পটুয়াখালীর বাউফলে পুকুরের পানিতে ডুবে সহোদর দুজন শিশু মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে নাজিরপুর ইউনিয়নের রায় তাঁতেরকাঠী গ্রামের শিকদার বাড়ির পুকুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মৃত ইমাম হোসেন (৬) ও আবু বককর (৪) ওই গ্রামের কৃষক কবির শিকদারের ছেলে। শিশু ইমাম হোসেন রায় তাঁতেরকাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছিলেন। দুপুরে সহোদর দুই শিশু পানিতে ডুবে যায়, তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন৷ এসময় স্বজনদের আহাজারিতে হাসপাতালের পরিবেশ ভাড়ি হয়ে ওঠে৷ বিষয়টি নিশ্চিত করে বাউফল থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, নিহত দুই শিশুর বাবা তাদের নিয়ে পুকুরে পানি নিতে যায়।সন্তানদের পুকুরের ধারে রেখে একটি পানির কলস বাসায় রেখে দ্বিতীয় পানির কলস নিতে এসে সন্তানদের দেখতে পাচ্ছিলেন না তাদের বাবা। চারিদিকে অনেক খোঁজাখুঁজি করার দীর্ঘসময় পরে তার ছোট ছেলে আবু বকরকে পুকুরে ভাসমান অবস্থায় দেখা যায়। ছোট ছেলে উদ্ধারের পরে পুকুরে জাল টেনে তার বড় ছেলেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি। দুই শিশু সন্তানকে হারিয়ে কবির শিকদার ও তার স্ত্রীর এখন একমাত্র সম্বল কন্যা শিশু। মায়ের কোলে থাকা কন্যা শিশু বুঝতেই পারছে না তিনি দুই ভাইকে হারিয়েছে। সন্তান হারা পিতা কবির শিকদার বলেন, 'আমার বাবা'দের দেখতে না পেয়ে, আমি ওদের মাকে ডাকি। দুজনে খোঁজার পরে একসময় দেখি আমার ছোট বাবা পানিতে ভাসছে।' বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক শাম্মী আক্তার তরণ বলেন, 'হাসপাতালে যখন শিশুদের আনা হয়েছে, তখন তারা মৃত ছিলো। আমরা ক্লিনিকালি কনফার্ম করার পরে, আমরা ইসিজি করছি। ইসিজি'তেও ফ্ল্যাট লাইন আসার পরে আমরা আনুমানিক ২টা ১৫ মিনিটে শিশু দুজনকে মৃত ডিকলার করছি।' প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছরে বাউফলের গ্রামাঞ্চলে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। শিশু মৃত্যুর হার কমাতে পরিবার সদস্যদের শিশুদের প্রতি আরো যত্নশীল হতে হবে বলে মনে করেন সচেতন সমাজ৷