অসাধু ব্যবসায়ীদের হীন কর্মকাণ্ড থেকে বাজারের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য ইসলাম মজুতদারি, মুনাফাখুরি ও প্রতারণা নিষিদ্ধ করেছে। অধিক মুনাফার প্রত্যাশায় পণ্য মজুত অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। তাই নিত্যপণ্য মজুত করা অত্যন্ত গর্হিত ও হারাম কাজ। কেননা, এর ফলে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হয়, যা স্পষ্ট জুলুম। এ প্রসঙ্গে মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি (সংকট তৈরি করে) খাদ্যশস্য গুদামজাত করে সে অপরাধী।’ (মুসলিম)

খাদ্য মজুত করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিকারীরা আল্লাহর আজাবের মুখোমুখি হবে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘কেউ যদি খাদ্যগুদামজাত করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে, আল্লাহ তাকে দুরারোগ্য ব্যাধি ও দারিদ্র্যের মাধ্যমে শাস্তি দেবেন।’ (ইবনে মাজাহ) তবে গুদামজাত পণ্য যদি মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় বস্তু না হয় কিংবা এসব পণ্য চাহিদার অতিরিক্ত হয় বা গুদামজাতকারী বর্ধিত মুনাফা অর্জনের অভিলাষী না হয়, তাহলে পণ্য মজুত রাখা অবৈধ নয়। অন্যদিকে মজুতদারি না করে সৎ নিয়তে ব্যবসা করা ইবাদত। এমন ব্যক্তির উপার্জন আল্লাহ তাআলা বরকতময় করে দেন। তাকে অপ্রত্যাশিত রিজিক দেন। সৎ ও বিশ্বস্ত ব্যবসায়ীরা পরকালে নবীগণ, সিদ্দিকগণ ও শহীদদের সঙ্গে থাকবেন। মহানবী (সা.) বলেন, ‘খাঁটি ব্যবসায়ী রিজিকপ্রাপ্ত হয় আর মজুতদার অভিশপ্ত হয়।’ (ইবনে মাজাহ)

মানুষকে জিম্মি করে, তাদের দুরবস্থার সুযোগ নিয়ে কৃত্রিক সংকট তৈরি করে পণ্যের দাম বাড়ানো জুলুম। জুলুম সমাজের শান্তি ও স্থিতি বিনষ্ট করে, সুখ ও সমৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করে। তাই ইসলাম ইনসাফে উদ্বুদ্ধ করে এবং জুলুম করতে নিষেধ করে। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বর্ধিত মুনাফা অর্জনের চেষ্টা একটি সামাজিক অপরাধ। সামাজিকভাবেই এর প্রতিরোধ করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।