দেখা যায়, বীচে নামার প্রতিটা রাস্তার মুখে রশিদ বই নিয়ে ইজারা তুলছেন ইজারাদারের নিয়োজিত লোকজন। এছাড়াও বিচের আশেপাশে অবস্থিত বিভিন্ন রিসোর্টগুলোতে যেসমস্ত গাড়ি প্রবেশ করছে সেসব গাড়ি থেকেও পার্কিং এর চাঁদা নেওয়া হচ্ছে। পার্কিং এর নামে গহিরা সড়কের দু’পাশে বাস, প্রাইভেটকার, সিএনজি রাখা হয়েছে। এসব যানবাহন থেকেও নেওয়া হচ্ছে চাঁদা। রাস্তার দু’পাশে এভাবে পার্কিং এর নামে যানবাহন রাখার কারণে নিয়মিত সৃষ্টি হচ্ছে যানজট।

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় অবস্থিত দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ সমুদ্র সৈকতে নানা অব্যবস্থাপনা আর নানান সমস্যার কারণে পর্যটকদের বিপাকে পড়ার গল্প নতুন না। এখন নতুন করে পার্কিং এর নামে হয়রানির শিকার হচ্ছেন গাড়িযোগে পারকি সৈকতে আসা পর্যটকরা। সৈকত এরিয়ায় গাড়ি প্রবেশ না করালেও ইজারার টোকেনে চাঁদা দিতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পর্যটক এবং চালকরা। তবে বেআইনি হওয়া সত্ত্বেও যানজট নিরসনে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবকদের খরচ সামলাতে সড়কের গাড়ি থেকে চাঁদা নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন পারকি সৈকতের সাব ইজারাদার মো. আনিস খান।

শুক্রবার (২১ জুন) সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, পারকি বেড়িবাঁধ সড়কের একটু পর গাছে গাছে লাগানো হয়েছে ইজারাদার কর্তৃক এই দিকে পারকি বিচের পার্কিং। তবে সড়কের দুই পাশে কোন পার্কিং ব্যবস্থা না থাকলেও পর্যটকবাহী আগত গাড়ীগুলো থেকে জোর করে চাঁদা নেয়া হচ্ছে। এমনটাই অভিযোগ করছেন চালক ও পর্যটকরা।

দেখা যায়, বীচে নামার প্রতিটা রাস্তার মুখে রশিদ বই নিয়ে ইজারা তুলছেন ইজারাদারের নিয়োজিত লোকজন। এছাড়াও বিচের আশেপাশে অবস্থিত বিভিন্ন রিসোর্টগুলোতে যেসমস্ত গাড়ি প্রবেশ করছে সেসব গাড়ি থেকেও পার্কিং এর চাঁদা নেওয়া হচ্ছে। পার্কিং এর নামে গহিরা সড়কের দু’পাশে বাস, প্রাইভেটকার, সিএনজি রাখা হয়েছে। এসব যানবাহন থেকেও নেওয়া হচ্ছে চাঁদা। রাস্তার দু’পাশে এভাবে পার্কিং এর নামে যানবাহন রাখার কারণে নিয়মিত সৃষ্টি হচ্ছে যানজট।

সরেজমিনে আরও দেখা যায়, এসব যানবাহনের কারণে পারকি সমুদ্র সৈকত থেকে পারকি বাজার পর্যন্ত দীর্ঘ আধা কিলোমিটারের যানযট ছিলো ঘন্টা দু’য়েক ধরে। এদিকে ইজারাদার কর্তৃপক্ষ যানজট নিরসনে সেচ্ছাসেবক নিয়োজিত করছে বললেও সড়ক জুড়ে চাঁদা তোলার রশিদ বই হাতে নিয়ে দুই একজন স্বেচ্ছাসেবক ছাড়া যানজট নিরসনে কাউকে দেখা যায়নি।

জানা যায়, চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে আগামী ১১মাসের জন্য পারকি সমুদ্র সৈকতের পার্কিং এর দরপত্র আহ্বান করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে ৮লাখ ৩৭হাজার ৫শ টাকা ইজারা মূল্য নির্ধারণ করা হলেও ভ্যাট, আয়করসহ ২৩লাখ ৪০হাজার টাকায় সৈকতের পার্কিং ইজারা নেন স্থানীয় নুরুল আমিন নামের এক ব্যক্তি। আগে শুধু বীচে নামা যানবাহন থেকে ইজারার টাকা নেয়া হলেও নতুন ইজারাদার বিচ এরিয়া ছাড়াও সড়কে চলাচল করা প্রতিটি গাড়ি থেকে নেয়া হচ্ছে চাঁদা।

ইজারাদার সূত্রে জানা যায়, সৈকতে থাকা এবং সড়কে থাকা প্রতিটি বাস থেকে ১৫০ টাকা, প্রাইভেট কার থেকে ৭৫ টাকা, সিএনজি থেকে ২০টাকা এবং মোটরসাইকেল থেকে ২৫টাকা করে পার্কিং এর বাবদ নেয়া হয়।

শাহেদ নামের এক সিএনজি ড্রাইভার জানান, আমি সড়ক থেকে পারকির যাত্রী নামাচ্ছিলাম এমন সময় একজন এসে আমাকে রশিদ ধরিয়ে দিয়ে ২০টাকা চাঁদা নিয়ে গেছে অথচ আমি সড়ক থেকে বীচ এরিয়ায় নামিও নাই।

পতেঙ্গা থেকে আসা বাচ্চু নামের এক কার ড্রাইভার জানান, এখানে পার্কিং এর কোনো ব্যবস্থা নাই, সড়কে এসে গাড়ি থামানোর সাথে সাথে টোকেন একটা ধরিয়ে দিয়ে টাকা নিয়ে নিছে।

সড়ক থেকে চাঁদা আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করে সাব ইজারাদার মো.আনিস খান জানান, পারকি সমুদ্র সৈকতে পর্যাপ্ত পার্কিং এর জায়গা নাই তাই সড়কে গাড়ি পার্কিং করতে হয় সৈকতে আসা যানবাহনগুলোকে। আর যেহেতু সড়কে যানজট নিরসনের আমাদের স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়োজিত রাখতে হয় সেহেতু তাদের খরচ সামলাতে বেআইনি হওয়া সত্ত্বেও সড়কে পার্কিং করা গাড়িগুলো থেকে পার্কিং বাবদ চাঁদা নেয়া হয়।

এবিষয়ে পারকি বীচ কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইশতিয়াক ইমন বলেন, মঙ্গলবার সকালে এমন একটা অভিযোগ পেয়ে ইজারাদারদের সাথে যোগাযোগ করেছি তারা জানিয়েছেন, পার্কিং এর জায়গায় পানি চলে আসায় সাময়িক ভাবে রাস্তায় গাড়ি পার্কিং করা হয়েছে পানি চলে গেলে তারা রাস্তা থেকে পার্কিং উঠিয়ে নিবে।