তার মধ্যে অন্যতম খেজুর রস। শীতের সাথে রয়েছে খেজুর রসের এক অপূর্ব যোগাযোগ। শীতকালের শুরুতেই গ্রাম গঞ্জের মনুষেরা খেজুর গাছ ছিলানো (কাটা) নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়তো। কে কার আগে রস সংগ্রহ করতে পারে। বিশেষ করে শীত মৌসুম এলে গাছিদের আনন্দের সীমা থাকতো না। শীতের ভোরে খেজুর রস সংগ্রহের জন্য গাছিরা মহাব্যস্ত হয়ে পড়তো। কোমরে মোটা রশি বেঁধে গাছে ঝুঁলে-ঝুঁলে রস সংগ্রহ করতো গাছিরা। তারপরেও উপজেলার কয়েকটি এলাকায় ইতিমধ্যে শখের বশতঃ গাছিরা নামমাত্র রস সংগ্রহ করছে। হয়তো সেদিন খুব বেশি দূরে নয়, যেদিন খেজুর রসের কথা মানুষের মন থেকে হারিয়ে যাবে। আগামী প্রজন্মের কাছে খেজুর রস রূপকথার গল্পের মতো মনে হবে। সচেতনদের মতে, বাড়ির আনাচে-কানাচে, রাস্তার পার্শ্বে, পরিত্যক্ত স্থানে পর্যাপ্ত পরিমানে খেজুর গাছ রোপণ করলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে খেজুর গাছের রস ও গুড় সম্পর্কে কোন গল্পকথা বলতে হবে না।
দৌলতপুর উপজেলার বসবাসকারী গাছি কাদের বলেন, ‘শীত মৌসুম এলে গাছ ছাটাই করে রস বিক্রির টাকায় ভালভাবে সংসার চালাতে পারতাম। আগে প্রতি বছর শীত মৌসুমে নিজের গাছ ছাড়াও নির্ধারিত অর্থ বা গুড় দেয়ার চুক্তিতে অন্যের ১০-১৫ টি গাছ ছিলতাম (কাটা)। কিন্তু এখন গাছ মরে যাওয়া এবং গাছ বিক্রি করার কারনে মাত্র কয়েকটি গাছ কাটি। গাছ কম থাকায় গ্রামবাসী খেজুর রস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।’ উপজেলার পংতিছা গ্রামের গাছি জামাল মন্ডল বলেন, ‘শীত মৌসুম এলেই সারা বছর অযন্তে অবহেলায় পড়ে থাকা খেজুর গাছের কদর বেড়ে যেতো। আমার নিজস্ব খেজুর গাছ না থাকলেও আমি মালিকদের গাছ ছাটাই করে সংগ্রহীত রসের একটি অংশ প্রদান করতাম। এ ব্যাপারে উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের আমিনুর রহমান ছোয়াদ নামে একজন বলেন ‘এক সময় আমাদের এলাকায় প্রায় প্রতিটি বাড়িতে, জমির আইলে, রাস্তার পার্শ্বে ও পতিত জমিতে সারি সারি খেজুর গাছ ছিল। বর্তমানে খেজুর গাছ মরে যাওয়া এবং বিক্রি করার কারনে খেজুর গাছ নেই বল্লেই চলে। বর্তমানে খেজুর গাছের সংখ্যা কমতে কমতে বিলুপ্ত প্রায়।