পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলায় সার সিন্ডিকেটের ফাঁদে পড়েছেন প্রান্তিক কৃষকরা। বাজারে চড়া দামে সার বিক্রি হওয়ায় বেগ পেতে হচ্ছে কৃষকদের। শঙ্কা তৈরি হয়েছে রবি ও খরিপ মৌসুমের ফসল উৎপাদন নিয়েও। সার বিক্রি নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে ডিলারদের বিরুদ্ধে। তবে বিসিআইসি সার ডিলারদের অভিযোগ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে সার বরাদ্দে ঘাটতি রয়েছে।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বরাদ্দের সার পাচার হচ্ছে বাঘাইছড়ি উপজেলায়। অন্যদিকে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে অবৈধ উপায়ে সার প্রবেশ হচ্ছে দীঘিনালায়। অবৈধ উপায় কাজে লাগিয়ে বাড়তি মুনাফা অর্জনের চেষ্টা করছেন সারের ডিলাররা। কৃষকের কাছে সার বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। প্রতি বস্তায় টিএসপি সারে ৯০০ টাকা, এমওপি সারে ৫০০ টাকা ও ডিএপি সারে ৪০০ টাকা এবং ইউরিয়া সার ১৫০ টাকা বাড়তি নেওয়া হচ্ছে। আর দাম লুকাতে ডিলাররা বিক্রি ভাউচারের পরিবর্তে সাদা কাগজ ধরিয়ে দেন। উল্লাহার ছেলে মো. আকরাম, খুচরা ডিলার বিক্রেতা, অনিল চাকমা, টিটো চাকমা, গোলজার হোসেন, নিমেন চাকমা, অর্বণা চাকমা, নাইম হোসেন, মো. লতিফ মিয়া, পূর্ণ সেকর চাকমা, অসীম চাকমা। ইউসুফ মিয়া, এদের সবার অভিযোগ কৃষি অফিসের নিয়মিত তদারকি ঘাটতি থাকায় এভাবে শোষন করছে খুচরা সার বিক্রেতা ও কৃষকদের। সবাই রীতিমতো জিম্মি তাদের কাছে।তারা বলেন, নির্ধারিত রেটে আমরা খুচরা সার বিক্রয় করতে পারচ্ছি না। যে রেটে সার ক্রয় করে থাকি প্রতি কেজি ২ টাকা বেশি নিয়ে সার বিক্রি করে থাকি। এ সময় তারা আরও দাবি করে বলেন, প্রশাসনে তদারকি বাড়ানো দরকার।সূত্রে জানা যায়, দীঘিনালা উপজেলার বরাদ্দের সার অবৈধভাবে রাঙ্গামাটি বাঘাইছড়ি উপজেলার, বাঘাইহাট, ওজোবাজার, মাচালং, সাজেক, উদয়পুরসহ বেশ কয়েকটি স্থানে এসব বরাদ্দের সার পাচার হয়। এতে করে সার ঘাটতি পরে উপজেলায়। আবার অবৈধ উপায়ে সার দীঘিনালা প্রবেশ করিয়ে বাড়তি টাকা নিচ্ছেন ডিলার মালিক পক্ষ।এ বিষয়ে কথা হয় উপজেলার বাঙালি, চাকমা, ত্রিপুরা কমিউনিটির অন্তত অর্ধ শতাধিক কৃষকের সাথে। তাদের অভিযোগ বিসিআইসি সার ও খুচরা সার বিক্রেতা সরকার নির্ধারিত রেটের চাইতে বেশি দিয়ে বিক্রি করা হয়। দেওয়া হয় না বিক্রি ভাউচার।সার ডিলার এসএস টের্ডাসের মালিক লোকমান জানান, ঠিকমতো বরাদ্দের সার পাওয়া যায় না। তাই বাহির হতে সার কিনে আনতে হয়। কৃষকের চাহিদা পূরণ করতেই চড়া দামে সার এনে আবার কৃষকের কাছে বিক্রি করতে হয়। সার ডিলার মের্সাস ভাই ভাই স্টীল অশোক দত্ত বলেন, পরিমাণ মতো বরাদ্দ পাওয়া যায় না তাই বাহির থেকে সার কিনে আনতে হয়। এজন্য সার দাম একটু বেশি।সার বিক্রি কারসাজি ও প্রতারণা নিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সার বরাদ্দ কম দেওয়া হয়েছে কথাটি সত্য নয়। পরিমাণ মতো বরাদ্দ দেওয়া হয় ডিলারদের।তিনি আরও বলেন, সারের ডিলাররা অনলাইনে আবেদন করে সার নিয়ে আসে। তবে বেশির ভাগ সময় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে অবগত করে না। বাহির থেকে সার আনলেও বেশি দাম সার বিক্রি করার কোন নিয়ম নেই। আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।