ঐতিহ্য বাহি সিরাজগঞ্জের কাটাখালি খাল সংস্কার ও সংরক্ষণের দাবিতে জাহান আরা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র -ছাত্রী শিক্ষক শিক্ষিকাদের উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ঐতিহ্য বাহি সিরাজগঞ্জের কাটাখালি খাল সংস্কার ও সংরক্ষণের দাবিতে  জাহান আরা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র -ছাত্রী  শিক্ষক শিক্ষিকাদের উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।আজ ( ১১ নভেম্বর) সোমবার  সকাল ১১ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত  পৌর শহরের কাটাখালি খাল সংস্কারের দাবিতে জাহান আরা উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন কাটাখালির পারে দাড়িয়ে মানব বন্ধন আনুষ্ঠিত হয়েছে। 
জাহান আরা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক,কর্মকর্তা - কর্মচারী ও শিক্ষার্থীবৃন্দের  আয়োজনে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ছানোয়ার হোসেন সরকারের সভাপতিত্বে ও বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ জহুরুল ইসলামের সঞ্চালনায় এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।মানববন্ধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু।অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সাইদুর রহমান বাচ্চু তার বক্তব্যে বলেন, আজকে আমরা শহরের ঐতিহ্য বাহি কাটাখালী সংস্কারের দাবি নিয়ে মানববন্ধনের দাঁড়িয়েছি।একসময় সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ঐতিহ্য বাহি এই খাটাখালি দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন।নদী বন্দর এই সিরাজগঞ্জে একসময় খরস্রোতা এই কাটাখালি খাল দিয়ে মালামাল বোঝাই বিদেশি ষ্টিমার,পালতুলে বড়বড় নৌকা বোঝাই করে মালামাল পরিবহন করতো এই কাটাখালি নদী দিয়ে ।কালের বিবর্তনে সঠিক পরিচর্যার অভাবে সেই ঐতিহ্য বাহি খালটি আজ সেই সৌন্দর্য মন্ডিত চেহারা হারাতে বসেছে।
স্থানীয় বড়বাজার ও আশপাশের বসতবাড়ির বর্জ,ময়লা আবর্জনাএই খালে ফেলে এর আসল সৌন্দর্য বিনষ্ট করেএকদিকে যেমন পরিবেশ বিপর্যয় ঘটিয়েছে তেমনি এই খালটি আজ মরাখালে পরিনত হয়েছে।আজ আমরা সেই কাটাখালি খালটি   সংস্কার ও পুনঃখনন এবং  সংরক্ষণের জোর দাবি জানাচ্ছি বর্তমানে এই মরা খালে জন্মনেয়া মশার কামরে শিক্ষার্থীসহ জনসাধারণ ডেঙ্গুসহ নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়াও খালের আবদ্ধ পঁচা দুর্গন্ধযুক্ত পানির গন্ধে বিদ্যালয়ের শিক্ষক/শিক্ষিকাসহ কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের শ্রেণি কক্ষে পাঠদানে নানাবিধ সমস্যা হয়। শুধু শিক্ষার্থী নয়, সিরাজগঞ্জের অনেক মানুষ এই নোংরা কাটাখালীর জন্য ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।তাই আমরা প্রশাসন ও পৌর প্রশাসকের কাছে আবেদন এই জাহান আরা স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় জনসাধারণের মুখের দিকে তাকিয়ে এই কাটা খালী পুনঃসংস্কার করার উদ্যোগ গ্রহনের জোরদাবী জানাচ্ছি।  সিরাজগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ইলিয়ট ব্রিজটি এই কাটাখালীর ওপরে হওয়ায় এর সৌন্দর্য ধরে রাখা খুবই প্রয়োজন। পৌর প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, পরিবেশ বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে পরিবেশ ভারসাম্য বজায় রাখতে কাটাখালি নদী সংলগ্ন বড়বাজার সহ আশপাশের এলাকায় ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য আলাদা আলাদা পাত্র রাখার সুব্যাবস্থা করার জোরদাবী জানান। এসময়ে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র  আন্দোলন সিরাজগঞ্জের মুনতাসির রহমান মেহেদী,সজিব সরকার, নবম শ্রেণীর ছাত্রী খুরশিদ জাহান প্রভা, অধোরা সরকার,আরো উপস্থিত ছিলেন জাহান আরা উচ্চ বিদ্যালয়  সিনিয়র শিক্ষক টি এম আসলাম উদ্দিন, সহকারী শিক্ষক সঞ্জয় কুমার গৌর, মাওলানা ভাসানী ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্খ মোঃ  সিরাজ উদ্দিন,, সদর থানা বিএনপি সহ-সভাপতি শরীফ সেখ, সহ- সভাপতি শহর বিএনপি ছানা মাস্টার,  ১২ নং ওয়ার্ড বিএনপি সাধারণ সম্পাদক ছানোয়ার হোসেন ছানা মাস্টার, জেলা ছাত্র দলের সহ-সভাপতি  রহিত ইসলাম রাজু প্রমূখ। উল্লেখ্যঃ দীর্ঘদিন খালটি সংস্কারের অভাবে পরিবেশ দূশনের কেন্দ্র বিন্দুতে পরিনত হচ্ছে । খালের কারণে বৃষ্টি বাদল যতই প্রবল হোক, অতীতে শহরে কোনো জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতো না।কাটাখালী এক সময় স্টিমার কোম্পানি দেখভাল করতো। ঐতিহ্য বাহি এই সিরাজগঞ্জ শহরের বুকচিরে বয়ে চলা কাটাখালির উপর বৃটিশ আমলে নির্মিত ইলিয়ট ব্রীজ সংলগ্ন স্থানে ছিল লঞ্চঘাট।এই কাটাখালি নদীটি ব্যস্ত নৌপথ হিসেবে ব্যবহার করা হতো।  ১৯৭৩-৭৪ সাল পর্যন্ত খালটি নদী দিয়ে বিদেশ থেকে পণ্য মালামাল বোঝাই বড়বড় লঞ্চ, মালবাহী বড়বড় নৌকা এই নদী দিয়ে সিরাজগঞ্জ নৌ বন্দর দিয়ে যাতায়াত করতো।স্বাধীনতার পরে লঞ্চগুলো অচল হয়ে যায়। আশির দশক থেকে লঞ্চ,স্টিমার,  নৌকা চলাচল সম্পূর্র্ণ বন্ধই হয়েযায়। ময়লা আবর্জনায় ভরাএই কাটাখালি সংরক্ষণ ও পরিস্কার রাখলে খালটি তার হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাবে বলে জানান।