মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণসহ আসন্ন ঈদের আগে শতভাগ উৎসব ভাতা, পূর্ণাঙ্গ বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা দেওয়া এবং ইএফটি সমস্যার দ্রুত সমাধানসহ ১০ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি বরিশাল জেলা।
রোববার (১৬ মার্চ) সকাল ১১টায় বরিশাল নগরীর অশ্বিনী কুমার টাউন হল চত্বরে সুনীল বরণ হালদারের সভাপতিত্বে শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্যদূরীকরণের দাবিতে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি বরিশাল আঞ্চলিক শাখা'র সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) মো. আসাদুল আলম আসাদ, মো. নিজাম উদ্দিন, মজিবর রহমান, এইচ এম ইলিয়াস, মাওলানা আব্দুস সালাম, ইদ্রিসুর রহমান, ফিরোজ আলম গাজী, মো. রফিকুল ইসলাম, আসাদুল আলম, সুভাষ চন্দ্র সরকারসহ শিক্ষক নেতারা।
এসময় বক্তারা বলেন, একজন শিক্ষক জাতির বিবেক ও জাতি বিনির্মাণের স্থপতি। বিভিন্ন সময় বৈষম্য দূরীকরণের জন্য আমরা অনেক দিন ধরে আন্দোলন-সংগ্রাম করে আসছি। আমরা এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা মাত্র এক হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া, ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা এবং মাত্র পাঁচশ টাকা চিকিৎসা ভাতা পেয়ে আসছি অথচ একই কারিকুলাম,একই সিলেবাস, একই একাডেমিক সময়সূচি, একইভাবে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজে নিয়োজিত থেকেও আর্থিক সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে রয়েছে অনেক বৈষম্য রয়েছে।
মানববন্ধনে বক্তারা আরো উল্লেখ করেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মাত্র ১২ হাজার ৫শ টাকার প্রারম্ভিক বেতনে শত শত মাইল দূরে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত থাকলেও তাদের কোনো বদলির ব্যবস্থা এখনো চালু করা হয়নি। তাছাড়া সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণে অনেক শিক্ষক তিন/চার মাস বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। বিগত দিনে জাতীয়করণের দাবি জানিয়ে কর্মসূচি পালনে পুলিশের লাঠিচার্জ ও অতি বাড়াবাড়ির কারণে বিটিএ’র সাবেক সভাপতি ও বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা অধ্যক্ষ মো. বজলুর রহমান মিয়াসহ অনেক শিক্ষক-কর্মচারী আহত হন এবং একজন শিক্ষক মৃত্যুবরণ করেন।
এ সময়ে বক্তরা নিম্নলিখিত দাবীগুলো উল্লেখ করেন:
১.আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগেই সবার শতভাগ উৎসব ভাতা,
২.বাড়ি ভাড়া ও চিকিসা ভাতা প্রদান করতে হবে, ৩.ইএফটি সমস্যার দ্রুত সমাধান করে বকেয়াসহ বেতন ভাতা প্রদান করতে হবে,
৪.প্রধান শিক্ষকের বেতন স্কেল ৬ষ্ঠ গ্রেডে এবং সহকারী প্রধান শিক্ষকদের ৭ম গ্রেডসহ টাইম স্কেল প্রদান করতে হবে,
৫.এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সর্বজনীন বদলি প্রথা চালু করতে হবে,
৬.পেনশন প্রথা চালু এবং চালু না হওয়া পর্যন্ত অবসর গ্রহণের ৬ মাসের মধ্যে অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের পাওনা প্রদান, অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তন বন্ধ করা,
৭.শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরির বয়স ৬৫ বছরে উন্নীত করতে হবে,
৮. শিক্ষক নিয়োগ কমিশন গঠন ও শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আনুপাতিক হারে শিক্ষকদের পদায়ন করা,
৯.ম্যানেজিং কমিটি বডি প্রথা বিলুপ্ত করা,
১০. স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করতে হবে।
উক্ত মানববন্ধন শেষে বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয় অভিমুখে একটি মিছিল বের করা হয় এবং মিছিল শেষে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি বরিশাল আঞ্চলিক শাখার পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়।