সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলায় অটোরিকশায় তুলে ভুল পথে নিয়ে এক কিশোরীকে (১৬) ধর্ষণের চেষ্টা হয়েছে। পরে মেয়েটি লাফ দিয়ে অটোরিকশা থেকে নেমে নিজেকে রক্ষা করে। আহত মেয়েটিকে জেলা সদর হাসাপাতলে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর ডান চোখ, কপাল, গাল, হাত থেঁতলে গেছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এই ঘটনা ঘটে।
সিএনজিসহ ঘটনায় জড়িত চালক ইমন খান (২৫), বাড়ি দিরাই উপজেলার জকিনগর এবং মিঠু মিয়া নামে ঘটনায় জড়িত আরেক যুবককে আটক করা হয়েছে। সুনামগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতাল সুত্রে জানা যায়, মেয়েটির মুখের ডান পাশ থেঁতলে আছে। ডান চোখের চারপাশ ফুলে বন্ধ হয়ে গেছে চোখ। মেয়েটির বরাত দিয়ে হাসপাতালের দায়িত্বরত এক সেবিকা বলেছেন, তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে।
হাসপাতালে মেয়েটি জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে কিছু কাপড়চোপড় কেনার জন্য তারা তিনজন দিরাই পৌর শহরে আসে। অন্য দুইজনের কেনাকাটা শেষ হওয়ায় তারা আগেই চলে যায়। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে মেয়েটি কেনাকাটা শেষে বাড়িতে যাওয়ার জন্য দিরাই বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে সেখানে দাঁড়ানো একটি অটোরিকশায় ওঠে। সেখানে তখন মানুষের ভিড় বেশি ছিল। এ সময় আরও দুই যুবক দুই দিকে ওঠে পড়ে। এরপরই চালক অটোরিকশা চালিয়ে দেয়। কিছুদূর যাওয়ার পরই মেয়েটি দেখতে পায় অটো সুনামগঞ্জ শহরের দিকে যাচ্ছে। তখনই অটোরিকশা থামাতে বলে চালককে। এই কথা বলার পরই পাশে থাকা দুইজন তাকে জাপটে মুখ চেপে ধরে। মুঠোফোন কেড়ে নেয়। তখন মেয়েটি তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু করে। এভাবে ধস্তাধস্তির এক পর্যায় অটোরিকশা দিরাই—মদনপুর সড়কের গণিগঞ্জ এলাকায় আসে। এই সময় জোরে ধাক্কা দিয়ে নিজেকে কোনো রকমে ছাড়িয়ে মেয়েটি চলন্ত অটোরিকশা থেকে লাফ দিয়ে রাস্তায় পড়ে যায়।
মেয়েটির বাবা জানান, রাত নয়টার দিকে তার এক আত্মীয় ঢাকা থেকে ফোন করে জানান, তার মেয়েকে দিরাই—মদনপুর সড়কের গণিগঞ্জ এলাকায় আহত অবস্থায় সড়কের পাশে পাওয়া গেছে। সেখানে একজনের বাড়িতে রাখা হয়েছে। এরপর তারা গিয়ে মেয়েকে সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। রাত ১১টায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মেয়েটি সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। বাবা কৃষক।
দিরাই থানার ওসি আবদুর রাজ্জাক বলেন, শুক্রবার বিকালে সুনামগঞ্জ শহর থেকে একজন শিক্ষক ফোনে আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। এর আগে কেউ জানায় নি। আমরা মেয়েটির দিরাই থানার বাড়িতে পুলিশ পাঠাচ্ছি। সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালেও এখনই ডিবি পুলিশ পাঠানো হবে। কিছুক্ষণ পর দিরাই থানা থেকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পুলিশ যাবে। এটি স্পর্শকাতর বিষয়, আমরা গুরত্বের সঙ্গে দেখছি।
পুলিশ সুপার তোফায়েল আহম্মেদ বললেন, বিষয়টি গুরত্বের সঙ্গে দেখতে পুলিশকে বলে দেওয়া হয়েছে। মেয়েটির পরিবারের কেউ থানায় গেলেই মামলা নেওয়া হবে।
রাত নয়টায় পুলিশ সুপার তোফায়েল আহম্মেদ জানান, সিএনজিসহ ঘটনায় জড়িত চালক ইমন খান (২৫), বাড়ি দিরাই উপজেলার জকিনগর এবং মিঠু মিয়া নামে ঘটনায় জড়িত আরেক যুবককে আটক করা হয়েছে।