সন্ত্রাস দমন আইন, বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তার হওয়া আমতলী পৌর যুবলীগের সভাপতি আরিফ উল হাসানকে বরগুনা আদালতের কোর্ট পুলিশের ব্যারাকে পুলিশের বিছানায় বসে স্বজনদের সঙ্গে ভাত খেতে দেখা গেছে। এ সময় তার পাশে উপস্থিত ছিলেন কোর্ট পরিদর্শক বশির আলম।


সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে ঘটনাটির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা।

জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটে গত ২ সেপ্টেম্বর বরগুনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কোর্ট পুলিশের ব্যারাকে। ভিডিওটি প্রকাশের পর পুলিশের বিরুদ্ধে দায়িত্বে গাফিলতি এবং আসামিকে অনৈতিকভাবে সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বরগুনা জেলা পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন সচেতন নাগরিকরা। তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, পূর্বেও আন্দোলন দমন করতে গিয়ে বিতর্কিত ভূমিকার কারণে আলোচনায় আসেন কোর্ট পরিদর্শক বশির আলম। ২০২২ সালে বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা থাকাকালে তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ ওঠে। এক ব্যবসায়ী ৯৯৯-এ অভিযোগ করলে তিনি ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে নেওয়া ৪০ হাজার টাকার মধ্যে ২০ হাজার টাকা ফেরত দেন। এবং পরবর্তীতে তাকে বামনা থানা থেকে বদলি করা হয়।

ছাত্রদল ও যুবদলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা অভিযোগ করেন, সরকার পরিবর্তনের পরও বশির আলম আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রকাশ্যে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে বরগুনা জেলা ছাত্রদলের সদর উপজেলা সদস্য সচিব মো. রাকিব বলেন, সরকার পরিবর্তনের পরও কিছু প্রভাবশালী পুলিশ কর্মকর্তা দলীয় পরিচয়ে বিশেষ সুবিধা দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

অন্যদিকে, কোর্ট পরিদর্শক বশির আলম এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বরগুনা জেলা পুলিশ সুপার মো. আল মামুন শিকদার বলেন, ঘটনাটি আমার দায়িত্ব নেওয়ার আগের। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে বরগুনা জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মো. নুরুল আমিন বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অভিযুক্ত একজন আসামিকে পুলিশ ব্যারাকে এভাবে আদর-যত্নে রাখার কোনো সুযোগ নেই। এটি দায়িত্বে অবহেলা ও স্পষ্টভাবে নিয়ম লঙ্ঘনের শামিল।