নীলফামারীর জলঢাকায় এনসিপি কর্তৃক অনুষ্ঠিত জুলাই ৩৬ মেলায় প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা নির্ধারণ করেছে আয়োজক কমিটি। গত ১লা সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ মেলায় শুরুতে দর্শনার্থীদের প্রবেশ ছিল ফ্রি। তবে শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) থেকে প্রবেশ টিকিট কিনেই ঢুকতে হচ্ছে দর্শনার্থীদের। এতে মেলায় আসা লোকজনের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।


আয়োজকরা দাবি করছেন, জুলাই ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতিকে ধারণ করে এ মেলা আয়োজন করা হয়েছে। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেলায় জুলাই আন্দোলনের কোনো স্মৃতিচিহ্ন নেই। বরং মেলা মাঠের পাশের শহীদ মিনারটিকে অবহেলিত অবস্থায় রাখা হয়েছে। দেখা গেছে, অনেকে জুতা পায়ে শহীদ মিনারে উঠছেন।

এ ছাড়া মেলায় শিশুদের জন্য কিছু রাইডস থাকলেও অতিরিক্ত টিকিট মূল্যের কারণে অনেকে তা উপভোগ করতে পারছেন না। বরং সেখানে ডিজে গানের তালে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া তরুণদের নৃত্য, প্রচণ্ড শব্দে গান বাজানো এবং শব্দ দূষণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আশেপাশের বাড়ির অবিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সাউন্ড সিস্টেমের উচ্চ শব্দে পড়াশোনা করা যাচ্ছে না।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, যে স্থানে মেলাটি বসানো হয়েছে তার মাত্র ১০০ গজ দূরেই একটি মাদ্রাসা, ২০০ গজ দূরে একটি কবরস্থান এবং আশেপাশে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এমন স্পর্শকাতর স্থানের পাশে উচ্চ শব্দে ডিজে গান ও হৈচৈপূর্ণ আয়োজন হওয়ায় তারা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

শুধু তাই নয়, এই মেলাকে ঘিরে প্রতিদিন বাজার এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন হাজার হাজার পথচারী ও সাধারণ মানুষ।

উল্লেখ্য, মেলা শুরুর প্রথম দিকে স্থানীয়রা এ আয়োজন বন্ধের দাবিতে মানববন্ধনও করেছিলেন, তবে কোনো প্রতিকার মেলেনি।

এ বিষয়ে মেলা কমিটির আহ্বায়ক ও উপজেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী রেজাউল করিম বলেন, মেলার অনুমোদন নেওয়া আছে তবে কার কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া আছে এটা ক্লিয়ার বলতে পারেনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অফিসার ইনচার্জ আরজু মোঃ সাজ্জাদ এ প্রতিবেদককে বলেন, মেলার অনুমতির কোন কাগজ তিনি হাতে পাননি। 

মেলার ৩৬ দিনের অনুমতি ও ২০ টাকা প্রবেশ মূল্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জায়িদ ইমরুল মোজাক্কিন বলেন, “ উপজেলা প্রশাসন থেকে কোন অনুমতি দেওয়া হয়নি। 

এদিকে মেলাটি যেহেতু অনুষ্ঠিত হচ্ছে জেলা পরিষদ মাঠে সেজন্য  জেলা পরিষদের অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে পারেনি আয়োজক কমিটি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নীলফামারী জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দীপঙ্কর রায় বলেন,জেলা পরিষদ মাঠে মেলা হচ্ছে এবং ২০ টাকা টিকিটের বিষয়ে বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।