ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার মধুগ্রাম সীমান্তে অবস্থিত বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত হাটটি ২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারি উদ্বোধন করা হয়েছিল।

ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার মধুগ্রাম সীমান্তে অবস্থিত বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত হাটটি ২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারি উদ্বোধন করা হয়েছিল। হাটটি প্রতি মঙ্গলবার পরিচালিত হয়ে আসছিল এবং এতে বিভিন্ন ধরনের ভারতীয় ও বাংলাদেশি পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করা হতো। হাটটি চালু হওয়ার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্প্রীতির সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করছিল। বাংলাদেশের মধুগ্রাম ও ভারতের ত্রিপুরার শ্রীনগর সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় এই হাটে বিশেষত ভারতীয় পণ্যের চাহিদা ছিল বেশি।তবে সাম্প্রতিক কিছু নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনার সমস্যার কারণে সীমান্ত হাটটি গত ২২ অক্টোবর থেকে বন্ধ রয়েছে। ২৭ আগস্ট সীমান্ত হাট ব্যবস্থাপনা কমিটির এক সভায় পুলিশ, বিজিবি, এবং কাস্টমস কর্তৃপক্ষ হাট পরিচালনার বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন।নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনার জটিলতা:
এই হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে জানা গেছে। বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্থা থেকে উঠে এসেছে যে সীমান্ত হাটটি পরিচালনার সময় জনবল সংকটের কারণে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। সীমান্তে কাঁটাতারের ফাঁক দিয়ে অবৈধভাবে বিভিন্ন বাক্স বাংলাদেশে ঢুকছে, যার মধ্যে কী রয়েছে তা নিশ্চিত করতে পারছে না সীমান্তরক্ষী বাহিনী। এই অবৈধ প্রবেশ রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।বৈধ-বেআইনি বাণিজ্য:হাটটি চালু থাকার সময় বৈধ উপায়ে পণ্য কেনাবেচার পাশাপাশি অবৈধভাবে কিছু পণ্য সীমান্তের কাঁটাতারের ফাঁক দিয়ে প্রবেশ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি জানায়, হাটের মাধ্যমে বৈধ বাণিজ্যের চেয়ে অবৈধ পণ্য প্রবেশের পরিমাণ অনেক বেশি।সমাধানের জন্য প্রস্তাবিত পদক্ষেপএই সমস্যাগুলোর সমাধানের জন্য বিজিবি হাট সংলগ্ন সীমান্তে কাঁটাতার উঁচু করার এবং প্রয়োজনে পরিখা খননের প্রস্তাব দিয়েছে। এছাড়াও জনবল বাড়িয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও দৃঢ় করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।প্রশাসনিক পদক্ষেপফেনীর জেলা প্রশাসক  শাহীনা আক্তার এই সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ৩ নভেম্বর একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। নির্দেশনা পেলে পরবর্তী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। এছাড়া ভারতের ত্রিপুরার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছেও বিষয়টি জানিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।সীমান্ত হাটের সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব:সীমান্ত হাটটি চালুর পর থেকে দুই দেশের সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষের জন্য আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছিল। এটি ভারতের সাথে বাংলাদেশের পণ্য বিনিময়ের একটি সহজ মাধ্যম হিসেবে কাজ করছিল। তবে হাটে ভারতীয় পণ্যের চাহিদা বেশি থাকায়, বাংলাদেশি পণ্যের বাজার অপেক্ষাকৃত কম ক্রেতা পেত।
সীমান্ত হাট সাময়িকভাবে বন্ধ থাকার ফলে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে, বিশেষ করে সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত জনগণের জন্য এটি একটি বিশেষ বাণিজ্য কেন্দ্র ছিল।