কিশোরগঞ্জের নীলগঞ্জ তাড়াইল সড়কে তাড়াইল-সাচাইল সদর ইউনিয়নের দড়িজাহাঙ্গীরপুড় গ্রামের কাইনহা বিলে জলের উপর বিছানো থালার মতো গোলাকার সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে লম্বা ডগার উপর দর্শনার্থীদের মন কাড়ছে লাল সাদা পদ্ম।
অসংখ্য পাপড়ির চমৎকার বিন্যাসে সজ্জিত একেকটি পদ্ম যেমন সুগন্ধি ছড়ায়, তেমনি যেকোনো মানুষের হৃদয় কাড়ে সহজেই।সরেজমিন রোববার ( ২৫ আগস্ট ) কাইনহা পদ্ম বিলে দেখা যায়, কয়েক একর পতিত জমিতে লাখ লাখ পদ্ম ফুল ফুটে আছে। দেখতে আসা দর্শনার্থীরা নিজেদের ইচ্ছামতো ফুল তুলে নিয়ে যাচ্ছেন।
আবার কেউ কেউ স্মৃতিটুকু ধরে রাখতে ক্যামেরাবন্দি হচ্ছেন।কাইনহা পদ্ম বিলে সপরিবারে ঘুরতে আসা দর্শানার্থী সাংবাদিক আজাহারুল ইসলাম চুন্নু বলেন, এখন আর তেমন পদ্ম ফুল দেখা যায় না। মানুষের মুখে মুখে শুনতে পেয়ে দেখতে এসেছি। তবে পদ্ম ফুলের কাছে যেতে অনেক প্রতিকূলতা পোহাতে হইছে। কাছ থেকে পদ্ম ফুল দেখে খুব ভালো লাগছে। কয়েকটা পদ্মফুল নিয়ে যাচ্ছি বাড়ির অন্যসব লোকদের দেখানোর জন্য।
স্থানীয় কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, কয়েক বছর আগেও এখানে তেমন কেউ আসতো না। গত ২ বছর ধরে প্রচুর নারী-পুরুষ এই পদ্ম বিলে ফুল দেখতে আসেন।পদ্মবিলে গিয়ে দেখা যায়, বিলপাড়ে রয়েছে কয়েকটি ছোট ডিঙিনৌকা। এগুলো দিয়ে ফুলপ্রেমীদের বিলে ঘুরিয়ে আনা হয়। এক নৌকায় ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় এক ঘণ্টা ঘুরে বেড়ানো যায়। স্থানীয় অনেকেই নৌকা চালিয়ে অর্থ উপার্জন করতে পারছেন। আবার অনেকে হেঁটে যতদূর সম্ভব বিলপাড়ে গিয়ে ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন।
ডিঙি নৌকার মাঝি সাইফুল ইসলাম বলেন, একেকজন মাঝি দিনে পাঁচ-ছয়বার করে নৌকায় লোকজন নিয়ে বিলে যায়। দর্শনার্থীদের নৌকায় করে বিলের পদ্ম ফুল দেখিয়ে ভালো আয় হচ্ছে বলে জানান তিনি।তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলমাস হোসেন বলেন, পদ্ম ফুল শুধু যে বিশুদ্ধতা, সৌন্দর্য ও পবিত্রতার প্রতীক হিসেবে মানুষের মনোহরণই করে তা নয়, খাদ্য ও ওষুধি গুণ হিসেবে পদ্ম আজ সারা বিশ্বে সমাদৃত।তিনি আরো বলেন, পদ্ম ফুল সাধারণত সাদা, গোলাপি অথবা হালকা গোলাপি রংয়ের হয়।অনেকেই লাল শাপলা আর পদ্ম ফুলের মধ্যে মিল থাকার কারণে চিনতে ভুল করেন। কিন্তু এর বীজপত্র ভালোভাবে দেখলেই পার্থক্য বোঝা যায়।