গত হওয়া টানা ৩ দিনের অবরোধ চলার পর
ফরিদপুর-৪ আসন থেকে আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন কেটে ফরিদপুর-২ আসনে অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদে এবার দ্বিতীয় দফায় সকাল-সন্ধ্যা টানা তিন দিনের অবরোধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আন্দোলনকারীরা বলছেন এই আন্দোলন হবে ভয়াবহ আন্দোলন।
আগামী তিনদিনের টানা আন্দোলনকে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে সমর্থন জানিয়েছেন ভাঙ্গার আপামার জনতা। দলমত নির্বিশেষে এই আন্দোলনে কোন দলের মধ্যে ভেদাভেদ নেই। গোটা ভাঙ্গাবাসীর এক দাবি আমাদের দাবি মামতে হবে যেকোন মুল্যে এই দাবি আমরা সরকার কে মানিয়ে ছাড়বো এৃন হুঙ্কার দিচ্ছেন ভাঙ্গাবাসী।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টায় আলগি ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে সংবাদ সম্মেলন করে ভাঙ্গা উপজেলা বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিস, এনসিপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল এ ঘোষণা দেন। এখানে কোন দলের নেতা কে কর্মী কে তাহার কোন বির্তক ছিলো না। সবাই ছিল এক মঞ্চে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাঠকালে ভাঙ্গার আলগি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ম ম সিদ্দিক মিয়া বলেন, গত ৪ সেপ্টেম্বর, নির্বাচন কমিশন সীমানা পুনর্বিন্যাসের নামে সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা সালথা) সঙ্গে সংযুক্ত করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। তারা বলে আমি মনে করছি এটা হয়তো কোন রাজনৈতিক খেলা। এই খেলা আমরা বুঝতে পারছি। এখানে বিশাল ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি আমার। ভাঙ্গা আমার "মা। ভাঙ্গার আলগি ও হামেরদির এক ফোটা বালু কনা সালথা যেতে দিবো না।
তিনি আরো বলেন,
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকে নির্বাচন কমিশনের এ অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আমরা দুই ইউনিয়নবাসী রাজপথে অবস্থান করেছি। আমাদের অব্যাহত আন্দোলনের ফলে দক্ষিণবঙ্গের ২১টি জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকার সড়ক যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। আমরাও জানি মানুষ কষ্ট আছে। যাত্রীদের কষ্ট দুই চারদিন বা ১০ দিনের। আমাদের কষ্ট সারা জীবনের। চেয়ারম্যান সিদ্দিক বলেন,
দুঃখজনক হলেও সত্য, নির্বাচন কমিশনের তরফ হতে আমাদের দাবির বিষয়ে কোনো বক্তব্য বা বিবৃতি পাইনি। তারা সব জেনেও কানে না শোনার অভিনয় করছেন। এটাই দুঃখজনক।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনের অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের বিষয়ে আমাদের আহ্বান পরিষ্কার, ভাঙ্গার জনপদের মানুষ কোনোভাবেই আলগি ও হামেরদির একটি ভিটাও ভাঙ্গা থেকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্র মেনে নেবে না। প্রয়োজনে রক্ত জরবে তবু দাবি আদায় না করে ঘরে ফিরবো না।
দুই ইউনিয়নের সীমানা ভাঙ্গা উপজেলার সঙ্গে পুনর্বহাল না করা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে এবং চলবেই। নির্বাচন কমিশনকে আমরা ভাঙ্গাবাসীম জানাতে চাই, অবিলম্বে এ অঞ্চলের মানুষের দাবি মেনে নিন।
সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্যে স্হানী গন্যমান্য ব্যাক্তিরা বলেন, ভৌগোলিক দিক দিয়ে নগরকান্দা ও সালথা উপজেলা, ভাঙ্গা উপজেলা থেকে অনেক দূরে অবস্থিত।
ফরিদপুর-২ এর সঙ্গে দুই ইউনিয়নের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও যোগাযোগের কোনোটাই সম্পর্ক নাই আগেও ছিল না এটা কোন ধরনের সিদ্ধান্ত। এটা কার স্বার্থে করা হলো?
১৪ সেপ্টেম্বর হতে টানা তিনদিন সকাল ৬ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত এই আন্দেলন চলবেই- অবরোধের স্থানগগুলো হচ্ছে-
হামিরদী ইউনিয়নের মুনসুরাবাদ বাসস্ট্যান্ড, চান্দ্রা ইউনিয়নের পুলিয়া বাসস্ট্যান্ড,।
ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা হাসপাতাল গেট, চুমুরদী ইউনিয়নের পূর্ব সদরদী বাসস্ট্যান্ডে, হামিরদী ইউনিয়নের মাধবপুর বাসস্ট্যান্ড, হামিরদী বাসস্ট্যান্ড, পুখুরিয়া বাসস্ট্যান্ড ও রেলপথের পুখুরিয়া রেল ক্রসিং পর্যন্ত এবং আলগি ইউনিয়নের
ঢাকা-খুলনা সুয়াদি বাসস্ট্যান্ড।
হামিরদী ইউনিয়নের মুনসুরাবাদ বাসস্ট্যান্ড, চান্দ্রা ইউনিয়নের পুলিয়া বাসস্ট্যান্ড,।
ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা হাসপাতাল গেট,ও চুমুরদী ইউনিয়নের পূর্ব সদরদী বাসস্ট্যান্ডে, হামিরদী ইউনিয়নের মাধবপুর বাসস্ট্যান্ড, হামিরদী বাসস্ট্যান্ড, পুখুরিয়া বাসস্ট্যান্ড।
রেলপথের পুখুরিয়া রেল ক্রসিং,
ঢাকা - বরিশাল মহাসড়কের কৈইডুবি রেল ক্রসিং বন্ধ থাকবে
অপরদিকে, এই আন্দোলনের পর, তথা
তিন দিন পর, প্রধান নির্বাচন কমিশন বরাবর স্মারকলিপি পেশ। পরে নির্বাচন কমিশনের সামনে মানববন্ধন, এর পরে হতে পারে আমরন অনশনও।
অপরদিকে, অবরোধের পক্ষে বক্তব্য রাখেন,ভাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার ইকবাল হোসেন সেলিম, সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব মোল্লা, জামায়াতে ইসলামীর উপজেলা আমির মাওলানা সারোয়ার হোসেন, ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি আতিউর রহমান, খেলাফত মজলিসের নেতা জাবের হোসেন, এনসিপি নেতা অনিক হোসেন ভাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোন ও আন্দোলন রক্ষার হাজারো নেতাকর্মী ।