বর্তমানে উপজেলা সদর হাজিরহাট বাজারে নির্মাণ করছেন বহুতল ভবন। ওই ভবনের বর্তমান মূল্য প্রায় কোটি টাকা। এ ছাড়াও নামে বেনামে তার কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন। এদিকে ২০২৪ সালের ৫ই আগস্ট কর্ম এলাকায় সরকারের পক্ষ হয়ে ছাত্র -জনতার ওপর গুলি চালাতে থানার অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করছেন আওয়ামী লীগের লোকজনকে। ঘটনার সত্যতায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যাুনালে তার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা যায়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০১১সালে ফাইয়াছ হাসমিনুর রোবেলের লক্ষ্মীপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কোটায় পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগ পায়। তার বাবা নুরনবী চৌধুরীর তখনকার সময়ে কমলনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলেন। এর পর আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধার ছেলে হওয়ায় চট্টগ্রাম রেঞ্জের বিভিন্ন থানায় দাপটের সহিত চাকরি করে সে। ২০১৯ সালে সহকারী উপ-পুলিশ পরিদর্শক ( এএসআই) পদে তার পদন্নোনতি হয়। এএসআই হওয়ার পর তার কর্ম এলাকায় চট্টগ্রামের চাঁন্দগাও থানায় জামায়াত-বিএনপির লোকজনের নির্যাতন এবং মামলা হামলার ভয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয় সে। এবং জড়িয়ে পড়েন ইয়াবা পাচারসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে। অনুসন্ধান জানা যায়, রোবেল ২০২৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর কমলনগর উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নে প্রায় অর্ধকোটি টাকার জমি কিনেন।
২০২৪ সালের জুলাই মাসে সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হলে সরকারের পক্ষ হয়ে চাঁন্দগাঁ থানা এলাকায় সে অনেক দমন-পীড়ন চালায় এ কর্মকর্তা। ওই সময় আন্দোলনের মাত্রা বেড়ে গেলে সাধারণ জনগনের ওপর গুলি চালাতে ৪ এবং ৫আগস্ট আওয়ামী, যুবলীগ ও ছাত্র লীগের নেতা কর্মীদের হাতে থানার অস্ত্র তুলে দেয় সে। ওই দিন সরকারের পতন হয়ে গেলে রোবেল পালিয়ে এলাকায় চলে আসে। এলাকায় এসে উপজেলা সদর হাজিরহাট বাজারে আগের ক্রয়কৃত জমিতে ৫তলা ভবনের কাজ শুরু করেন। তার সকল অপকর্ম অল্পদিনে অনেক টাকার মালিক বনে যাওয়ার খবর হাজিরহাট বাজারে সাধারণ জনগনের মুখে মুখে। তাই জনরোষ থেকে বাঁচতে কমলনগর উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব আবু ছায়েদ দোলনকে তার হাতের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে দাম্ভিকতার সহিত তার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব আবু ছায়েদ দোলন বলেন, পুলিশ সদস্য রোবেল আমার চাচাতো ভাই। চাঁন্দগাঁ থানা ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনা তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যাুনালে ডাকা হয়েছে এটা সঠিক । সে কোথায় টাকা পেয়েছে; তা আমার জানার বিষয় নয়। তার জায়গায় সে ভবন করছে এতে আমার সহযোগিতা থাকতেই পারে।
এদিকে পুলিশ সদস্য ফাইয়াছ হাসমিনুর রোবেল ট্রাইব্যুনালে তাকে ডাকার বিষয় স্বীকার করে বলেন ৫ আগষ্ট চাঁন্দগাঁ থানা এলাকায় ছাত্র-জনতার বিক্ষোভে কয়েকজন ছাত্র মারা যায়। সে অপরাধে ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়েছে। সেখানে কোন পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়নি। তাকে স্বাক্ষী হিসাবে ডাকা হয়েছে ।
২০১৩ সালে পুলিশের কনস্টেবল হিসাবে যোগদানের পর ২০২৩ সালে প্রায় অর্ধকোটি টাকার সম্পত্তি কেনা এবং বহুতল ভবন নির্মাণ করার কথা তিনি অকপটে স্বীকার করেন।