ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা ও পৌর বিএনপির একাংশের উদ্যোগে মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) বিকেলে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বর্ণাঢ্য বিজয় র‍্যালির আয়োজন করা হয়।

উপজেলা সদরের পুরাতন সোনালী ব্যাংকের সামনে থেকে শুরু হওয়া র‍্যালিটি উপজেলার প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়।

র‍্যালির পর সেখানে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়, যা সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খোশবুর রহমান খোকন। প্রধান অতিথি ছিলেন ফরিদপুর-১ আসনের বিএনপি নেতা ও বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু।

জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট হেমায়েত হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির সাবেক স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক কামরুল ইসলাম দাউদ, যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ইমরুল হাসান, যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী জসিমউদ্দীন কাকুল, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ডা. আজিজ, সদস্যসচিব আমির হোসেন এবং পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আরব আলী শেখ।

বক্তারা বলেন, বিগত ১৬ বছর ধরে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার দেশের মানুষের ভোটাধিকার ও বাক-স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। গুম, খুন, মামলা ও দমন-পীড়নের মাধ্যমে দেশের জনগণকে জিম্মি করে রেখেছে। এ অবস্থার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে দেশে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। যা বর্তমান প্রজন্মের মুক্তির পথ খুলে দিয়েছে।

বক্তারা আরও বলেন, গত ১৬ বছর ধরে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে এবং ভোটাধিকার ও বাক-স্বাধীনতাকে প্রতিষ্ঠিত করার পরিবর্তে তা নস্যাৎ করেছে। তারা বলেন, আজকের এই দেশের মানুষ কোনো সুযোগ পায়নি স্বাভাবিকভাবে মুক্ত ও স্বাধীনভাবে তাদের মত প্রকাশ করার। গুম, খুন, মামলা ও বিভিন্ন দমন-পীড়নের মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে যে কোনো বিরোধী মতকে নিশ্চিহ্ন করার পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র চলছে।

তারা আরও বলেন, এই কঠিন পরিস্থিতিতে ছাত্র-জনতা এবং সাধারণ মানুষ তাদের জীবন ও রক্তের বিনিময়ে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করেছে, যা দেশের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় হিসেবে রচিত হয়েছে। এই গণআন্দোলন দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য স্বাধীনতার পথ সুগম করেছে এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করার শৃঙ্খলা গড়ে তুলেছে।

বক্তারা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, প্রতি জুলাই মাসে শহীদদের আত্মত্যাগ আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা এবং তাদের স্বপ্নের সাফল্য নিশ্চিত করার দায়িত্ব আমাদের সকলের। এজন্যই আগামী দিনে গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধারে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। শুধু একটি দল নয়, দেশের সকল গণতান্ত্রিক শক্তিকে মিলিত হয়ে আজকের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে।

তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, মুক্তি ও স্বাধীনতার এই যাত্রা অব্যাহত থাকবে এবং জনগণের চাহিদা ও স্বার্থ রক্ষা করবে এমন একটি সরকার গড়ে উঠবে যা দেশের উন্নয়ন, শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ প্রশস্ত করবে।

অবশেষে বক্তারা সকল ছাত্র-জনতা ও সাধারণ মানুষকে ভোটাধিকার রক্ষা, বাক-স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ এবং দেশের মঙ্গল কামনায় একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।