গত ৫ই সেপ্টেম্বর বরিশালের সাগরদী এলাকায় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) আঞ্চলিক কার্যালয়ের ধানের জাত গবেষণা প্লটে স্থাপিত হয়েছে দেশের প্রথম গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন নিরূপণ ল্যাব। আগে ব্রি-র বিজ্ঞানীরা ম্যানুয়ালি সাত দিন পর পর ধানক্ষেত থেকে কতটুকু গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন হচ্ছে সেই তথ্য সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করতেন। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ল্যাবটি ২৪ ঘণ্টা স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমনের তথ্য সংগ্রহ করবে এবং সেসব তথ্য বিশ্লেষণ করবে। নিউইয়র্কের আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা ব্লুমবার্গের ২০২১ সালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের বিভিন্ন উৎস থেকে রহস্যময় মিথেন গ্যাসের বিশাল কুণ্ডলী বায়ুমণ্ডলে নির্গত হচ্ছে। আরো দাবি করা হয়, বাংলাদেশ বিশ্বের ১২তম বৃহত্তম মিথেন গ্যাসের উৎসে পরিণত হয়েছে এবং প্রতিবেদনে এই গ্যাস নিঃসরণের উৎস হিসেবে তিনটি ক্ষেত্রের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। যাদের মধ্যে অন্যতম ছিল ধানক্ষেত। তবে, দেশীয় কৃষিবিজ্ঞানীরা ওই প্রতিবেদনকে উদ্দেশ্যমূলক ও অন্যায্য বলে অভিহিত করেছিলেন।
২০১২ সাল থেকে এ বিষয়ে গবেষণা করছেন ব্রি-র গবেষকরা। গাজীপুরে ব্রি-র প্রধান কার্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এস এম মফিজুল ইসলাম ব্লুমবার্গের সেই প্রতিবেদনের সাথে দ্বিমত পোষণ করেন। তিনি জানান, বাংলাদেশ একটি ছোট দেশ। অন্যদিকে চীন, ভিয়েতনাম আয়তনে বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বড় এবং তাদের কৃষিক্ষেত্রও বাংলাদেশের তুলনায় বিশাল। কাজেই বাংলাদেশের ধান ক্ষেত গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের জন্য অন্যতম হতে পারে না।
এতদিন তাদের কাছে এ–সংক্রান্ত ডেটা সংগ্রহ ও অ্যানালাইসিস করার আধুনিক কোনো প্রযুক্তি ছিল না। তাই তারা ব্লুমবার্গের ওই প্রতিবেদনকে চ্যালেঞ্জ করতে পারেনি। এখন অত্যাধুনিক এই ল্যাব স্থাপনের ফলে গবেষকরা সহজেই সারা বছরের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে পারবে এবং তার পর্যালোচনা করতে পারবে। এতে গবেষণার কাজ আরো সহজ হবে।