বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন -বাপা কক্সবাজার জেলা কমিটি কর্তৃক জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ইসিএ এলাকা দখলমুক্তকরণ ও নৌবাহিনীর অবৈধ জেটি উচ্ছেদ করার জন্য স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। রবিবার দুপুর একটায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বাপার পরিবেশ কর্মীরা উপস্থিত হয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করেন।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন -বাপা কক্সবাজার জেলা কমিটি কর্তৃক জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ইসিএ এলাকা দখলমুক্তকরণ ও নৌবাহিনীর অবৈধ জেটি উচ্ছেদ করার জন্য স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। রবিবার দুপুর একটায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বাপার পরিবেশ কর্মীরা উপস্থিত হয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করেন।

বরাবর
মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা 
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। 
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, ঢাকা। 

বিষয়-বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত দ্বিখন্ডিত করে নির্মিত ইনানী জেটি ভেঙে ফেলা এবং জেটি থেকে সেন্টমার্টিন রুটে জাহাজ চলাচল  বন্ধ করার আবেদন।
জনাব,
কক্সবাজারের আপামর জনসাধারণ ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা কক্সবাজার জেলা শাখার সকল নেতা কর্মীদের পক্ষে থেকে আপনার সালাম ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আপনি জানেন আমাদের ককসবাজার সমুদ্র সৈকত পৃথিবীর দীর্ঘতম অখন্ডিত সমুদ্র সৈকত। এটি প্রত্যেক বাংলাদেশীদের জন্য অনন্য গর্বের ঐতিহ্য। 
এই সৈকতকে দ্বিখন্ডিত করে  ২০২১ সালে একটি অপরিকল্পিত জেটি নির্মাণ করা হয়েছে। তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রধানমন্ত্রী মহড়া পরিদর্শন করবে এ মর্মে এটি নির্মাণ করা হয়েছিল। 
তবে জনমনে সন্দেহ রয়েছে কতিপয় নৌবাহিনীর কর্মকর্তার  ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে একজন ব্যক্তিকে তার ব্যক্তিগত বাবসা পরিচালনা করার জন্য যেখানে অত্যন্ত চতুরতার সাথে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ব্যবহার করা হয়েছে। 
কোন ধরনের বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা ছাড়া  দেশের প্রচলিত আইন ও ইসিএ আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করে  দেশের সাথে গাদ্দারী দেখিয়ে এটি নির্মাণ করা হয়েছে বলে আমরা মনে করি। যার ফলশ্রুতিতে ককসবাজারবাসীর পক্ষে মহামান্য হাইকোর্টে একটি রিট মামলা হয় (নং১০৪৩৭/২২) মহামান্য হাইকোর্ট সন্তুষ্ট হয়ে কেন এই জেটি অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হবেনা মর্মে রুল নিশি জারী করেন। যা এখনো পেন্ডিং আছে। উল্লেখ্য তখনও আমরা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর নিকট স্মারক লিপি দিয়েছিলাম কিন্তু অজ্ঞাত কারণে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
কিন্তু এখন  মহামান্য হাইকোর্টে মামলা পেন্ডিং থাকাবস্থায় কর্ণফুলি শিপিং নামের একটি জাহাজ কোম্পানি উক্ত জেটি দিয়ে সেন্টমার্টিন রুটে বানিজ্যিকভাবে জাহাজ চলাচল করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। যা স্পষ্টতই মহামান্য হাইকোর্টের প্রতি তথা আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর সামিল বলে আমরা মনে করি। এমতাবস্থায় এই অবৈধ কার্য্যক্রম বন্ধ করা অত্যন্ত জরুরি। এবং এই অবৈধ কর্মকান্ডের নেপথ্য কুশিলব এবং অবৈধ সুবিধাভোগীদের বিরুদ্ধে ডিজিএফআই/ এনএসআই দিয়ে তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে জাতীয় তথা বিশ্ব ঐতিহ্য ককসবাজার সমুদ্র সৈকতকে হুমকির হাত থেকে বাঁচানোর বিনীত অনুরোধ করছি।

মাননীয় উপদেষ্টা,
 এটি পুরোপুরি কক্সবাজারস্থ ইনানী সমুদ্র সৈকতের মাঝেখানে নির্মাণ করা হয়েছে।  যার মাধ্যমে কক্সবাজার সমুদ্রকে দ্বিখণ্ডিত করে ফেলা হয়েছে। এখানে লাল কাঁকড়ার বিচরণ, বিলুপ্ত প্রজাতি কচ্ছপের ডিম পাড়ার জায়গা, এবং  ডলফিন ও সাদা ডলফিনের বিচরণ ক্ষেত্র।
তাই এ স্থান থেকে সেন্টমার্টিন গামী জাহাজ ছাড়লে জাহাজের প্রফেলারের আঘাতে অনেক ডলফিন মারা যাবে, তাছাড়া জেটি কারণে সমুদ্রের ঢেউ চলাচলে বাঁধার সৃষ্টি হচ্ছে এতে করে বালিয়াড়িতে ও মেরিন ড্রাইভ রোডে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হবে, যা ইতিমধ্যে হচ্ছে। তাই আমাদের সুস্পষ্ট দাবি এই জেটি ভেঙে ফেলা হউক। 
বর্তমানে এ জেটি ঝুঁকিপূর্ণ ও পর্যটক পারাপারের জন্য নিরাপদ নয়। যেখানে একটি বার্জের ধাক্কায় এটি ভেঙে যায়, তাহলে কর্ণফুলী জাহাজের ধাক্কা লেগে মারাত্মক দূর্ঘটনার শিকারও হতে পারে পর্যটকরা। ভবিষ্যতে কোন ধরনের অঘটন ঘটলে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে।
তাছাড়া এ জেটি নিয়ে সারা বাংলাদেশের পরিবেশবাদী নেতৃবৃন্দের সাথে নৌবাহিনীর একটা বৈরী মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে  এবং দেশে বিদেশে এ জেটি নিয়ে আমাদের নৌবাহিনীর সুনাম নষ্ট হচ্ছে।  অথচ জেটি নৌবাহিনীর কোন কাজেই আসছে না। তাই এটি ভেঙে ফেললে আমাদের নৌবাহিনীর কোন ধরনের ক্ষতি হবে না। 
অতএব মহোদয়ের কাছে আমাদের আকুল আবেদন, অনতিবিলম্বে জেটি ভেঙে ফেলা নির্দেশ প্রদান ও জাহাজ চলাচলের অনুমোদন বাতিলের পক্ষে আপনার বিশেষ আদেশ হউক।
এই সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা সভাপতি এইচ এম এরশাদ, সাধারণ সম্পাদক করিম উল্লাহ কলিম, সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক সম্পাদক এম জসিম উদ্দিন, কল্লোল দে চৌধুরী, মংথেহ্লা রাখাইন, দোলন ধর, শহর সভাপতি ইরফান উল হাসান, সদর সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম শামস্, আমিন উল্লাহ, এম কামরুল হাসান, শহিদুল ইসলাম সাহেদ, এডঃ রুবেল, নুরু হোসাইন মোহাইমুন উল্লাহ রানিম