আজ ১৩ ফেব্রুয়ারি'২৫ সকাল ০৯টায় রাজধানীর তোপখানা রোডস্থ বাংলাদেশ শিশুকল্যাণ পরিষদের কনফারেন্স রুমে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিভাগের উদ্যোগে ‘উপনিবেশ পরবর্তী মুসলিম উম্মাহ: প্রেক্ষিত মসজিদে আকসা এবং বাবরি মসজিদ শীর্ষক’ আন্তর্জাতিক চিন্তাবৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
চিন্তাবৈঠকে মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফিলিস্তিনের প্রখ্যাত চিন্তাবিদ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশেষজ্ঞ, গ্লোবাল সিভিলাইজেশন নলেজ প্রজেক্ট ফর বায়তুল মাকদিসের প্রফেসর ড. আব্দুল ফাত্তাহ আল ওয়াইসি। তিনি বলেন, বায়তুল মাকদিস দখলদারদের কবলে। এটিকে রক্ষা করা মুসলিমদের ধর্মীয়, ঐতিহাসিক ও মানবিক অত্যাবশ্যকীয় দায়িত্ব। এটি কেবল ফিলিস্তিনিদের দায়িত্ব নয়, বরং প্রতিটি মুসলিমের পরিচয়ের অংশ হিসেবেই তা গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু আমাদের পরিচয় হলো আমরা মুসলিম। সুতরাং আরব, ইরানী, আফগানী, বাঙালি কিংবা তুর্ক হওয়ার চেয়েও উম্মাহর সদস্য হিসেবে মসজিদে আকসা পুনরুদ্ধারে আমাদের ঈমানী দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট ভূমিকা পালন করতে হবে।
বিশেষ আলোচক ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সহকারী মহাসচিব কে এম আতিকুর রহমান বলেন, ফিলিস্তিনে অসম যুদ্ধে ইসরায়েল চুড়ান্তভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। উপনিবেশ শাসন ও তৎপরবর্তীকালে এই উপমহাদেশেও মুসলিমদের ওপর খড়গহস্ত নেমে এসেছে। ভারতে বাবরি মসজিদ শহীদ করে সেই পবিত্র স্থান দখল করেছে। বিশ্বব্যাপী মুসলিমবিরোধী সকল আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিশ্ববাসীকে ঐক্যবদ্ধ ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, জালিমদের এই আগ্রাসন শুধুমাত্র ফিলিস্তিনে সীমাবদ্ধ নয়, বরং তারা সমগ্র মুসলিম বিশ্বে ত্রাসের সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। পাসপোর্ট থেকে ‘এক্সেপ্ট ইজরায়েল’ শব্দদ্বয় বাতিল, ইসরায়েলি পেগাসাস যন্ত্র ক্রয় এবং দেশবিরোধী অসম চুক্তি ইত্যাদি আগ্রাসনের অংশ।
চিন্তাবৈঠক থেকে এ সময় তিনি বাংলাদেশের পাসপোর্টে 'এক্সেপ্ট ইসরায়েল' শব্দদ্বয় পুনর্বহাল করার জোর দাবিও জানান।
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় আইন ও আন্তর্জাতিক সম্পাদক আহমাদ শাফীর সঞ্চালনায় চিন্তাবৈঠকের সভাপতি ও সূত্রধর ছিলেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মুনতাছির আহমাদ।
তিনি বলেন, বায়তুল মাকদিস শুধু একটি স্থান নয়; এটি মুসলিমদের ঈমান, ইতিহাস ও ঐক্যের প্রতীক। মুসলিমদের উচিত এটিকে নিজেদের পরিচয়ের অংশ হিসেবে দেখা এবং এর স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা।
এ সময় তিনি বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তকে ফিলিস্তিনের ইতিহাস ও সংগ্রাম অন্তর্ভুক্তি এবং মসজিদে আকসাকে মুসলমানদের ধর্মীয় অধিকার হিসেবে পাঠ্যক্রমে স্থান দেওয়ারও জোর দাবি জানান।
চিন্তাবৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ এর অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল খায়রুল আহসান মারজান, কেন্দ্রীয় দাওয়াহ ও দফতর সম্পাদক মুহাম্মাদ ইবরাহীম খলীল, অর্থ ও কল্যাণ সম্পাদক এস এম কামরুল ইসলাম, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সম্পাদক উবায়দুল্লাহ মাহমুদ, কেন্দ্রীয় কওমি মাদরাসা সম্পাদক শেখ মুহাম্মাদ মাহদী ইমাম, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক আব্দুল আজিজ নোমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি মুহাম্মাদ ইয়াসিন আরাফাত, ঢাকা মহানগর পশ্চিম সভাপতি সোহরাব হোসেন ফজলে, ঢাবি সাধারণ সম্পাদক সাইফ মুহাম্মাদ আলাউদ্দীন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি আব্দুল ওয়াহিদ, ঢাকা মহানগর পূর্বের সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান নোমান, কবি নজরুল সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি দেওয়ান মুহাম্মদ তাজিম, সরকারি বাংলা কলেজ এর সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয়, ঢাকাস্থ ক্যাম্পাস ও নগর নেতৃবৃন্দ।