শিক্ষা নগরী ময়মনসিংহের ঢোলাদিয়ার তালতলায় অবস্থিত জামিয়া আরাবিয়া মাখযানুল উলুম মোমেনশাহী কওমি মাদ্রাসাটি যেন বর্তমান যুগের দ্বীন শিক্ষার আধ্যাত্মিক বাতিঘর। আল্লামা আব্দুর রহমান ওরফে হাফেজ্জী হুজুরের শ্বশুর মাওলানা মঞ্জুরুল হক (রহ:) আশির দশকে ময়মনসিংহ শহরের অদূরেই প্রতিষ্ঠা করেন জামিয়া আরাবিয়া মাখযানুল উলুৃম নামের এই দ্বীনি প্রতিষ্ঠানটি।শ্বশুরের মৃত্যূর পর প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা দায়িত্ব নেন ময়মনসিংহের সিংহপুরুষ ও লক্ষ লক্ষ মানুষের দ্বীনের আধ্যাত্নিক রাহাবার আল্লামা হাফেজ্জী হুজুর (দা.বা.) প্রায় পনের শত শিক্ষার্থী নিয়ে বর্তমানে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া প্রতিষ্ঠানটি প্রতি বছর ই বেফাক ও আল হায়াতুল উলিয়া বোর্ড পরীক্ষায় সাফল্যের স্বাক্ষর রাখে । নুরানি থেকে দাওরা হাদীস পর্যন্ত প্রতিটি ক্লাস যোগ্য উস্তাদের দ্বারা পরিচালিত হওয়ার কারণে ময়মনসিংহের অবস্থিত অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তুলনায় মাখযানুল ব্যতিক্রমীধর্মী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। উক্ত মাদ্রাসার পড়াশোনা ও আবাসিক সিস্টেমের প্রতি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা যথেষ্ট খুশি। এই মাদ্রাসায় পড়াশোনার পাশাপাশি প্রতি মাসে অনুষ্ঠিত হয় এসলাহী মাহফিল যা মানুষের রুহের আত্ন সংশোধনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতি মাসে এসলাহী মাহফিল হওয়ার কারণে ময়মনসিংহের বিভিন্ন জেলার মানুষের পাশাপাশি পাশ্ববর্তী অন্যান্য জেলার মানুষও আত্নার দ্বীনি খোরাক নেওয়ার জন্য আগমন করেন মাখযানুলের প্রাঙ্গণে। আর আগত মানুষদেরকে আখেরাতমুখী নসিহ করেন আমন্ত্রিত উলামায়ে কেরামগণ। বছর শেষে অনুষ্ঠিত হয় লক্ষ লক্ষ মানুষের তামান্নার ফসল বার্ষিক ইসলামি মহাসম্মেলন। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও গেল শুক্রবার বিকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় জামিয়া আরাবিয়া মাখযানুল উলুম মোমেনশাহীর বার্ষিক ইসলামি মহাসম্মেলন। উক্ত সম্মেলনে বিশেষ নসীহ করেন দ্বীনের আধ্যাত্নিক রাহাবার মাওলানা হাফেজ্জী হুজুর ( দা.বা.)। উপস্থিত শ্রোতাদের উদ্দেশ্য কর তিনি বলেন, মানুষের জীবন ক্ষণস্থায়ী আর আখেরাত চিরস্থায়ী। সুতরাং আমাদের সবার উচিত - আখেরাতের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া। উক্ত মাহফিলের প্রধান বক্তৃতার বক্তব্য দেন, আল্লামা মুফতি আমিনীর সুযোগ্য জামাতা ও আওয়ামী সরকারের আমলে বিনা কারণে কারাবরণকারী আলেম, কওমি অঙ্গণের বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর এবং বাতিলের হুংকার আল্লামা মুফতি সাখাওয়াত হোসেন রাজি( হাফিজাহুল্লাহ)। তিনি আগত দ্বীনি ইবরত হাসিলকারীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, হাজারো হাজারো আলেম ও তলাবা বিগত স্বেরাচারী সরকারের আমলে বিনা কারণে জেল জুলুম ও অত্যাচার সহ্য করেছে তবুও অন্যায়ের সাথে আপোষ করেনি আর ভবিষ্যতেও করবেও না। উপস্থিত জনতা তার বক্তব্যকে সাদরে গ্রহণ করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন ও নারায়ে তাকবীর দিতে থাকেন। তিনি অন্তর্বত্নী সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ছাত্র জনতা ও তওহীদি মানুষের স্বাধীনতাকে নিয়ে কেউ যদি ছিনিমিনি খেলতে চাই তবে তাদেরকেও বিন্দু পরিমাণ ছাড় দিবে না এদেশের তওহীদি জনতা।এদিকে এশাবাদ বক্তব্য রাখেন, আল্লামা আজিজুল হক ( রহ.) এর সুযোগ্য সাহেবজাদা আল্লামা মাহফুজুল হক ( দা.বা)। তিনিও উপস্থিত জনতাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, বাংলাদেশের মানুষ কখনও ইসলাম বিদ্বেষী স্বৈরাচারী সরকারকে মেনে নেয় নি আর কখনো নিবেও না। সেজন্য তিনি বর্তমান সরকারকে ইসলামি বিদ্বেষী কোনকিছু প্রচার প্রসার থেকে বিরত রাখার আহবান জানান। তাছাড়া দ্বীনি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি সুনজর রাখার জন্য উদ্ধাত আহবান জানান । বার্ষিক এই মাহফিলের সফলতা কামনা করে আগামী বছরেও মাহফিল হবে এমনটা জানিয়ে তিনি বক্তব্য শেষ করেন। সর্বোপরি মাখযানুলের প্রতি এলাকার মানুষ ও প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানান দ্বীনের আধ্যাত্নিক রাহাবার হাফেজ্জী হুজুর। মোনাজাত ও দোয়া কান্নাকাটির মাধ্যমে এইবারের মতো সম্পন্ন হয় বার্ষিক মাহফিল। তবে প্রতি মাসের নিয়মিত এসলাহী মাহফিলের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে বলে জানান হুজুরের তৃতীয় সাহেবজাদা।