ময়মনসিংহের ভালুকায় রাখিয়া সুলতানা রিয়া (১৫) নামে নবম শ্রেণীর এক স্কুল ছাত্রীকে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (০৯ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলা বাটাজোর গ্রামে। নিহত রিয়া ওই গ্রামের কৃষক আব্দুর রশিদের মেয়ে।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বাটাজোর দক্ষিণ পাড়ার আব্দুর রশিদের মেয়ে বাটাজোর বিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রি রাখিয়া সুলতানা রিয়া। এক বছর আগে পাশের সখিপুর উপজেলার মাওশা গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে সৌদি প্রবাসী রিপন মিয়ার সাথে রিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর ছেলে বিদেশ চলে গেলে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্বামীর বাড়ির লোকজন রিয়ার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতণ শুরু করে।
এক পর্যায়ে নির্যাতন সইতে না পেরে গত ছয় মাস আগে রিয়া তার বাবার বাড়ি চলে আসে। সোমবার দুপুরে রিয়া স্কুলে যাওয়ার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পরই মুখোশধারী অজ্ঞাত এক যুবক তাকে পিছন থেকে চাপাতি দিয়ে কোপ দেয়। এসময় রিয়া জীবন রক্ষার্থে চিৎকার দিয়ে দৌড়াতে শুরু করলে ওই যুবক পিছন থেকে রিয়ার ঘার, পিঠসহ বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে পাশের ধান ক্ষেতে ফেলে যায়। খোঁজ পেয়ে পরে পরিবার ও স্থানীয় লোকজন রিয়াকে উদ্ধার করে ভালুকা উপজেলা ৫০ শয্যা সরকারী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রিয়ার মা মাজেদা খাতুন জানান, এক বছর আগে পাশের সখিপুর উপজেলার মাওশা গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে সৌদি প্রবাসী রিপন মিয়ার সাথে তার মেয়েকে বিয়ে দেয়া হয়। বিয়ের পরদিনই তার স্বামী বিদেশ চলে গেলে ছয় মাস যেতে না যেতেই মেয়ের শাশুড়ী খতেমন নেছা তার মেয়ের উপর নির্যাতণ শুরু করে। এমনকি কয়েলের আগুণ দিয়ে হাত পুড়িয়ে দেয়া হয়। পরে তার মেয়ে স্বামীর বাড়ি থেকে চলে আসে। কিন্তু স্বামীর বাড়ির লোকজন বার বার চেষ্টা করলেও শশুর বাড়ির নির্যাতণের ভয়ে সে যেতে রাজি হয়নি। এরই জের হিসেবে তার মেয়েকে স্বামীর বাড়ির লোকজন কুপিয়ে হত্যা করে তার মেয়েকে ধান ক্ষেতে ফেলে যায়। তিনি তার মেয়ের হত্যাকারীর বিচার দাবি করেন।
ইউপি চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান লিটন জানান, হত্যাকান্ডের শিকার মেয়েটি তার মেয়ের সাথেই বাটাজোর বিএম উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছিলো। ঘটনাটি খুবই দু:খ্যজনক। তিনি হত্যাকারিকে গ্রেফতার ও তার দৃষ্টান্তপূর্বক বিচারের দাবি জানান। ভালুকা হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাকিব হাসান জানান, হাসপাতালে আনার আগেই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মেয়েটি মারা গেছে।