পাবনার সুজানগর উপজেলায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (৯ জুলাই) দুপুর আড়াইটার দিকে সুজানগর পৌরবাজারের নন্দিতা সিনেমা হল এলাকায় সংঘটিত এ ঘটনায় উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব শেখ আব্দুর রউফ গুরুতর আহত হন। এছাড়া অন্তত ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। 


আহতরা হলেন—উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব শেখ আব্দুর রউফ (৫০), সুজন আলী (৩৫), শেখ মনজেদ আলী (৩০), ইয়াকুব আলী (৫৬), হোসেন (৪০), যুবদল কর্মী মানিক খা (৩৫), সবুজ খা (৩০), আব্দুর রহমান (৪৫), শাকিল খা (২৫), রিয়াজ খান (২৫), টিক্কা খান (৬০), তুষার (৪০), আসলাম (৪৫) ও মনজিল (৩০)। আরও কয়েকজনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাতে এক নারীর সঙ্গে ফোনে কথা বলা নিয়ে সুজানগর উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মজিবর খাঁয়ের অনুসারী আশিকের মোবাইল কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলেন উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব শেখ আব্দুর রউফের ভাতিজা ও ছাত্রদল নেতা কাউছার ও তার অনুসারীরা।

ঘটনার পর তা আপাতভাবে মীমাংসা হলেও, বুধবার দুপুরে কাউছার ও তার সহযোগীরা আশিককে সিনেমা হলের সামনে ডেকে পাঠান। আশিক ছাত্রদল নেতা ও চাচাতো ভাই সবুজকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যান। সেখানেই প্রথমে কথা কাটাকাটি এবং পরে তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়। একপর্যায়ে সবুজকে ছুরিকাঘাত করা হয়।

এরপর আশিক ও সবুজ তাদের পক্ষের নেতাকর্মীদের ডেকে এনে প্রতিপক্ষের ওপর হামলা চালায়। উভয়পক্ষের সংঘর্ষে বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুর রউফ শেখও আহত হন। তিনি উভয়পক্ষকে থামাতে গেলে তাকেও কুপিয়ে ও মারধর করা হয়। ঘটনাস্থলে গোলাগুলির ঘটনাও ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।

আহতদের মধ্যে সাতজন পাবনা জেনারেল হাসপাতালে এবং বাকি সাতজন সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন।

সুজানগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক তৌফিক হাসান বলেন, এই সংঘর্ষ দলীয় কোনো ইস্যু নয়, বরং এটি আঞ্চলিক বা ব্যক্তিগত বিরোধ থেকে সৃষ্ট। আমরা এ ধরনের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই।

সুজানগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মজিবর রহমান বলেন, বিএনপির স্থানীয় দুই গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছে। আজকের ঘটনার প্রকৃত কারণ এখনও পরিষ্কার নয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তদন্ত চলছে, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।