কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলার গোয়ালগ্রাম কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ব্যবহারিক পরীক্ষার নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বোর্ড নির্ধারিত ফি'র বাইরে এ টাকা আদায় করছে কলেজের দুই প্রভাষক, তারা হলেন, ভূগোলের প্রভাষক আনারুল ইসলাম ও আইসিটির প্রভাষক জান্নাতুল ফেরদৌস। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে টানা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
গোয়ালগ্রাম কলেজের ভূগোল পরীক্ষার্থীরা ২৯/০৯ ২০২৩ ইং তারিখে বামুন্দী কেন্দ্রে ব্যবহারিক পরীক্ষা দেন এই কেন্দ্রর সবাইকে ম্যানেজ করার জন্য প্রভাষক আনারুল ইসলাম প্রতিজন ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে ২০০-২৫০ করে অতিরিক্ত টাকা নিয়েছে। অন্যদিকে গোয়ালগ্রাম কলেজে আইসিটির ব্যবহারিক পরীক্ষা গত ৩০/০৯/২০২৩ ইং অনুষ্ঠিত হয়।
পরীক্ষার্থীদের ভাষ্যমতে,পরীক্ষা চলাকালীন তাদের কাছ থেকে ভূগোলের প্রভাষক আনারুল ইসলাম ও আইসিটির প্রভাষক জান্নাতুল ফেরদৌস আলাদা দুই সাবজেক্টের জন্য পর পর দুই দফায় টাকা নিয়েছে তাদের কাছ থেকে। অনেকে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন ঐ দুই প্রভাষক এমনকি ব্যবহারিক পরীক্ষায় কম নম্বর দেওয়া হতে পারে– এ আশঙ্কায় টাকা দিতে ছাত্র ছাত্রীদের বাধ্য করেছে তারা।
জানা গেছে, চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় গোয়ালগ্রাম কলেজ থেকে ১৬০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। প্রত্যেকের কাছ থেকে প্রতি বিষয়ের জন্য তারা ২০০-২৫০ করে টাকা নেওয়া নিয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে গোয়ালগ্রাম কলেজের একাধিক শিক্ষক বলেন, বোর্ড থেকে ব্যবহারিক পরীক্ষা নিতে বহিঃ পরীক্ষক (এক্সটার্নাল) আসেন। তাদের প্রতি বিষয়ে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা দিতে হয়। তাদের ভালো মানের খাবারও পরিবেশন করতে হয়। এসব কল্পকাহিনি শুনিয়ে, এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তারা ছাত্র ছাত্রীদের কাছ থেকে এসকল টাকা তুলে নিজেদের পকেট গরম করে।
এ বিষয়ে কলেজের, ভূগোল বিষয়ের প্রভাষক আনারুল ইসলাম বলেন আমরা টাকা নিয়েছি বিভিন্ন যায়গার লোকজনকে ম্যানেজ করতে হয় তাই। তাছাড়া একজন শিক্ষকের যা বেতন ভাতা তা দিয়ে সংসার চলে না তাই একটু এদিক সেদিন করা টা দোষের কিছু নয়। অন্যাদিকে আইসিটির প্রভাষক জান্নাতুল ফেরদৌস সঙ্গে কথা বললে, তিনি টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন আমার ভুল হয়েছে, যে টাকা ছাত্র ছাত্রীদের কাছ থেকে নিয়েছি প্রয়োজনে তা ফেরত দিয়ে দিব।
এবিষয়ে গোয়ালগ্রাম কলেজের প্রিন্সিপাল বলেন, ‘আমি স্পষ্ট ভাষায় কলেজের শিক্ষকদের জানিয়ে দিয়েছি, কোনো পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ব্যবহারিক পরীক্ষার নামে অতিরিক্ত ফি আদায় করলে এর দায়দায়িত্ব এসব শিক্ষককে বহন করতে হবে। এখন পর্যন্ত আমার কাছে অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে সবার টাকা ফেরত দেওয়া হবে।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সদ্দার আবু সালেহ বলেন, ‘এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ব্যবহারিক পরীক্ষা বাবদ টাকা আদায় করছে– এমন তথ্য আমার জানা নেই, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। জেলা শিক্ষা অফিসার আল মামুন তালুকদারের সাথে মুঠো একাধিকবার ফোন দিলে ফোন রিসিভ করেন নাই, ও সরাসরি অফিসে গিয়ে তাহাকে পাওয়া যায় নাই।