কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌরসভার ভৈরবপুর উত্তরপাড়ায় (স্টেডিয়াম পাড়া) পৌর বিল্ডিং কোড অমান্য করে অবৈধভাবে ইমারত (ভবন) নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে এক ডাক্তারের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ইমারত বিধিমালা ১৯৯৬ এর পরিপহ্নী উল্লেখ্য করে গত ৪জুলাই, ২০২৩খ্রি. ভৈরব পৌর মেয়র স্বাক্ষরিত একটি নোটিশ প্রদান করা হয় অভিযুক্ত ভবন মালিক ডাক্তার মো: ফরহাদ আহমেদকে। উক্ত নোটিশে, অবৈধভাবে ইমারত নির্মাণ করায় উক্ত নির্মাণ কাজটি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয় এবং তিন কার্যদিবসের মধ্যে অভিযুক্ত ভবন মালিক স্ব-শরীরে পৌরসভায় উপস্থিত হয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ প্রদান করা হয়। অন্যতায় ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ১৯৯৬এর পৌরসভার আইন ২০০৯এর ৩৬ ও ৩৭নং ধারা অনুযায়ী অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা বলা হয়। যাহার স্মারক: ৪৬.৩০.৪৮১১.০৫০.০১.০৩২.১৭-৩৪৩/১ (৬)। আইন অনুযায়ী ভূমির সীমানা থেকে ৫ফুট জায়গা খালি রেখে স্থাপনা নির্মাণের শর্ত থাকলেও তা তারা মানেননি। বরং বিল্ডিংয়ে উত্তর সাইটে দ্বিতীয় তলা থেকে অন্তত আড়াই ফুট বাড়ানো হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ডাক্তার ফরহাদ আহামেদের নির্মাণাধীন ভবনটির সামনের দিকটি সড়ক ও জনপদ বিভাগের কয়েক ফুট জায়গা দখল করে ভবন নির্মাণ করছেন। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে পৌরসভাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন পাশ্ববর্তী জায়গার মালিক মেসার্স মালা ট্রেডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: জামাল উদ্দীন বাবু। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমি ৬মাস আগে জায়গাটি ক্রয় করি। আমার পাশে হলো ডা: ইসরাত জাহান হসপিটাল করার জন্য বিল্ডিং নির্মাণ করতেছে। বিল্ডিংয়ের পিলারের ব্যাজমেন্ট নিচ দিয়ে আমার জায়গায় ঢুকে পড়েছে। পৌর বিল্ডিং কোড অমান্য করে উপর দিয়েও আড়াই ফুট বাড়িয়ে ফেলে। ডা: ফরহাদের সাথে সরাসরি ও ফোনে বেশ কয়েকবার কথা হয়েছে আইন মেনে যেন বিল্ডিং তৈরি করেন, পরবর্তীতে যেন কোন ঝামেলা না হয়। কিন্তু তিনি কোন কিছুই মানেননি। আমাকে না জানিয়ে আমার সীমানা পিলারও এ দিক সেদিক করেছে। এছাড়াও সামনে দিয়ে সড়ক ও জনপদের কয়েক ফুট জায়গা দখল করে নিয়ে বিল্ডিং করেছে বলে মনে হচ্ছে। আমি এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে পৌর সভাকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। সঠিক সমাধনের জন্য পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানান ভুক্তভোগী।
অভিযুক্ত ভবন মালিক ডা: মো: ফরহাদ আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে পৌর সভায় অভিযোগ করেছিলো। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মেয়র মহোদয় একজন ইঞ্জিনিয়ারকে পাঠিয়েছেন বিল্ডিংটি দেখার জন্য অভিযোগকারীর সীমানার কোন অংশে গেছে কিনা। ইঞ্জিনিয়ার বিল্ডিং দেখে মেয়র মহোদয় বরাবর রিপোর্টও দিয়েছে কোন অসুবিধা নাই, যতেষ্ট পরিমান ভিতরে রয়েছে। তারপর পৌরসভা থেকে বলছে যেহেতু সমস্যা নাই আপনারা কাজ করেন। দ্বিতীয় তলায় গিয়ে সামান্য বাড়িয়েছি, বাড়ানোর পরও আমার আরো দেড় ফুট জায়গা ফাঁকা আছে। তিনি বলেন, আমি আমার নিজের জায়গায় বিল্ডিং করতেছি। পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ার এসে দেখে গেছে। কিছুলোক আমাকে হয়রানি করার জন্য অহেতুক অভিযোগ ও অপপ্রচার করছেন। ভৈরব পৌরসভার মেয়র ইফতেখার হোসেন বেনু বলেন, এটা নিয়ে বিরাট একটি সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। ডা: ফরহাদ বলছে তার নিজের জায়গায় বিল্ডিং করছে, যারা অভিযোগ দিয়েছে তারা বলছে তাদের জায়গায় ব্যাজমেন্ট পিলার ঢুকে গেছে। আগামী রবিবার আমি নিজে গিয়ে দেখে, তারপর একটি সুন্দর সমাধান করে দিবো।