মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুরে নাটোরের বানেশ্বরে পাবনা বিআরটিসি বাসের শ্রমিক ও মাইলাইন বাসের শ্রমিকদের মধ্যে বাকবিতণ্ডার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাতে বড় ধরনের সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
পাবনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের আহ্বানে উভয় পক্ষকে সন্ধ্যায় ইউনিয়ন কার্যালয়ে বিষয়টি মীমাংসার জন্য ডাকা হয়। রাত সাড়ে আটটার দিকে আলোচনা চলাকালীন সময়ে একদল সন্ত্রাসী বোতলভর্তি পেট্রোল, বোমাসহ বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে কার্যালয়ে হামলা চালায় এবং মারধর ও ভাঙচুর করে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে ছয়টি পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠন —
পাবনা মোটর মালিক গ্রুপ
পাবনা জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপ
পাবনা জেলা বাস, মিনিবাস ও কোচ মালিক সমিতি
পাবনা জেলা ট্রাক, ট্যাংকলরি, কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন
পাবনা জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন
পাবনা জেলা ড্রামট্রাক মালিক সমিতি
— তাৎক্ষণিকভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দেয়।
জরুরি বৈঠক ও প্রশাসনের আহ্বান
জনদুর্ভোগ কমাতে ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুর ১২টায় জেলা প্রশাসকের কনফারেন্স রুমে জরুরি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। পাবনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অংশ নেন— অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জাহাঙ্গীর আলম, পাবনা জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের সভাপতি মোজাম্মেল হক কবির, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আনিসুল হক বাবু, পাবনা মোটর মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোমিনুল ইসলাম মমিন, বাস-মিনিবাস ও কোচ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রেহানুল ইসলাম বুলাল, ট্রাক-ট্যাংকলরি-কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম ইসহাক, মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন আহ্বায়ক ফিরোজ খান, বিআরটিসি ডিজিএম মনিরুজ্জামান বাবু, মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম আহ্বায়ক হাফিজুর রহমান রানা প্রমুখ।
এ ছাড়া বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন— অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে তাবাস্সুম, ঐতিহ্যবাহী পাবনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম, মোটর মালিক গ্রুপের সভাপতি খাদেমুল ইসলাম বাদশা ও কোষাধ্যক্ষ এনায়েত কবীর, ড্রামট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম ইয়াছিন রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন লিটন, জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের সদস্য মারুফ আহমেদসহ পরিবহন খাতের অনেক নেতা-কর্মী।
আল্টিমেটাম ও পুলিশের বক্তব্য
বৈঠক শেষে পরিবহন নেতারা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হামলার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের আল্টিমেটাম দেন। অন্যথায় আরও কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
সদর থানার ওসি আব্দুস সালাম জানান—
"এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ঘটনার সময়ই ফোর্স পাঠানো হয়েছে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। লিখিত অভিযোগ দিলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
টিআই ওয়ান আব্দুল বারি শ্রমিকদের সড়কে শৃঙ্খলা বজায় রেখে গাড়ি চালানোর আহ্বান জানান।
অন্য সমস্যাও আলোচনায়
বৈঠকে হামলার প্রতিবাদের পাশাপাশি পাবনা জেলার পরিবহন খাতের অন্যান্য সমস্যা ও সমাধানের বিষয়েও আলোচনা হয়।