সারা দেশের প্রায় প্রতিটি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি পর্যন্ত, সব জায়গায় চলছে রমরমা কোচিং বাণিজ্য।

সারা দেশের প্রায় প্রতিটি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা থেকে শুরু করে  বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি  পর্যন্ত,  সব জায়গায় চলছে রমরমা কোচিং বাণিজ্য। হাতে কলমে ও  যত্ন সহকারে পড়ানোর কথা বলে- সারা দেশে হাজার হাজার  কোচিং  পরিচালক ও পেশাদার শিক্ষকরা হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ- লাখ টাকা। বিশেষ করে ময়মনসিংহের প্রায় পুরো শহর জুড়ে  চলছে রমরমা কোচিং বাণিজ্য। এর কারণ হিসেবে অনেকের ধারণা,দেশের ক্রান্তিলগ্নে বেকারত্বের হার বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য স্নাতক- স্নাতকোত্তর হোল্ডারধারীরা ময়মনসিংহের দিকে ফিরে আসা। তাছাড়া  বিভিন্ন বিভাগীয় শহর ছেড়ে ময়মনসিংহের দিকে ফিরে আসার কারণ জিজ্ঞেস করলে- তাদের অনেকেই বলেন, পড়াশোনা শেষ হয়েছে অনেক আগে কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন চাকুরির খোঁজ মিলেনি। এমনকি ময়মনসিংহে  অন্যান্য বিভাগীয় শহর থেকে  অল্প টাকায় থাকা যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করা আরেক যুবক বলেন, আমরা দেশের জন্য এতো আন্দোলন করার পরও গত ৪ মাস ধরে কোন জবের পরীক্ষা দিতে পারছি না।  দেশের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য কোন সার্কুলার হচ্ছে না- যা আমদের মতো চাকুরী প্রত্যাশীদের জন্য হতাশর কারণ। সবকিছু চিন্তা করে ময়মনসিংহে এসে কোচিং বাণিজ্যে যুক্ত হয়েছি। এতো গেল বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের কোচিং জগতের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার  কারণ। এ বিষয়ে একাডেমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় এডমিশন কোচিং পরিচালকদের নিকট  জানতে চাইলে  - নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, দেখেন- আমরা অল্প টাকার বিনিময়ে  কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ সার্ভিস দিয়ে থাকি। আরেকজন বলেন,  স্কুল - কলেজে শিক্ষার্থীরা  তাদের প্রতিষ্ঠানে ভাল সার্ভিস পায়নি বলে তারা আরও ভাল রেজাল্টের প্রত্যাশায় কোচিংয়ে ভর্তি হয়। কোচিং পরিচালকদের এই অভিযোগ জানার জন্য ময়মনসিংহের এক কলেজ শিক্ষকের নিকট প্রশ্ন করলে, তিনি বলেন- আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদেরকে সর্বোচ্চ সার্ভিস দেয় বলে ই প্রতি বছর ই সারা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ রেজাল্ট আমাদের প্রতিষ্ঠান করে থাকে। বেশিরভাগ শিক্ষকদের কোচিংয়ের বিষয়ে অভিযোগ,  বর্তমানে ময়মনসিংহ শহরের অলিতে - গলিতে কোচিং আর কোচিং যা আমাদের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থাকে হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে, কোচিং পড়ানোর জন্য শিক্ষার্থী নিয়ে আসা এক অভিভাবককে এই বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে- উনি বলেন ভিন্ন কথা। উনার ভাষ্যমতে, স্কুল -কলেজের স্যারেরাও কোচিংয়ের সাথে জড়িত থাকে। সেজন্য  আমরা বাধ্য হয়ে ই অনেক টাকা - পয়সা দিয়ে এইসব কোচিংয়ে বাচ্চাদের নিয়ে আসি। এক পথচারী রিকশাচালকও একই অভিযোগের স্বরে বলেন, স্যার আমরা গরীব মানুষ।  তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ই আজকে কোচিং বাণিজ্যে পরিণত হয়েছে। শিক্ষকরা কোচিংয়ের সাথে সম্পৃক্ত।
সরেজমিনের এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে,ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সফল হওয়া যায়নি।  তবে কি শিক্ষা নগরী  ময়মনসিংহ- কোচিং বাণিজ্যের আড়ালেই ঢাকা পড়ে  যাবে