ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশ নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন এটা আমাদের অনেকটা বিব্রত করে। আমাদের দেশে যারা অন্যান্য ধর্মালম্বী আছেন, আমরা মনে করি তাদের রাজনৈতিক অধিকার, ধর্মীয় অধিকার, সামাজিক অধিকার, সাংস্কৃতিক অধিকার স্বীকৃত বলে মন্তব্য করেছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আফম খালিদ হোসেন।
রবিবার ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ড্যাফোডিল ইসলামিক সেন্টারের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী ‘সুন্নাহ কনফারেন্স বাংলাদেশ ২০২৪’ এর উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।এসময় ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে যে অভিযোগগুলো আমরা শুনছি, আমরা এই কথাগুলোর সাথে একমত না। ভোট পাওয়ার জন্য, ভোটের ময়দানে অনেকে অনেক কথা বলে। আমরা এই কথা বিশ্বাস করি এবং আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ এদেশে যারা অন্যান্য ধর্মের অনুসারী আছেন, তারা নিরাপদে আছেন। তাদের ধর্ম, তাদের ব্যবসা, তাদের রাজনৈতিক কথা বলার অধিকার আমরা নিশ্চিত করেছি, ইট ইজ আওয়ার কমিটমেন্ট। কোন উপাসনালয় যদি কেউ অপবিত্র করতে চায়, আমরা মনে করি তারা কোন ধর্মের লোক নয়। তাদের পরিচয় তারা ক্রিমিনাল। সেই ক্রিমিনাল কে আইনের আওতায় আনার দায়িত্ব সরকারের।'আমরাতো সব সময় কথা বলে আসছি, এদেশের যারা নাগরিক নানা ধর্মালম্বী আছেন প্রত্যেকের অধিকার আছে। তাদের সিটিজেন রাইটস আছে, রিলিজিয়াস রাইটস আছে, এটা সাংবিধানিক রাইট। তাদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের। সাম্প্রতিক সময়ে তাদের যে পূজা পার্বণসহ যে উৎসবগুলো গেল, আমরা তাদেরকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিয়েছি। উনাদের কিছু দাবি দাওয়া আছে যেগুলো সরকারের বিবেচনায় রয়েছে। আমরা মনে করি, একটু সহনশীলতা না থাকলে আমরা একটা সুন্দর বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে পারবো না। এজন্য আমাদের বিভেদ কমিয়ে পারস্পরিক সম্প্রীতির আবহ যদি আমরা তৈরি করতে পারি তাহলে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবো।ফ্রি হজ্বে যাওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, ফ্রি যারা হজ্বে যেতে চায়, সরকার খরচ বহন করবে ওনারা ফ্রী যাবেন এ প্র্যাকটিসটাকে আমরা বন্ধ করতে চাচ্ছি সরকারি অর্থে আগে হজ্বে যাওয়ার একটা প্রবণতা ছিল। টাকা দিত সরকার আর কিছু মানুষ ফ্রি হজ্বে যেত। তাদের ম্যানেজমেন্টের সাথে কোন সম্পৃক্ততা ছিল না। আমরা এদেরকে নিতে চাচ্ছি না। যে সকল কর্মকর্তা কর্মচারীরা হজ্ব ব্যবস্থাপনার সাথে সংযুক্ত তারা তো অবশ্যই যাবেন। কিছু অফিসার আছেন কিছু কর্মকর্তা আছেন তারা সরকারি টাকায় হজ করত। আমরা মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে, ক্যাবিনেট মিটিংয়ে এটাকে ডিসকারেজ করেছি যে আমরা এগুলোকে নেব না। সরকারি পর্যায়ে তো গত বছর আমরা চার হাজার হাজীকে নিয়েছি, এটা অব্যাহত থাকবে।এর আগে কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, 'আমাদের সারাজীবন প্রয়াস চালাতে হবে। সুন্নাহ যদি জীবিত থাকে বেদাত বিতাড়িত হয়ে যাবে। তৌহিদ যদি প্রতিষ্ঠা করতে পারি শিরিক বিতাড়িত হয়ে যাবে। আমাদের সমাজে সুন্নাতের নামে বেদাত চলছে। তৌহিদের নামে শিরিক চলছে। এটাকে ডিফ্রেনশিয়েট করে সত্যিকার সুন্নাহ মানুষের মাঝে, মানুষের জীবনধারায় আমাদের প্রবিষ্ট করতে হবে। সুন্নাহকে বাদ দিয়ে আমাদের দেশে এমন কি বাইরেও কোরআন চর্চা হয়, আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু কোরআন চর্চা করতে গিয়ে অনেক হাদিস এবং সুন্নাতকে অস্বীকার করা হয়। এটা আরেক ধরনের গোমরাই। কারন কোরআনুল কারীমের বেশির ভাগ ব্যাখ্যা হলো সুন্নতে রাসূল, হাদীসে রাসূল নিয়ে।'কনফারেন্স অর্গানাইজিং কমিটির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ মনজুরে এলাহী সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন, ফিলিস্তিনের ডেপুটি হেড অব মিশন জিয়াদ হামাদ, কুষ্টিয়া উসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামছুল আলম ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. এম লূৎফর রহমানসহ আরও অনেকে।