জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিবেশ বিপর্যয় এবং প্রাণ-প্রকৃতি, জীবন-জীবীকা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিবেশ বিপর্যয় এবং প্রাণ-প্রকৃতি, জীবন-জীবীকা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ভবিষ্যত এর কথা চিন্তা করে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে মনোযোগী হতে হবে। জলবায়ু ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে হবে। ঋণ নয়, আমরা ক্ষতিপূরণ চাই। জলবায়ু উষ্ণতা থেকে বাঁচতে চাই।গতকাল ১৫ নভেম্বর (শুক্রবার) সকাল ১০ টায় হবিগঞ্জে জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে বৈশ্বিক প্রতিবাদের অংশ হিসেবে বাই সাইকেল শোভাযাত্রার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তারা কথা বলেন।ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার ও প্লানেটিয়ার্স ক্লাব হবিগঞ্জ এর আয়োজনে এই সাইকেল শুভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।বাডস কেজি এন্ড হাই স্কুল প্রাঙ্গনে সাইকেল শুভাযাত্রা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ সংগঠক বৃন্দাবন সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো: ইকরামুল ওয়াদুদ। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর মোহাম্মদ জহিরুল হক। সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এডভোকেট মনসুর উদ্দিন আহমেদ ইকবাল, বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী মমিন, কবি তাহমিনা বেগম গিনি, পরিবেশ অধিদপ্তর হবিগঞ্জের পরিদর্শক হরিপদ চন্দ্র দাস। মূল বক্তব্য রাখেন খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল।অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাডস কেজি এন্ড হাই স্কুলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন তপু, হবিগঞ্জ সাইক্লিং কমিউনিটির সভাপতি মোস্তাক আহমেদ, তারুণ্য সোসাইটির সভাপতি আবিদুর রহমান রাকিব, প্ল্যানেটিয়ার্স ক্লাব হবিগঞ্জের সমন্বয়কারী সজীব চন্দ্র গোপ, গাছ মামা হিসেবে খ্যাত মো: রায়হান, মুমিন ভূঁইয়া প্রমুখ।খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল বলেন, অতি সম্প্রতি হবিগঞ্জে হঠাৎ ঝড় শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি হয়েছে  ব্যাপকভাবে। আবহাওয়ার এই আচরণ আমাদের বুঝিয়ে দেয় জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কতটা বিপর্যয় নেমে এসেছে। অসময়ে ঝড়-বৃষ্টি- খরা -বন্যা ইত্যাদি কারণে মানুষসহ প্রাণীকুল এর খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে। এই পরিবর্তন কমাতে হবে। উন্নত বিশ্বের কর্মকাণ্ডের জন্য আমরা যেমন কুফল ভোগ করছি তেমনি আমাদের কল- কারখানার নির্গত কালো ধোঁয়াসহ পরিবেশ দূষণ বন্ধ করতে হবে। পাহাড়-টিলা , ভূমি ধ্বংস বন্ধ করে বেশি করে সবুজায়ন করতে হবে। সৌর শক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির সন্ধান করতে হবে।প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর মোহাম্মদ জহিরুল হক বলেন, চলতি বছর নভেম্বর পর্যন্ত গরমের দাপট, উপর্যুপরি বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ও ব্জ্রপাতের আশঙ্কাজনক বৃদ্ধিসহ দেশে ফসলহানি জনিত খাদ্যনিরাপত্তা হুমকিতে পড়া বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হলো জলবায়ু  স্থিতিস্থাপকতা অর্জনের জন্য সমর্থন অর্জন। বাংলাদেশের পরিস্থিতি এমন একপর্যায়ে পৌঁছেছে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে মুক্তি সহজে সম্ভব নয়। সারা বিশ্বে ঘটে যাওয়া হাজার বছরের পরিবেশবিধ্বংসী কর্মকাণ্ডের ফলস্বরূপ জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে মুক্তি পেতে বাংলাদেশের মতো শীর্ষ ক্ষতিগ্রস্ত দেশসমূহকে কত হাজার বছর অপেক্ষা করতে হবে, তা এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।এ মুহূর্তে যা প্রয়োজন তা হলো বাংলাদেশের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনে অভিযোজন, প্রশমন এবং ক্ষতি ও ক্ষয়ক্ষতি অর্থায়ন (লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড) আদায়ে সর্বোচ্চ দরকষাকষিতে গিয়ে তা নিশ্চিত করা। বাডস কেজি এন্ড হাই স্কুল প্রাঙ্গণে থেকে অর্ধশতাধিক সাইকেলিস্ট বিভিন্ন ব্যানার -ফেস্টুন নিয়ে শহর পদক্ষিণ করে পুরাতন খোয়াই নদীর স্টাফ কোয়াটার এলাকায় সাইকেল শুভযাত্রা সমাপ্ত করা হয়।