পর্যটন নগরী কুয়াকাটায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শত বছরের পুরনো রাস পূজা ও মেলা ঘিরে ইতোমধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কুয়াকাটা শ্রী শ্রী রাধা কৃষ্ণ মন্দির ও তীর্থযাত্রী সেবাশ্রম কর্তৃপক্ষ। মেলা ঘিরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের কয়েক শতাধিক দোকানীরা নানা পন্য সামগ্রী সাজিয়ে বসেছে। রাস পূজা ও মেলা ঘিরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে নিরাপত্তায় মাঠ পর্যায়ে সরব রয়েছে।এদিকে উৎসবকে ঘিরে কুয়াকাটা আবাসিক হোটেল রিসোর্টে আকারভেদে ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ ছাড়ের ঘোষনা দিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম এ মোতালেব শরীফ।সরেজমিন রং তুলির নিপুন ছোয়ায় সাজিয়ে তোলা হচ্ছে ১৮ জোড়া যুগল প্রতিমা। পঞ্জিকা মতে আগামী শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) থেকে শুরু হবে পূর্ণিমা। শনিবার ভোররাতে শেষ হবে। তাই পূর্ণিমার এ তিথিতে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পাপ মোচন ও পূণ্য লাভের আশায় পূর্ণিমাতিথীতে নারী-পুরুষরা কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে পূণ্যস্নান করবে বলে জানান রাসপূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার নিহার রঞ্জন মন্ডল।তিনি বলেন, এ বছরও পূর্ণিমা তিথিতে হাজারো তীর্থ যাত্রীদের পদভারে মুখরিত হবে সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর ) সন্ধ্যায় পূজার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর রাতভর চলবে নাম কীর্তন, ভাগবৎ পাঠ ও আরতি। শ্রীকৃষ্ণের লীলা কীর্তনে অংশগ্রহণ করবেন ভারতের কবিতা ঘোষ। থাকছে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন। শনিবার (১৬ নভেম্বর ) সূর্য উদয়ের আগেই রাস পূর্ণিমা লগ্ন অনুযায়ী সাগর সৈকত কুয়াকাটায় পাপ মোচনের লাভের আশায় নামবে ভক্তদের ঢল। একই দিন সৈকতে অনেকেই আবার ভিন্ন ভিন্ন মান্নত করা পূজা দিবেন পুরোহিত এনে। নানা ধর্ম-বর্ণের মানুষও মিলিত হবে রাস পূজা, সমুদ্র স্নানানুষ্ঠানে।হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এমএ মোতালেব শরীফ জানান, দুদিনব্যাপী রাস মেলা উপলক্ষে কুয়াকাটায় আগত পর্যটকরা হোটেল মোটেল ও রিসোর্টে রাতযাপন করলে ৩০ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় পাবেন।কুয়াকাটা টুরিস্ট পুলিশ জোনের পুলিশ সুপার একে আজাদ জানান, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের রাস পূজা ও পুণ্যস্নানে আগত পর্যটক ও পুণ্যার্থীদের জন্য নিরাপত্তা জোরদার করেছি। সাদা পোষাকে সার্বক্ষণিক টুরিস্ট পুলিশের কঠোর নজরদারি থাকবে।কুয়াকাটা সৈকত ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম জানান, রাস পূর্ণিমা পূজা ও পুণ্যস্নান উপলক্ষে ধারণা করছি তিন লক্ষাধিক লোকের সমাগম হবে কুয়াকাটা সৈকতে। মেলা ও পূণ্যস্নানে আগতদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা, উপজেলা ও পৌর প্রশাসনের সমন্বয়ে একটি নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও সার্বক্ষণিক মহিপুর থানা পুলিশ, সেনাবাহিনী, টুরিস্ট পুলিশ এবং গ্রাম পুলিশসহ পাঁচ শতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তা দানে মাঠে থাকবে।