প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নৃত্য ও সংগীতের শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিল করে দ্বাদশ পর্যন্ত সকল শ্রেণীতে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ করে ইসলাম শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবী জানিয়েছে বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর নেতৃবৃন্দ।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫) তারিখে নগরীর ধোপাখলাস্থ জেলার অস্থায়ী কার্যালয়ে বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর শাখার দায়িত্বশীলদের এক যৌথ বৈঠকে এই দাবী জানানো হয়।
বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি ময়মনসিংহ জেলা আমীর হাফেজ মাওলানা আজিজুল হক এর সভাপতিত্বে ও জেলা সাধারণ সম্পাদক মুফতি শরীফুর রহমান এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির কেন্দ্রীয় সংগঠন সচিব অধ্যক্ষ আবু তাহের খান বলেন, 'সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ের কোনো বিশেষজ্ঞ শিক্ষক নেই। ফলে সমৃদ্ধ সিলেবাস থাকলেও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ধর্মীয় শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে দেশে সামাজিক ও নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয় দেখা দিয়েছে।'
তিনি আরও বলা হয়, 'ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ না দিয়ে সংগীত ও নৃত্য শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। সংগীত বা নৃত্য শিক্ষার্থীদের আবশ্যিক কোনো বিষয় হতে পারে না। বরং কোনো পরিবারের যদি একান্তই গান বা নৃত্যের প্রতি আগ্রহ থাকে তাহলে তারা ব্যক্তিগতভাবে শিক্ষক রেখেও বিষয়টি শেখাতে পারে।'
প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য সংগীত ও নৃত্যের শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্তকে 'জাতির জন্য আত্মঘাতী' বলেও উল্লেখ করে তিনি বলেন কোমলমতি প্রজন্মকে সংগীত ও নৃত্য শিক্ষা দেওয়ার জন্য শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকার মূলত শিক্ষার্থীদের নৈতিকভাবে অবক্ষয় ও অনৈতিক সমাজ গঠনে উৎসাহিত করছে।' 
তিনি বলেন, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীতের শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্তে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে দেশবাসী ইতিমধ্যে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি ময়মনসিংহ জেলা আমীর হাফেজ মাওলানা আজিজুল হক বলেন-বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ জনগণ দীর্ঘদিন থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের (যা ফ্যাসিবাদী সরকার বন্ধ করে দিয়েছিল) দাবী জানিয়ে আসছিল এবং প্রত্যাশা করেছিল বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গণ আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করবে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে আমরা দেখলাম প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সংগীতের শিক্ষক নিয়োগের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এ জাতি কোনক্রমেই কোমলমতি শিশুদের ইসলাম বিরোধী এই কার্যক্রম মেনে নিবে না। এর ফলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নীতি নৈতিকতাহীন ইসলাম বিদ্বেষী হিসেবে গড়ে উঠবে। যারা তাদের সজ্জনদেরকে সংগীত শিখাতে চায় তাদের জন্য শিল্পকলা একাডেমীতে ব্যবস্থা করা যেতে পারে। কোনক্রমেই সাধারণভাবে সকল শিক্ষার্থীদেরকে সংগীত শিখতে বাধ্য করা ধর্মদ্রোহিতার শামিল ও সংবিধান পরিপন্থী। ধর্মপ্রাণ এই জাতির প্রত্যাশা অনুযায়ী অনতিবিলম্বে সংগীতের শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিল করে পূর্বের ন্যায় ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ এবং দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ইসলাম শিক্ষা বাধ্যতামূলক করায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হোক অন্যথায় দ্বীন প্রিয় এ জাতী দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে। পরে উক্ত বৈঠকে কেন্দ্র ঘোষিত আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর হতে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দাওয়াতী পক্ষ বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য দেন, ময়মনসিংহ মহানগরীর আমির হাফেজ মাওলানা উমর ফারুক, সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মাওলানা সাইফুল মালেক, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান, মাওলানা আফজাল হোসাইন সরকার,ভালুকা উপজেলার আহবায়ক, মাওলানা ফয়জুর রহমান ফারুক,ফুলপুর উপজেলা আহবায়ক, মাওলানা ছানাউল্লাহ, হাফেজ আবুল কাশেম, হাফেজ শহীদুল্লাহ্ মুফতী সালাউদ্দিন জাহাঙ্গীর, প্রমূখ।