বিগত পিএসসি পরীক্ষা ও সরকারি বৃত্তি পরীক্ষায় ও অংশগ্রহণের সুযোগ ছিল স্কুলগুলোর। কিন্তু সরকারের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের গত ১৫/৭/২৫ তারিখে একটি নতুন করে সিদ্ধান্তকে তারা বিমাতাসুলভ আচরণের সঙ্গে তুলনা করেন।
বর্তমান সরকার প্রাথমিকে বৃত্তি পরীক্ষা আগামী ডিসেম্বর মাসে বার্ষিক পরীক্ষা শেষে ২১,২২,২৩,২৪ তারিখ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রাথমিকের সরকারি সকল স্কুল গুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে আগামী ২৪/৭/২৫ তারিখের মধ্যে পঞ্চম শ্রেণির উপস্থিত শিক্ষার্থীর ৪০% হারে রেজিস্ট্রেশন কনফার্ম করার জন্য। ১৮ জুলাই শুক্রবার দৈনিক যুগান্তরে একটি নিউজ পরীক্ষার সংক্রান্ত বিষয়ে প্রচার করা হয়।
কিন্তু এ পরীক্ষায় কিন্ডারগার্টেন স্কুলের ব্যাপারে এখনো কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এ জন্য হতাশা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের বিভিন্ন কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন , স্কুলকর্তৃপক্ষ , শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ।
বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক, অভিভাবক ও কমিটির অনেকের সাথে কথা বলেন জানতে পারা যায় , প্রাথমিকে কিন্ডারগার্টেন ও সরকারী প্রাইমারি স্কুলে একই বই পড়ানো হয়। দেশে করুণা মহামারীতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিন্ডারগার্টেন গুলো। করুণা মহামারিতে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণে অনেক স্কুলের কর্তৃপক্ষ পুনরায় তাদের স্কুলটি চালু করতে পারেনি। তারপরেও দেশে এখনো প্রায় ৫০ হাজার অধিক কিন্ডারগার্টেন চালু রয়েছে। এতে প্রায় দেশের সাড়ে ৪থেকে ৫ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। প্রাথমিকের কোমলমতি ৫০ থেকে ৬০ লক্ষ শিক্ষার্থী কিন্ডারগার্টেনে লেখাপড়া করছে। এত বিশাল একটি অংশকে বাদ দিয়ে সরকারের প্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষার এই নতুন সিদ্ধান্তকে তারা বিমাতা সুলভ আচরণ বলেও ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকগণ বলেন, আমরা ৪/৫হাজার টাকায় চাকুরি করেও প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় সবচেয়ে ভালো ভূমিকা রাখতে পেরেছি, তারপরেও প্রাথমিকে সকল বৈষম্য আমাদেরকে চেপে ধরেছে। আমরা এই বৈষম্যের অবসান চাই।
অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক আরো বলেন, দেশে প্রাথমিক শিক্ষার মান সবচেয়ে ভালো কিন্ডারগার্টেন স্কুলে। শিক্ষার্থীদের পছন্দের প্রথম তালিকায় কিন্ডারগার্টেন। এ প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘদিন ধরে তাদের শিক্ষার মান ও সফলতা ধরে রেখেছেন। কিন্তু সরকারের এ সিদ্ধান্তকে আমরা কোন রকমেই মেনে নিতে পারছি না। আশা করি প্রাথমিকে আগামী বৃত্তি পরীক্ষায় আমাদের সন্তানদেরকেও অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিবেন।
কুমিল্লায় অনেক স্কুলের কর্তৃপক্ষের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলতে চাইলে তারা বলেন, করুণা মহামারীর ক্ষতি আমরা এখনো কাটিয়ে উঠতে পারিনি। আমরা আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে স্কুলগুলো কোন রকমে সচল করে রেখেছি। কিন্তু শিক্ষার মানে আমরা আপসহীন। ইতিমধ্যে এ সফলতা আমরা অভিভাবক ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের মুখ থেকে শুনতে পাই। যেখানে প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা উপবৃত্তি থেকে শুরু করে সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে প্রাথমিকের কিন্ডারগার্টেনে পড়ুয়া বিশাল একটি অংশ বঞ্চিত হচ্ছে। তারপরেও তাদের পছন্দ আমাদের কিন্ডারগার্টেন গুলো। তার একটাই কারণ আমাদের শিক্ষার মান। যদি এই বৈষম্য দীর্ঘদিন চলতে থাকে তাহলে এর প্রভাব পড়বে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায়। তাই প্রাথমিকে আমাদের সফলতা ধরে রাখার জন্য সরকারের সকল প্রকার সহযোগিতা কামনা করি।