ফেনীর পরশুরামে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বাধায় আটকে আছে। বাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় বেড়িবাঁধের ভাঙ্গন অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ করে লোকালয় প্রাবিত হওয়ার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (ফেনী) সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ জুলাই অতিভারি বৃষ্টি ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে উপজেলার মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধের ১৬টি স্থানে ভাঙ্গন দেখা দেয়। মানুষের ঘরবাড়ি, কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের ভারত সীমান্তবর্তী ডিএম সাহেবনগর গ্রামের বড় কবরস্থানের পাশে ভারত থেকে প্রবাহিত সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধের প্রায় ৩০ মিটারের অংশ বন্যায় ভেঙে যায়। এর আগে ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের বন্যায় একই জায়গায় বাঁধ ভেঙে যায়। তখন গ্রামবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমে এটি মেরামত করা হয়। বেড়িবাঁধ ভাঙ্গনে ডিএম সাহেবনগর, মেলাঘর, রাঙ্গামাটিয়া ও মির্জানগর গ্রাম পানিতে তলিয়ে যায়। কয়েকদিন আগে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার বাঁধের মেরামত কাজ শুরু করতে চাইলে বিএসএফ এর বাধায় সেটি স্থগিত হয়ে যায়।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আজহার হোসেন মজুমদার জানান, বেড়িবাঁধটির কিছু জায়গা নোম্যানসল্যান্ডে পড়ায় বিএসএফ বাধা দিয়েছে। যেহেতু দুই দেশের সীমান্তের ২৫৫ নং পিলারের কাছে বাঁধটি ভেঙেছে। বেড়িবাঁধের রাস্তাটি দিয়ে কবরস্থানে যাতায়াত করে চার গ্রামের মানুষ। বাঁধটি ভেঙে গেলে চলাচলে দুর্ভোগে পড়েছেন মানুষ। এছাড়া নদীর পানি বেড়ে গেলে ভাঙ্গনের অংশ দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশংকা রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মামুন হোসেন জানান, এটি চার গ্রামের কবরস্থানে যাতায়াতের রাস্তা। আমরা চলাচল করতে পারছি না। বিএসএফ এর বাধায় কাজ বন্ধ হয়ে আছে। তারা যাতায়াতে বাধা দেয়। বিএসএফ দিনে ৩বার এসে দেখে যায়। দ্রুত বাঁধটি মেরামত না করলে সিলোনিয়া নদীর পানি ভাঙ্গন দিয়ে গ্রামে ঢুকবে।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, ডিএম সাহেবনগরে সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধের প্রায় ৩০ মিটারের অংশ ভেঙে গেছে। জঙ্গলঘোনায় সিলোনিয়া নদীর ৩০ মিটারের সাথে ৬০ মিটারের বাঁধ মেরামতে ৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাহাবুদ্দিন এন্টারপ্রাইজ বাঁধটি মেরামতের কাজ পেয়েছে।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ফেনী ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন জানান, বাঁধটি ভারতের সীমান্ত পিলারের কাছে। নোম্যানসল্যান্ডে হওয়ায় তারা আপত্তি জানিয়েছে। দ্রুত বেড়িবাঁধটি মেরামতের কাজ যাতে শুরু করা যায়, সেজন্য চেষ্টা চলছে।