বুধ ও বৃহস্পতিবার শিবচর উপজেলার বাংলাবাজার, বেইলি বাজার,পাচ্চর বাজার,কুতুবপুর হাট,কাদিরপুর বাজার,পৌর বাজার,শেখপুর হাটসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত ১৫ দিন ধরে ক্রমেই বাজারগুলোতে বাড়তে শুরু করেছে শীতকালীন সবজি। আলু, লাল শাক, পালং শাক, লাউ, মুলা, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, গাজরসহ অন্যান্য শীতের সবজিতে সয়লাব বাজার। কিন্তু অন্য বছরের তুলনায় এবার দাম অনেকটাই বেশি। কারণ হিসেবে সম্প্রতি বয়ে যাওয়া ঝূর্ণিঝড় সিত্রাংকে দুষছেন বিক্রেতা ও ফসল উৎপাদনকারীরা। অনেক কৃষকের সবজির ক্ষেত পানিতে তলিয়ে ফসল পচে গেছে। ফলে কৃষকদের ফসল উৎপাদন বাড়াতে বেগ পেতে হয়েছে। অনেকের খরচ উঠিয়ে লাভের মুখ দেখা নিয়েও সংশয় রয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে কাচা বাজারগুলোতে।
বাজারগুলোতে কেজি টমেটো ১৪০ টাকা, ফুলকপি ৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ টাকা, শিম ৫০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা,মুলা ৩০,করল্লা ৭০ টাকা,গাজর ৮০ টাকা,পিয়াজ ৪০ টাকা, নতুন আলু ১০০ টাকা, লাল শাক, পালং শাক প্রতি আটি ২০ টাকা,লাউ সাইজ অনুযায়ী ৬০ থেকে ১০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। বাংলাবাজারের খুচরা বিক্রেতা আলমগীর হাওলাদার জানান, ‘দুই সপ্তাহ ধরে কাঁচা সবজি বেশি পাচ্ছি। তবে পাইকারি বাজারে দাম খুব কমেনি। তুলনামূলক গতবছর যে দামে কিনেছি, তার চেয়ে এবার বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। ফলে ক্রেতাদের কাছেও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। যেমন আসে, তেমনি বিক্রি করি। এখানে আমাদের কিছুই করার নেই।’
মাদবরের চর হাটের সব্জি বিক্রেতা মাসুদ মাদবর বলেন, ‘ ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং ঝড়ের কারণে আমাদের চরাঞ্চলের অনেকের ফসল নষ্ট হয়েছে। যে কারণে গতবারের চেয়ে এবার শীতের কাঁচা তরকারির দাম বেশি। না হলে এতো দাম হতো না। কুতুবপুর হাটে আসা হাকিম বাইয়া নামে এক যুবক বলেন, ‘কাঁচা সবজি বেশি পাওয়া যাচ্ছে। তবে দাম কমেনি। এখনো প্রতি কেজি সবজি ৫০ থেকে ১০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। যে কারণে ক্রেতাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। এব্যাপারে প্রশাসনের নজর দেয়া উচিত। যাতে ক্রেতা কিনে খেয়ে বাঁচতে পারে।’
শিবচর পৌর বাজারে শাহিন বিন আনিছ নামে আরেকজন বলেন, বাজারে শীতের অনেক শাক সব্জির পাওয়া যাচ্ছে। তবে দাম বেশি।এছাড়াও সব জিনিসপত্র গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি টাকায় কিনতে হচ্ছে। এদিকে গত দুই সপ্তাহ ধরে মাছ-মাংসের ক্ষেত্রেও বাড়তি দাম গুণতে হচ্ছে ক্রেতাদের। বাজার তদারকি বাড়ানোর পরামর্শ তাদের।
এ ব্যাপারে শিবচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘুর্নিঝড় সিত্রাংয়ের ফলে শিবচর উপজেলায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।আমরা উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে তাদের প্রনোদনা দেওয়ার জন্য চেষ্টা করছি।’
মাদারীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘এবার ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে কৃষকদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। ফলে সাধারণ ক্রেতাদেরও একটু বাড়তি দাম দিয়ে কিনতে হয়েছে। এবছর প্রায় ১১০০ হেক্টর জমির কাচা সবজির ক্ষেত পানিতে ক্ষতি হয়েছে। কৃষকদের সহযোগিতার জন্যে মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করা হচ্ছে।