দিনটি ছিল ১ লা সেপ্টেম্বর ২০২২। নারায়ণগঞ্জের ২ নল রেল গেট এলাকায় চলছিল নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি আয়োজিত বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকির শোভাযাত্রা। এ সময় শোভাযাত্রায় বাধা দেয় পুলিশ বেধে যায় সংঘর্ষ। সংঘর্ষের একপর্যায় নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা সংস্থা ডিবি পুলিশের তৎকালীন উপপরিদর্শক এসআই মাহফুজুর রহমান কনক একটি চাইনিজ রাইফেল ধারা গুলি চালায় বিএনপি নেতা কর্মীদের উপরে। একটি গুলি গিয়ে আঘাত হানে যুবদল কর্মী শাওন প্রধানের বুকে। নেতাকর্মীরা বুঝে উঠার পূর্বেই মাটিতে লুটিয়ে পরে শাওন। বিএনপি নেতা এড.সাখাওয়াত হোসেন খান, শাওনের বড় ভাই মিলন সহ অন্যান্য নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় তাৎক্ষণিক হাসপাতালে নেওয়া হলেও বাচানো যায়নি শাওনকে। আওয়ামিলীগ সরকার ক্ষমতায় থাকায় শাওন হত্যার বিচার পায়নি তখন তার পরিবার, উল্টো তার পরিবারের উপর চাপ প্রয়োগ করে শাওনের বড় ভাই মিলনকে বাদী করে অজ্ঞাত নামে মামলা করা হয় ৫ হাজার বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে। অবশেষে ৫ আগস্ট জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে আওয়ামিলীগের পতনের পর গত ২১ অক্টোবর মিলন বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা দয়ের করেন। ওই মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, সেলিম ওসমান, নজরুল ইসলাম বাবু, গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক, সাবেক এসপি গোলাম মোস্তফা রাসেল, জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ, নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিচুর রহমান, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই মাহফুজুর রহমানসহ ৫২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় ১ নম্বর আসামি সাবেক এসপি গোলাম মোস্তফা রাসেল এবং ১৬ নম্বর আসামি করা হয় গুলি করা ডিবি পুলিশের এসআই মাহফুজুর রহমানকে।
উক্ত মামলায় ২ তারিক বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বর্তমান কর্মস্থল এপিবিএন থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে ৩ তারিখ শুক্রবার দুপুরে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন জানালে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাফিয়া শারমীন তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। সর্বশেষ ৬ তারিখ সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ কোর্টে তুলার পর বাদীপক্ষের আইনজীবী আবু আল ইউসুফ খান টিপু ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মাসুম ৫ দিনের রিমান্ড মনজুর করেন।
এর আগে আসামিকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এসময় শাওন হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচারের দাবীতে আদালতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী। রায়ের পর কারাগারে নেওয়ার সময় বিক্ষোভকারীদের রোষের মুখে পরে এসাআই কনক।