কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. শামছুল ইসলামের কলিজা খুলে ফেলার হুমকি দেওয়া কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য আবদুল গফুর ভূঁইয়াকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে

কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. শামছুল ইসলামের কলিজা খুলে ফেলার হুমকি দেওয়া কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য আবদুল গফুর ভূঁইয়াকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে দলের পক্ষ থেকে। একই নোটিশে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলন করায় ওই বিএনপি নেতাকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
 শুক্রবার বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সেলিম ভূঁইয়া এই কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন।
কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়েছে, ‘সম্প্রতি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কুমিল্লার চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা জেলা প্রশাসককে নিয়ে আপনার একটি বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তা ছাড়া গত ১২ ও ১৩ ই আগস্ট নাঙ্গলকোট উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নাঙ্গলকোট উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জাতীয় সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। উক্ত বিষয়ে আপনাকে আগামী তিন কার্য দিবসের মধ্যে জবাব প্রদানের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা যাচ্ছে।’
গত মঙ্গলবার শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে হুমকি দেওয়ার একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে একটি অংশে আবদুল গফুর ভূঁইয়াকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনারে কে এখানে (চেয়ারে) বসাইছে আমি তাঁর কইলজা খুলিয়ালামু । আপনার কইলজাও খুলমু।’ ওই অডিওতে কুমিল্লা জেলা প্রশাসককেও গালমন্দ করতে শোনা যায় গফুর ভূঁইয়াকে।
আবদুল গফুর ভূঁইয়া ২০০১ সালে কুমিল্লা-১১ আসনের (নাঙ্গলকোট) সংসদ সদস্য ছিলেন। দলীয় সূত্র জানিয়েছে, নাঙ্গলকোট উপজেলার ভোলইন উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের সভাপতির পদ নিয়ে শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানকে হুমকি দেন আবদুল গফুর ভূঁইয়া। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতির পদে রয়েছেন তিনি। ঘটনার পর আবদুল গফুর ভূঁইয়া দাবি করেন, এটি তাঁর কল রেকর্ড নয়। এডিট করে রেকর্ড প্রচার করা হয়েছে। তবে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে কল রেকর্ডটির সত্যতা নিশ্চিত করেছে সাংবাদিকরা ।এদিকে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের মধ্যে গত মঙ্গলবার সাতটি ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই দিন চার ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলনের জন্য উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আটটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ রাখা হয়। এই ঘটনার পর দিন আরও সাতটি ইউনিয়নে বিএনপির সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই দিনও সম্মেলনের কারণে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়। খোলা থাকলেও পাঠদান চালানো হয়নি আরও দুটি প্রতিষ্ঠানে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানপ্রধানেরা জানিয়েছেন, বিএনপির সম্মেলনের জন্য তাঁরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পাঠদান বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছেন। এসব ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
শুক্রবার এসব বিষয়ে জানতে আবদুল গফুর ভূঁইয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।
কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সেলিম ভূঁইয়া বলেন, আবদুল গফুর ভূঁইয়াকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে এসব ঘটনার জবাব চাওয়া হয়েছে। তিনি জবাব দেওয়ার পর দল সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে।