসেন্সের এর অ্যাকাউন্টে টাকা যাবে এটাই নিয়ম। নিয়ম বহির্ভূত কোন কাজ আমরা করতে পারি না। ঐ ঠিকাদার যে লাইসেন্সে নামে কাজ করেছে ওদের সাথে তার কোন সমস্য থাকলে ওটা