প্রশাসক বলেন, “ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন যৌথভাবে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু করেছে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ই-রিকশাচালকদের একটি আইনি কাঠামোর আওতায় আনাই আমাদের লক্ষ্য।”

ডিএনসিসি ও স্থানীয় সরকার বিভাগের যৌথ উদ্যোগে আজ থেকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম দিনে রাজধানীর পাঁচটি ভেন্যুতে একযোগে প্রশিক্ষণ পরিচালিত হয়—মহাখালীতে দুটি, মোহাম্মদপুর সূচনা কমিউনিটি সেন্টারে একটি, মিরপুর ১০ ও উত্তরায় একটি করে।

প্রথম দিনে প্রায় ৬০০ ই-রিকশা চালক প্রশিক্ষণে অংশ নেন। শুধু মহাখালীতেই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন ২৩৭ জন। এ প্রশিক্ষণ প্রতিদিন নিয়মিতভাবে চলবে এবং একদিনের কোর্স শেষে চালকদের দেওয়া হবে পাঁচ বছর মেয়াদি ডিজিটাল ড্রাইভিং লাইসেন্স।

প্রশিক্ষণে ট্রাফিক আইন, সড়ক নিরাপত্তা, দুর্ঘটনার কারণ ও প্রতিকার, সাইন-সংকেত, রিকশা চালনার কৌশল এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হচ্ছে। এই কার্যক্রমে ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগও সহযোগিতা করছে।

ডিএনসিসি প্রশাসক জানান, পর্যায়ক্রমে দুই লক্ষ ই-রিকশাচালককে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে। একইসঙ্গে প্রতিটি অঞ্চলের জন্য নির্দিষ্ট রঙের রিকশা নির্ধারণ করা হবে, যাতে এক অঞ্চলের রিকশা অন্য অঞ্চলে চলতে না পারে।

তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে শহরে চলা ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলো ধাপে ধাপে সরিয়ে ফেলা হবে এবং বুয়েটের ডিজাইন অনুযায়ী নিরাপদ মডেলের রিকশা চালু করা হবে।”

বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের নকশা অনুযায়ী এই ব্যাটারিচালিত ই-রিকশার সর্বোচ্চ গতি হবে ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটার। তবে আবাসিক এলাকায় এটি সীমাবদ্ধ থাকবে ১৫-২০ কিলোমিটারে। স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রণীত ‘বৈদ্যুতিক থ্রি হুইলার ব্যবস্থাপনা নীতিমালা ২০২৫ (খসড়া)’ অনুসারে, এসব রিকশা শুধু গলিপথ ও মহল্লার রাস্তা ব্যবহার করতে পারবে, প্রধান সড়কে নয়।

উল্লেখ্য, গত ২৮ জুন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ই-রিকশা প্রশিক্ষকদের জন্য প্রশিক্ষণ (ToT) কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।

ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, “এই উদ্যোগ কেবল চালকদের দক্ষতা বাড়াবে না, দুর্ঘটনা কমাবে ও আইন মানায় উৎসাহিত করবে। এটি নগর পরিবহণ ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পথে একটি বড় পদক্ষেপ।”