গত কয়েকদিনের তীব্র গরমে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় স্বাভাবিক জনজীবন বাধাগ্রস্ত ও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে সাধারণ জীবন-জীবিকা। রোদের প্রখরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় খেটে খাওয়া মানুষ, দিনমজুর ও নিন্ম আয়ের মানুষ পড়ছেন চরম বিপাকে। অসহ্য গরমে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। শহরের শপিং মল, মার্কেট কিংবা বাজারেও ক্রেতা সাধারণের উপস্থিতি কম। প্রতিদিনই তাপপ্রবাহ ক্রমেই বাড়ছে। তারপরেও পেটের দায়ে অত্যধিক গরম উপেক্ষা করে যেতে হচ্ছে কাজে।
রবিবার (১১ মে) সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। জীবিকার তাগিদে তীব্র রোদে কাজ করতে হচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষদের। বাইরে কাজ করা শ্রমজীবী মানুষেরা তীব্র রোদে কেউ ছায়া খুঁজছেন, কেউ পান করছেন ঠাণ্ডা শরবত। অতিরিক্ত গরমের কারণে প্রতিদিন জ্বর, ডায়রিয়া ও অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসমূহে রোগী ভর্তি হচ্ছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে রায়পুর সরকারি হাসপাতালে শয্যা সংখ্যার তিনগুণ রোগী ভর্তি হয়েছে। এতে গাদাগাদি করে মেঝেতে বিছানা পেতেও চিকিৎসা নিচ্ছে রোগীরা।
তীব্র গরমে সয়াবিনের মাঠে কাজ করছে আকবর আলী ও ফিরোজ মিয়া বলেন, আমাদের মতো গরিবদের আর গরম, মরলে কি? বাঁচলেইবা কি? জীবিকার তাগিদে ফসলের মাঠে বের হতেই হয়।
পৌর শহরের ভ্যানচালক মানিক মিয়া বলেন, ভাই খুব বেশি গরম পড়ছে। রাস্তায় ভ্যানচালানো যাচ্ছে না। গরমে মাথা পুড়ে যাচ্ছে। রাস্তা থেকেও গরম উঠছে। শহরের রিকশাচালক, ভ্যানচালক, দিনমজুরসহ নিন্ম আয়ের মানুষদের মন্তব্য প্রায় একই। এ ব্যাপারে রায়পুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের (আরএমও) ডা. মামুনুর রশিদ পলাশ বেশি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, গরমজনিত রোগ থেকে রক্ষা পেতে ও সুস্থ থাকতে হলে বেশি করে পানি পান করতে হবে। বাসি-পচা খাবার পরিহার করতে হবে। তাছাড়াও ভাজা-পোড়া খাবার খাওয়া যাবে না। রোদ এড়িয়ে চলতে হবে। যথাসম্ভব ছায়া-শীতল স্থানে থাকতে হবে।
উল্লেখ্য, রায়পুর কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার অফিস জানিয়েছে, উপজেলা জুড়ে এক সপ্তাহ ধরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠা-নামা করছে। তবে আপাতত তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা নেই।